॥ আলমগীর মানিক ॥
পার্বত্য চট্টগ্রামের অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানিতে বিরাজমান সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সারাদেশে চলমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতির চেয়েও ভয়াবহ রূপ ধারন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্য মন্ত্রণালয় বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও জাতীয় সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার। কিনি বলেন এমন মহামারি পরিস্থিতিতেও দুবৃত্তরা সন্ত্রাস থামায়নি। এই অঞ্চলের সন্ত্রাসীরা অবৈধ অস্ত্রের মাধ্যমে শুধু চাঁদাবাজিই নয় এলাকা দখলের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বেছে বেছে হত্যা করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
রোববার রাঙামাটিতে অনুষ্ঠিত মাসিক আইন-শৃঙ্খলা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদানকালে এ বক্তব্য দেন এমপি তালুকদার।
এমপি বলেন, শনিবার বান্দরবান ও রোববার সকালেই রাঙামাটির কাপ্তাইয়ের রাইখালীতেও একজনকে গুলি করে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। সেনাবাহিনী-পুলিশ,বিজিবি-আনসার বাহিনী দিয়ে এসব সন্ত্রাসীদের নির্মূল করা যাবেনা মন্তব্য করে পাহাড়ের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় জনসাধারণকে এগিয়ে আসার আহবানও জানিয়েছেন এমপি দীপংকর তালুকদার।
রাঙামাটির জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ এর সভাপতিত্বে উক্ত সভায় অন্যান্যের মধ্যে রাঙামাটির পুলিশ সুপার আলমগীর কবীর-পিপিএম(সেবা), সিভিল সার্জন ডাঃ বিপাশ খীসা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) শিল্পী রানী রায়সহ সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান ও প্রতিনিধিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার আরো বলেন, পাহাড়ে বাঙ্গালী পুরুষ কতৃক বাঙ্গালী নারী, আর পাহাড়ি পুরুষ কর্তৃক পাহাড়ি নারী ধর্ষণের শিকার হলে কেউ মুখ খুলেনা কিন্তু বাঙ্গালি কর্তৃক পাহাড়ি নারী ধর্ষণের একটি অভিযোগ পাওয়া গেলেই আন্দোলনের নামে পাহাড়ের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টসহ অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির লক্ষ্যেই কিছু কিছু মহল এই অঞ্চলে ইস্যু তৈরি করার চেষ্ঠা করছে বলেও অভিযোগ করেছেন রাঙামাটির সংসদ সদস্য। তিনি বলেন, ধর্ষণকে আমরা প্রচন্ড রকমের ঘৃণা করি এটা বন্ধ হওয়া উচিত। কিন্তু একটাকে ইস্যু বানিয়ে কোন কোন মহল যখন ভিন্ন দিকে ঘটনাকে প্রবাহিত করার চেষ্ঠা করে তাদেরকেও আমরা ঘৃনা করি।
সভায় বক্তব্যদানকালে রাঙামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার আরো বলেন, সারাদেশের তুলনায় আমি মনে করি রাঙামাটিতে আইন শৃঙ্খলার অবস্থা অন্যান্য সমতল এলাকার তুলনায় অনেক ভালো। সাধারন অপরাধ নেই বললেই চলে। এখানে অনেকগুলো ঘটনা ঘটেছে। যেই ঘটনাটাকে কিছু কিছু মহল ইসু বানানোর চেষ্টা করছে। আমি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সেনাবাহিনী-বিজিবিসহ অন্যান্য বাহিনীদের স্বাগত জানাবো। তারা আমাদেরকে সেইফ করে রেখেছে। এমপি বলেন, পাহাড়ের বর্তমান অবস্থা ১৯৯৬ এর মত নেই। ১৯৯৬ সালে কাউখালী,কাপ্তাই,রাজস্থলী, রাঙামাটিতে বিদ্যুতের তেমন একটা সরবাহ ছিলনা।আমরা এখন রাঙমাটির ১০ টা উপজেলায় বিদ্যুৎ দিতে পেরেছি।
শুধুমাত্র ১০টা উপজেলায় নয় ১০ উপজেলার আশেপাশে বিদ্যুৎ চলে গেছে।যেখানে বিদ্যুৎ আগামী ১০ থেকে ২০ বছরে বিদ্যুৎ দেওয়া সম্ভব হতোনা সেখানে সোলারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ দেওয়ার একটা ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি এগুলো স্থাপিত হয়ে গেছে। আগে নৌকা করে অফিসারদের আসতে হতো এখন স্পিড বোটে আসতে পারছে এবং কিছুদিনের মধ্যেই নানিয়ারচরের ব্রীজ টা শুভ উদ্ধোধন হবে।উদ্ধোধন হলে অতি সহজে বাঘাইছড়ি,লংগদু যেতে পারবে। সুতারাং এত কষ্ট করেও সরকারে প্রয়োজনে,রাষ্ট্রের প্রয়োজনে,জনগনের প্রয়োজনে সরকারী কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করছেন। অনেক উপজেলা আছে যেখানে গাড়ি তো দূরের কথা মোটরসাইকেলো নেই।তবুও ইউএনও ও ওসিরা কষ্ট করে পায়ে হেটে দায়িত্ব পালন করছে।তাই তাদেরকে আন্তরিকভাবে অভিন্দন জানাবো।