কাপ্তাইয়ের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে শুনশান নীরবতা

936

|| অর্ণব মল্লিক, কাপ্তাই ||

অপূর্ব সুন্দর কাপ্তাইয়ের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে কোলাহলের পরিবর্তে বিরাজ করছে শুনশান নীরবতা। সারা বছর ধরেই উপজেলার পর্যটন কেন্দ্রগুলো কমবেশী পর্যটকের পদচারনায় মুখরিত হয়ে থাকত। কিন্তু গত বছরের ন্যায় চলতি বছরও লকডাউনে পর্যটন কেন্দ্রগুলো পর্যটকবিহীন ফাঁকা রয়েছে। মুলত বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এতে কাপ্তাইের পর্যটন শিল্পে মারাত্বক ধ্বস নেমেছে।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত কাপ্তাই উপজেলার পাশ দিয়ে বয়ে গেছে দেশের বৃহত্তম কৃত্রিম হ্রদ, এখানে রয়েছে উঁচু-নিচু পাহাড়, পাহাড়ের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া আঁকাবাঁকা শীতল জলের কর্ণফুলী নদী, নদীর আশপাশে গড়ে উঠেছে অনেক পর্যটন কেন্দ্র। সারাবছর এসব পর্যটন কেন্দ্র গুলোতে পর্যটকের আনাগোনা লেগেই থাকত। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে পর্যটক শূন্য হয়ে হাহাকার করছে পর্যটন কেন্দ্রগুলো। অবশ্য ইতিমধ্যে বিশ্ব করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারি নির্দেশ মোতাবেক গত মার্চ মাস থেকে দেশের সবধরনের পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

কাপ্তাই উপজেলায় রয়েছে বেশ কয়েকটি পর্যটন স্পট। যেখানে কাপ্তাই ছাড়াও রাঙ্গুনিয়া, রাউজান, চট্টগ্রাম সহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পর্যটকদের আগমনে সারা বছর ধওে মুখোরিত থাকতো। কিন্তু এবার একেবারেই পর্যটক শূন্য হয়ে রয়েছে সব বিনোদন কেন্দ্র। ঈদ পরবর্তী সময়ে কেন্দ্রগুলোতে হাজার হাজার পর্যটকদের আগমনের পদচারনায় প্রাণ ফিরে পেলেও এবার সেই স্পট গুলো পর্যটক শূণ্য হয়ে হাহাকার করছে। শুধু তাই নয়, এসময় পর্যটকের আগমনে অনেক টাকা আয় হতো কাপ্তাই পর্যটনকেন্দ্র কর্তৃপক্ষের। কিন্তু এবার আয় তো হচ্ছেই না বরং করোনা সংক্রমন প্রতিরোধে পর্যটন কেন্দ্রগুলো প্রায় ২ মাসের অধিক সময় ধরে বন্ধ থাকার ফলে মালিক পক্ষকে গুনতে হচ্ছে কয়েক লক্ষ টাকার লোকসান। যার ফলে দেশের পর্যটন শিল্পেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

কাপ্তাই উপজেলায় বেশ কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম কাপ্তাই প্রশান্তি পার্ক, জুম রেস্তোরা, বনশ্রী পর্যটন কেন্দ্র, লেক প্যারাডাইস, লেকশো’র পিকনিক স্পট, জীবতলি পিকনিক স্পট, বেরাইন্না লেক, লেকভিউ আইলেন্ডসহ বিভিন্ন জনপ্রিয় পর্যটন স্পট।

কাপ্তাইয়ের বালুচরে অবস্থিত প্রশান্তি পিকনিক স্পটের পরিচালক নাছির উদ্দিন জানান, কাপ্তাইয়ের অপরুপ সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে পর্যটন মৌসুম ছাড়াও সারা বছর পর্যটকদের আনাগোনা হতো। বিশেষ করে ঈদের ছুটিতে পর্যটকের ঢল নামতো। কিন্তু এবারও করোনার প্রকোপে পর্যটক শূণ্য হয়ে রয়েছে কাপ্তাই। ফলে এই শিল্পের সাথে জড়িতরা বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

কাপ্তাই ফোরামের এডমিন উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এ আর লিমন জানান, নয়নাভিরাম কাপ্তাই লেক, কর্নফুলি নদী, পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র, কেপিএম মিল, সীতাপাহাড়, ওয়াগগা চা বাগান, চিৎমরম বৌদ্ধ বিহারসহ কাপ্তাইয়ের প্রতিটি পরতে পরতে লুকিয়ে আছে সৌন্দর্য। তাই তো সারা বছর কাপ্তাইয়ে পর্যটকের আনাগোনা থাকতো। কিন্তু এবার করোনা ভাইরাসের প্রকোপে কাপ্তাই পর্যটন শূন্য রয়েছে।