॥ ইকবাল হোসেন ॥
করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় একদম শুরু থেকেই নিজ উদ্যোগে ৭নং ওয়ার্ডে বসবাসকারীদের জনসাধারণের জন্য নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন রাঙামাটি পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলর ৭নং ওয়ার্ড মো. জামাল উদ্দীন। অন্যান্য ওয়ার্ড কাউন্সিলররাও যার যার স্থান থেকে দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু সকলের কার্যক্রম বিবেচনায় এগিয়ে আছেন ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. জামাল উদ্দীন।
বাংলাদেশ করোনা ভাইরাসের ঝুঁকিতে আসার পর থেকে রাঙামাটি পৌরসভার প্যানেল মেয়র জামাল উদ্দীন তার কার্যক্রম সম্পর্কে সিএইচটি টাইমস টুয়েন্টিফোর ডট কম এর প্রতিবেদক কে বলেন, করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় আমি ৭নং ওয়ার্ডের জন্য মেয়র মহোদয়ের পক্ষ থেকে ৬০০টি মাস্ক পেয়েছিলাম। তার সাথে নিজ খরচে আরো ১৪০০ মাস্ক কিনে মোট ২ হাজার মাস্ক ও ৪ হাজার জনসচেতনতা মূলক লিফলেট আমার ওয়ার্ডের সকল বাসিন্দাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌঁছে দিয়েছি।
এরপর পৌরসভার মেয়র মহোদয়ের পক্ষ থেকে ৭নং ওয়ার্ডের জন্য ৩টি হাত ধোয়ার বেসিন পেয়েছি এর সাথে নিজ খরচে আরো ৮ বেসিন ও ৩টি প্লাস্টিকের বেসিন ক্রয় করে ১৪টি স্থানে হাত ধোয়ার বেসিন স্থাপন করেছি। এছাড়াও ৪০টি স্থানে আমি নিজ উদ্যোগে বোতলের স্প্রে দিয়েছি।
তাছাড়া আমি ১০টি স্প্রে মেশিন ক্রয় করে তা আমার ওয়ার্ডের ১০ টি এলাকার স্বেচ্ছাসেবকদের দিয়েছি এর মাধ্যমে তারা নিজ নিজ এলাকা জীবাণুমুক্ত করছে। এছাড়াও আমি প্রতিদিন হ্যান্ড মাইক নিয়ে পুরো ওয়ার্ডে সকলকে সচেতন করার কাজ করে যাচ্ছি।
আমি নিজ উদ্যোগে আমার ওয়ার্ডের জনসাধারণকে সচেতন করতে ১০টি ব্যানার বিভিন্ন স্পটে টাঙ্গিয়ে দিয়েছি। এছাড়াও বহিরাগতদের প্রবেশ নিষেধ সংক্রান্ত ৩৫টি ব্যানার প্রত্যেকটি গলির মুখে টাঙ্গিয়ে দিয়েছি।
ত্রাণ সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি জানান, এখানে আমার ভোটার ১০হাজার থাকলেও ভোটার না এমন ১৫হাজার মানুষের বসবাস করে। সকলের কথা বিবেচনা করে আমি আমার ওয়ার্ডে কর্মহীনদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করছি। ইতিপূর্বে পৌরসভার পক্ষ থেকে মেয়র ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলরের সমন্বয়ে ১,৭৪৬ জন কার্ডের মাধ্যমে সরকারী ত্রাণ সহায়তা পেয়েছে। এর পাশাপাশি আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে ২০০ মধ্যবিত্ত পরিবারকে ত্রাণ ও আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেছি।
এদিকে ৭নং ওয়ার্ডের কেউ যদি অসুস্থ হয়ে পড়ে তাহলে সবার আগে এগিয়ে যাই। করোনা পরিস্থিতিতেও বেশ কয়েকজনকে মধ্যরাতে এম্বুলেন্স ব্যবস্থা করে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি।
পরিশেষে তিনি বলেন, আমার ওয়ার্ডে সরকারি ত্রাণ কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার পরেও যদি ৫০০ বা ১ হাজার পরিবারও ত্রাণ থেকে বঞ্চিত হয়, তাহলে আমি নিজ খরচে সবার বাসায় চাউল পৌঁছে দিবো। আমার ওয়ার্ডের কেউ চাউল পায়নি বলতে পাবে না।
জামাল পরই এগিয়ে আছেন ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিজানুর রহমান বাবু। তিনি জানান আমি ৪নং ওয়ার্ডে পৌরসভা কর্তৃক প্রাপ্ত মাস্ক ও লিফলেট বিতরণ করেছি। পৌরসভার বেসিনের পাশাপাশি নিজ উদ্যোগে ৩টি প্লাস্টিক বেসিন স্থাপন করেছি। আমার ওয়ার্ডে দেড় হাজারের অধিক মানুষ ইতিপূর্বে সরকারি ত্রাণ পেয়েছে বাকিদেরও পর্যায়ক্রমে ত্রাণ দেয়া হবে। তিনি আরো জানান আমি মধ্যবিত্তদের আমার ফেসবুক একাউন্টের মাধ্যমে ম্যাসেঞ্জারে ও মোবাইলে নাম দেয়ার আহ্বান জানিয়েছি। প্রতিবার সরকারি ত্রাণ বিতরণের সময় আমি ২৫/৩০ জনের বাসায় নিজে ত্রাণ পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করছি।
৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র কালায়ন চাকমাও তার ওয়ার্ডের জনসাধারণের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি জানান, আমি করোনার প্রাদূর্ভাবের শুরুতেই পৌরসভার পক্ষ থেকে ৫০০ মাস্ক ও ১হাজারের অধিক জনসচেতনতা মূলক লিফলেট বিতরণ করেছি। এরপর ৪টি স্থানে পৌরসভার হাত ধোয়ার বেসিন স্থাপনের পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয়দের সহযোগিতায় বেশ কয়েকটি বেসিন স্থাপন করেছি। ত্রাণ সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি বলেন আমার ওয়ার্ডের ২ হাজারের কাছাকাছি মানুষ ত্রাণ কার্ডের মাধ্যমে ত্রাণ পেয়েছে। বাকিরাও ধাপে ধাপে ত্রাণের আওতায় আসবে।
১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হেলাল উদ্দীন তার কার্যক্রম সম্পর্কে বলেন- আমার ওয়ার্ডে আমি পৌরসভার পক্ষ থেকে ৮০০ মাস্ক ও দেড় হাজার লিফলেট বিতরণ করেছি। পৌরসভা থেকে ৩টি এলাকায় হাত ধোয়ার বেসিন স্থাপন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে আমার ওয়ার্ডে সরকারী ত্রাণ সহায়তা পেয়েছে ১,১৫৫ টি পরিবার। অন্যান্যরা ধাপে ধাপে এই ত্রাণ সহায়তা পাবে। তিনি নিজ উদ্যোগে বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের ত্রাণ বিতরণে আর্থিক ভাবে সহায়তা করছেন বলে জানান।
২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর করিম আকবর জানান, করোনা প্রাদূর্ভাবের শুরুতে তিনি পৌরসভার পক্ষ থেকে ৬০০ মাস্ক ও ১২০০ লিফলেট বিতরণ করেছেন। ২নং ওয়ার্ডে ৩টি হাত ধোয়ার বেসিন স্থাপন করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমার ওয়ার্ডের ১,১৫৫টি পরিবার পৌরসভার ত্রাণ সহায়তা পেয়েছে। বাকিরা পর্যায়ক্রমে ত্রাণ সহায়তা পাবে।
৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর পুলক দে বলেন, আমি আমার ওয়ার্ডে প্রথমে ৪৫০টি মাস্ক ও ৫০০ সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করেছি। এছাড়াও আমার ওয়ার্ডে পৌরসভার পক্ষ থেকে ৩টি হাত ধোয়ার বেসিন স্থাপন করা হয়েছে। ত্রাণ সম্পর্কিত বিষয়ে তিনি বলেন আমার ওয়ার্ডের ১৩শ’র অধিক কর্মহীন অসহায় পরিবার ত্রাণ সহায়তা পেয়েছে বাকিরা পর্যায়ক্রমে ত্রাণ সহায়তায় আওতায় আসবে। এদিকে তিনি আরো জানান আমি নিজ উদ্যোগে ২টি স্প্রে মেশিন কিনে স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত জীবাণুনাশক পানি স্প্রে করাচ্ছি।
৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাচিং মারমা জানান, করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় আমি প্রথমেই পৌরসভার পক্ষ থেকে ৩০০ মাস্ক ও পাঁচ শতাধিক সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করেছি। পাশাপাশি আমার ওয়ার্ডে পৌরসভার ২টি হাত ধোয়ার বেসিন স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও দেড় হাজারের অধিক পরিবার সরকারী ত্রাণ সহায়তা পেয়েছে এবং বাকিরা পর্যায়ক্রমে ত্রাণ সহায়তা পাবে।
৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রবি মোহন চাকমা জানিয়েছেন, আমার ৬নং ওয়ার্ডে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রথমে ৩০০ মাস্ক ও দেড় হাজার লিফলেট বিতরণ করেছি। হাত ধোয়ার বেসিন স্থাপন করা হয়েছে ৩টি। ইতিমধ্যে ৭ধাপে আমার ওয়ার্ডে সরকারী ত্রাণ সহায়তা পেয়েছে ১,৬৫০ পরিবার। এছাড়াও তিনি ব্যক্তি উদ্যোগে জীবাণুনাশক স্প্রে করছেন বলেও জানিয়েছেন।
৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বেল্লাল হোসেন টিটু জানান, ৯নং ওয়ার্ডে পৌরসভার পক্ষ থেকে ৬০০ মাস্ক ও প্রায় ১,২০০ লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি পৌরসভার পক্ষ থেকে ২টি হাত ধোয়ার বেসিন স্থাপন করা হয়েছে। ত্রাণ সহায়তা পেয়েছে ১,১৫০ পরিবার। অন্যান্যরা ধাপে ধাপে সহায়তা পাবে বলেও জানান তিনি। এদিকে ব্যক্তি উদ্যোগে তিনি এলাকা স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে জীবাণুনাশক স্প্রে করা ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করে যাচ্ছেন।
এদিকে পৌরসভার ৩জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলররাও নিজ নিজ অবস্থান থেকে যার যার ওয়ার্ডের জনসাধারণের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।