ক্যামব্রীয়ান স্কুলের ছাত্র সজিব হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে প্রেসক্লাবে মানববন্ধন

325

স্টাফ রিপোর্ট- ১৬ জুন ২০১৭, দৈনিক রাঙামাটি: একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ৮ জুন দুপুরে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার সাড়িঘাট এলাকার চা দোকানি সন্ত্রাসী রিপন মিয়া ও তার সহযোগীরা মিলে ক্যামব্রীয়ান স্কুলের যাত্রবাড়ী শাখার ৯ম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্র মো. ওমর ফারুক সজিবকে (২০) নির্মম ভাবে পানিতে ডুবিয়ে হত্যার প্রতিবাদে এবং হত্যাকারীদের ফাঁশির দাবীতে আজ বেলায় ১১ টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়।

মানবন্ধনে অংশ নেন নিহত সজিবের মা, বড় ভাই, আত্মীয় স্বজন পরিবার পরিজনসহ জুরাইন এলাকাবাসী ও ক্যামব্রীয়ান স্কুলের সজিবের সহপাঠীরা অংশ গ্রহণ করে। তারা হত্যাকারীদের ফাঁশির দাবী করেন। এসময় তারা হত্যার সাথে জড়িত একজন আসামী বাদে বাকীদের গ্রেফতার না করায় সংশ্লিষ্ট থানার দায়িত্বরত পুলিশের কাজে গাফেলতি রয়েছে বলে বক্তব্য দেন। সজিবের মা তার ছেলের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে ফাঁশির দাবী জানান। এসময় তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পরেন। মানববন্ধনে আরো বক্তব্য দেন সজিবের বড় ভাই মো. আবদুল্লাহ আল সুজন।

জানাগেছে, গত ৮ জুন বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার কদমতলী থানার জুরাইন বাগান বাড়ি এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা সৌদিপ্রবাসি মো. মোবারাক হোসেনের ছোট ছেলে মো. ওমর ফারুক সজিব তার বন্ধু লিটন আহম্মেদ, মো. সুমন হোসেন ও মো. আসিফ হোসেনকে নিয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার বসুন্ধরা রিভারভিউর সাড়িঘাটে বেড়াতে যান। সেখানে দুপুর হলে একটি ঝিলে ৪ বন্ধু মিলে গোসল করেন। গোসল শেষে ক্লান্তিদুর করতে ভেজা অবস্থায় সজিব স্থানীয় চা দোকানি রিপনের চায়ের দোকানের টুলে বসেন। এসময় রিপন ক্ষীপ্ত হয়ে সজিবকে খারাপ ভাষায় গালাগাল করেন। এনিয়ে দুজনের মধ্যে তর্ক-বির্তক হয়। এরই মধ্যে তর্ক-বির্তকের এক পর্যায়ে আসামি- মো. বাছেদ মিয়া, মো. জুয়েল হোসেন, মো. সেন্টু, মো. রসি, মো. আলম, মো. ইয়াছিন, মো. ওয়াসিম এসে সজিব ও তার বন্ধুদের মারধর করে। একপর্যায়ে তারা সজিবকে পানিতে পেলে দেয়। সজিব পানি থেকে ওঠার চেষ্টা করলে আসামিরা তাকে ঠিল মেরে পানি থেকে উঠতে বাধা দেয়। এসময় বন্ধুরা সজিবকে বাঁচানোর জন্য আসামিদের পায়ে ধরে আকুতি মিনতি করেন। আসামিরা তাতেও কর্নপাত করেনি। স্থানীয় লোকজনও সন্ত্রাসীদের ভয়ে সজিবকে বাঁচাতে সহযোগিতা করার সাহস পায়নি। একপর্যায়ে সজিব দূর্বল হয়ে পানিতে তলিয়ে যায়। এর পর সন্ত্রাসীরা পিছু হটে।

পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় সজিবের বড় ভাই মাছ ধরা জাল টেনে ঝিলের পানি থেকে সজিবকে উদ্ধার করে স্থানীয় আদ দিন হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে মৃত ঘোষনা করেন।

এ ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার পুলিশ মামলার ২নং আসামী মো. বাছেদ মিয়াকে (৫৫) গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। সে থানার ধলেশ্বর পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত আবদুল লতিফের ছেলে। মামলার অন্যান্য আসামিরা এখনো পালাতক রয়েছে। তাদের গ্রেফতারে এখনো পুলিশ কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে মানববন্ধনে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।

পোস্ট করেন- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরো প্রধান ।