॥ সোহরাওয়ার্দী সাব্বির ॥
যথাযোগ্য ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য্য ও ধর্মীয় মর্যাদা সহকারে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার অজলচুগ বন বিহারে ষষ্ঠতম দানোত্তম কঠিন চীবর দান উদযাপন করা হয়েছে। শুক্রবার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে বুদ্ধমুর্তিদান, সংঘদান, অষ্ট পরিষ্কার দান, পিন্ড-পানীয় দান, হাজার প্রদীপ দান, কল্পতরু দান ও চীবরদান করা হয়। নানাবিধ দানানুষ্ঠানের পাশাপাশি নতুন একটি ল্যান্ড ক্রুইজার প্রাডো গাড়ি দান করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বৌদ্ধরতত্ন উপাধিপ্রাপ্ত সদ্ধর্ম প্রচারক ও বনভান্তের প্রধান শিষ্য শ্রীমৎ নন্দপাল মহাস্থবির।
এতে আরো ধর্ম দেশনা দেন অজলচুগ বন বিহারের অধ্যক্ষ সত্যমতি ভিক্ষু। এসময় দীঘিনালা বন বিহারের বর্ষীয়ান ভিক্ষু প্রিয়ানন্দ মহাস্থবির, বঙ্গলতলী বোধিপুর বন বিহারের অধ্যক্ষ বুদ্ধজ্যোতি মহাস্থবিরসহ বিভিন্ন বিহার থেকে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা কঠিন চীবর দানানুষ্ঠানে অংশ নেন।
মহতী এ অনুষ্ঠানে রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ির বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন। অনুষ্ঠানে পঞ্চশীল প্রার্থনা করেন পুর্ণিকা চাকমা, শ্রদ্ধাঞ্জলি পাঠ করেন ডায়না চাকমা।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন সম্যক দৃষ্টি ফাউন্ডেশনের সভাপতি লক্ষী সাধন চাকমা।
প্রধান অতিথির সদ্ধর্ম দেশনায় শ্রীমৎ নন্দপাল মহাস্থবির বলেন- চলমান বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় সকলকে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। স্বাস্থ্য মেনে চলতে হবে। প্রত্যেককে মাক্স পরতে হবে। শীতকালে করোনার প্রকোপ আরো বাড়তে পারে তাই সবাইকে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেন তিনি।
বিশ্বের শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভগবান বুদ্ধের শিক্ষা অনুশীলনের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন- সর্বদা মানুষের কল্যাণের চিন্তা করাই বৌদ্ধদের করণীয়। শুধু মানুষ নয় পৃথিবীর সকল জীবের সুখ শান্তি ও মঙ্গলের চিন্তা করে কাজ করা হচ্ছে বুদ্ধের শিক্ষা। প্রাণীহত্যা, চুরি, ব্যাভিচার, মিথ্যাভাষণ ও নেশাপান এসব পাপ কর্ম হতে বিরত থেকে কুশল কর্মে আত্মনিয়োগ করলে সুখী ও সমৃদ্ধ সমাজ প্রতিষ্ঠা সম্ভব বলেন তিনি। কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠানে মানবজাতির সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা এবং অন্তিমে সর্ব প্রকার দুঃখ থেকে মুক্তির প্রার্থনা করা হয়।
অনুষ্ঠানে শুরুতে শত শত বৌদ্ধ নরনারী কঠিন চীবর নিয়ে বিহারের চারিদিক প্রদক্ষিণ করে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন করে।