এ পর্যন্ত আক্রান্ত ১ হাজার ২০৮জন মৃত্যু ১৬ জনের রাঙামাটিতে করোনা সংক্রমণের হার যথেষ্ট বেশি সতর্ক থাকার পরামর্শ সিভিল সার্জনের

561

॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥

রাঙামাটিতে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত সর্বশেষ করোনা পজিটিভ এর সংখ্যা ১ হাজার ২০৮জন। ইতোমধ্যে ১ হাজার ১২৫জন সুস্থ হয়েছেন, আর করোনায় মোট মৃত্যু বরণ করেছেন ১৬জন। এ জেলার আক্রান্তের হার ১৮.৯৭%, সুস্থতার হার ৯৩.১৩% এবং মৃত্যুর হার ১.৩২%। জেলার সিভিল সার্জন ডাঃ বিপাশ খীসা রাঙামাটি জেলার করোনা পরিস্থিতির সর্বশেষ পরিসংখ্যান হিসেবে এ তথ্য জানান।

সোমবার (১৮ জানুয়ারি) রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মাসিক সভায় এই রিপোর্ট উপস্থাপন করেন সিভিল সার্জন। এ সময় তিনি জানান, রাঙামাটি পিসিআর ল্যাবে এ পর্যন্ত রোগী পরীক্ষা করা হয়েছে ৬,৩৬৮টি। তার তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলে যেখানে সংক্রমণের হার শতকরা ৫% সেখানে রাঙামাটিতে ১৮%। সেদিক থেকে বিবেচনা করলে রাঙামাটিতে সংক্রমণের হার যথেষ্ট বেশি। তিনি জানান, বিভিন্ন উপজেলায় সংক্রমণের হার কম হলেও রাঙামাটি সদরে বেশি। শীতকালে পর্যটন মৌসুম হওয়ায় পর্যটকদের আসা-যাওয়া, বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান এবং অন্যান্য কারণে সংক্রমণের হার বেশি হচ্ছে বলে তিনি মনে করেন। সেক্ষেত্রে তিনি টিকার জন্য অপেক্ষা না করে ব্যক্তিগতভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন।
সোমবার (১৮ জানুয়ারি) রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ এ সভা পরিষদের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী। পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাঃ আশরাফুল ইসলাম এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্যবৃন্দ যথাক্রমে সদস্য হাজী মুছা মাতব্বর, সদস্য বাদল চন্দ্র দে, সদস্য প্রিয় নন্দ চাকমা, সদস্য ঝর্ণা খীসা, সদস্য আব্দুর রহিম, সদস্য প্রবর্তক চাকমা, সদস্য অংসুই ছাইন চৌধুরী, সদস্য আসমা বেগম, সদস্য বিপুল ত্রিপুরা, সদস্য দিপ্তীময় তালুকদার, সদস্য নিউচিং মারমা, সদস্য ইলিপন চাকমা, সদস্য রেমলিয়ানা পাংখোয়া, সদস্য সবির কুমার চাকমা, সিভিল সার্জন ডাঃ বিপাশ খীসা, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপপরিচালক বেগম সাহান ওয়াজ, হর্টিকালচার সেন্টার বনরুপা উপপরিচালক ড. মোঃ আব্দুল জব্বার, জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ বরুন কুমার দত্ত, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃঞ্চ প্রসাদ মল্লিক, সমাজসেবার উপপরিচালক মোঃ ওমর ফারুক, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ, মৎস্য প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোঃ আব্দুল্লা আল হাসান, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ সাজ্জাদ হোসেন, উদ্যানতত্ত্ব¡বিদ নানিয়াচর আল মামুন, হার্টকালচার সেন্টার লংগুদু উদ্যানতত্ত্ববিদ মোঃ মহিউদ্দীন, হর্টিকালচার সেন্টার কাপ্তাই উদ্যান তত্ত্ববিদ মোঃ জামাল হোসেন, হর্টিকালচার সেন্টার বালুখালী উপ-সহঃউদ্যান কর্মকর্তা পুষ্প রঞ্জন চাকমা, জেলা সরকারী গণ গ্রন্থাগার সহকারী লাইব্রেরিয়ান সুনীলময় চাকমা, জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা স্বপন কিশোর চাকমা, আর পিটিআই অধ্যক্ষ মোঃ ওবায়দুর রহমান সরদার, জেলা সমবায় অফিসার ইউসুফ হাসান চৌধুরী, তুলা উন্নয়ন বোর্ডের সিইউও মোঃ গিয়াস উদ্দীন, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ সহকারী প্রকৌশলী মোঃ মাহফুজ হোসেন, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী বিরল বড়–য়া, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠি সাংস্কৃতিক ইনষ্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রনেল চাকমা, জেলা পিগ ফার্ম সহকারী পরিচালক ডাঃ মোঃ আজিজুর রহমান, সরকারী হাস-মুরগী খামারের ব্যবস্থাপক কুসুম চাকমা, বিএডিসি(বীজ)সহকারী পরিচালক মোঃ লুৎফর রহমান, হর্টিকালচার সেন্টার আসামবস্তি উপসহকারী উদ্যান কর্মকর্তা মোঃ কামাল হোসেন, নার্সিং ইনিষ্টিটিউট নার্সিং ইন্সট্রাক্টর ৃকৃঞ্চা চাকমা, শিল্প সহায়ক কেন্দ্রের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোঃ মুনতাসীর মামুন, বিসিক প্রকল্পের এজিএম মোঃ ইদ্রিস হোসাইন, পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্স এর ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়–য়া, আঞ্চলিক হাস প্রজনন প্রকল্পের উপসহকারী প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মোঃ আবু তাহের, বিএডিসি(সেচ) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ সাহেদ ও যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ শহিদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপপরিচালক বেগম সাহানওয়াজ বলেন, করোনাকালীন সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের বিভিন্ন সেবা কার্যক্রম চালু ছিল। রাঙ্গামাটিতে বর্তমানে এক লক্ষের উপর সক্ষম দম্পতি আছে। জেলায় সর্বমোট পদ্ধতি গ্রহণকারী ৮২৭২৮ জন এবং পদ্ধতি গ্রহণের হার ৮১.৮৪ শতাংশ।

সমাজসেবা বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী সমাজসেবা থেকে প্রদত্ত সকল ভাতা গ্রহীতাদের বিকাশ একাউন্টের মাধ্যমে প্রদান করা হছে। এছাড়া, সভায় হস্তান্তরিত বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ তাদের বিভাগের স্ব স্ব কার্যক্রম উপস্থাপন করেন।

সভায় সভাপতির বক্তব্যে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী বলেন, সকলে মিলে এ জেলার উন্নয়নে কাজ করার জন্য প্রতি মাসে সকল বিভাগকে নিয়ে এখানে বসা। বাংলাদেশের অন্যান্য জেলার চাইতে তিন পার্বত্য জেলা বিভিন্ন দিক দিয়ে ব্যতিক্রম। এখানে অনেকগুলো বিভাগ হস্তান্তরিত হয়েছে যাদের মাধ্যমে আমরা এ জেলার উন্নয়নে কাজ করতে পারি। তিনি বলেন, হস্তান্তরিত বিভাগের কর্মকর্তা/কর্মচারিরা আমাদেরই কর্মকর্তা/কর্মচারি। খোলামনে এবং মানুষের কল্যাণে কাজ করলে পরিষদ সার্বিকভাবে সহযোগিতা করবে। আমরা নতুন কিছু অর্জন করতে চাই। এক্ষেত্রে সকলের আন্তরিকতা ছাড়া তা অর্জন করা সম্ভব নয়। তিনি সকল হস্তান্তরিত বিভাগের বিভাগীয় প্রধানদেরকে বিভিন্ন উপজেলা থেকে প্রকল্প নেওয়ার সময় উপজেলাওয়ারী দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্যদের সঙ্গে আলোচনাক্রমে পরিষদের অনুমোদন নিয়ে প্রকল্প নেওয়ার পরামর্শ দেন।