ঘরে বসেই পাওয়া যাবে পাঁচদিনে খরচ হবে দুশ’ টাকাঃ অনলাইনে রাঙামাটির স্থায়ী বাসিন্দা সনদ প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করলেন কমিশনার

594

॥ সাজিদ বিন জাহিদ ॥
‘আবেদনের মাত্র পাঁচদিনের মধ্যে মিলবে স্থায়ী বাসিন্দর সনদ। পাওয়া যাবে ঘরে বসেই, আর খরচ হবে মাত্র দুইশত টাকা’ এমন তথ্য জানিয়েছেন রাঙামাাটির জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশিদ। এ জেলার নাগরিকদের বহুদিনের প্রতীক্ষা ও ভোগান্তির অবসান ঘুচিয়ে নাগরিক সেবা সহজীকরণে অনলাইনে স্থায়ী বাসিন্দার সনদ প্রদান কার্যক্রম শুরু করেছে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন।

রোববার চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার এ বি এম আজাদ, এনডিসি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই সেবার উদ্বোধন করেন। এসময় পার্বত্য রাঙামাটির স্থানীয় দুইজন নাগরিক তাঁদের স্থায়ী বাসিন্দার সার্টিফিকেট গ্রহণ করেন। রাঙামাটি জেলার জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশিদ এর সভাপতিত্বে ডিজিটাল সেবাটির পুরো প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করেন সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লাইলাতুল হোসেন।

অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মামুনুর রশিদ জানান, রাঙামাটি পার্বত্য জেলার বাসিন্দাদের বিভিন্ন দাপ্তরিক কার্যক্রমে প্রয়োজনীয় সনদপত্র হচ্ছে “জেলা প্রশাসক প্রদত্ত স্থায়ী বাসিন্দা সনদপত্র”। রাঙামাটির পাহাড়ি দুর্গম এলাকা থেকে জেলা সদরে এসে আবেদন করা এবং সনদপত্র গ্রহণ খুবই সময়সাপেক্ষ এবং ব্যয়বহুল হয়ে দাঁড়াতো। বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশের যে অঙ্গীকার তাঁর যথাযথ বাস্তবায়নের একটি ফসল এই অনলাইন নাগরিক সেবা। রাঙামাটি জেলার দূরবর্তী উপজেলাগুলোতে ঘরে বসেই সহজ কিছু নির্দেশনা মেনেই স্থায়ী বাসিন্দার সার্টিফিকেট অনলাইনে পেয়ে যাবেন। বরকল বা লংগদু কিংবা বাঘাইছড়ি থেকে সদরে আসার যে ভোগান্তি ও সময়ের অপচয় তা পুরোপুরি এই ডিজিটাল সেবা গ্রহণের মাধ্যমে এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব। জেলা প্রশাসনের ইনোভেশন কার্যক্রমের আওতায় উক্ত কার্যক্রমটি অনলাইন করা হয়েছে এবং প্রক্রিয়াটি বাস্তবায়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন একসেস্ টু ইনফরমেশন (এটুআই)প্রোগ্রাম সহযোগিতা প্রদান করেছে।

সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লাইলাতুল হোসেন তাঁর উপস্থাপনায় বলেন, রাঙামাটির স্থায়ী বাসিন্দার সনদ প্রাপ্তির জন্য যেকোন সার্চ ইঞ্জিন থেকে জবংরফবহপব জধহমধসধঃর এই শবুড়িৎফ দিয়ে সার্চ করলেই সরাসরি ংবধৎপয ৎবংঁষঃ থেকে যঃঃঢ়://ৎবংরফবহপব.ফপ-ৎধহমধসধঃর.মড়া.নফ/যড়সব এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা যাবে। এছাড়াও রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের যে বাতায়ন যঃঃঢ়://িি.িৎধহমধসধঃর.মড়া.নফ থেকে এই সাইটে প্রবেশ করা যাবে। নতুন সনদের আবেদন, অগ্রগতি পর্যালোচনা, সনদ ডাউনলোড, হালনাগাদ এবং যাচাইয়ের মত সুবিধাসহ আপাতত এই সাইটের মাধ্যমে প্রদান করা হচ্ছে। বাংলা এবং ইংরেজী দুই ধরনের সনদই পাওয়া যাবে এই ওয়েবসাইট থেকে এবং দু’টি ভাষাতেই একসেস্ করার সুযোগ রয়েছে। যোগাযোগ করার জন্য আছে আলাদা সাবমেনু। যাবতীয় প্রশ্নসমূহ যা সচরাচর জিজ্ঞাসা করা হয়ে থাকে তার উত্তর আগে থেকেই দিয়ে দেয়া হয়েছে। নতুন সনদ প্রাপ্তির জন্য ফি নির্ধারণ করা হয়েছে সাধারন সনদের জন্য ২০০ টাকা এবং জরুরিভিত্তিতে ৪০০ টাকা এবং সংশোধনের জন্যও একই পরিমাণ ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। ফি প্রদানের জন্য ডিজিটাল লেনদেন মাধ্যম নগদ, বিকাশ, রকেটের ন্যায় মোট ১৬টি পেমেন্ট গেটওয়ে রয়েছে। ট্রাকিং আইডি থাকার কারনে পুরো প্রক্রিয়া সম্পুর্ণ নিরাপদ ও নির্ঝঞ্ঝাট।

বিভাগীয় কমিশনার এ বি এম আজাদ, এনডিসি প্রথমেই অত্যন্ত চমৎকার ও যুগোপযোগী উদ্যোগ গ্রহণের জন্য রাঙামাটি জেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান এবং বলেন, যেকোন প্রক্রিয়া সময়ে সময়ে হালনাগাদ করতে হয়। পার্বত্যাঞ্চলে নাগরিকদের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য যে প্রচেষ্টা এবং সফল বাস্তবায়ন রাঙামাটি জেলা প্রশাসন করেছে এটিতেও নাগরিক সম্পৃক্ততার পাশাপাশি সময়ে সময়ে সেবার মান আরো উন্নত করতে হবে। ধীরে ধীরে পূর্বে যারা স্থায়ী বাসিন্দার সনদ প্রাপ্ত হয়েছেন তাঁদের তথ্য যাচাই করার সুযোগ ও সম্ভব হলে নতুন করে পূর্বের স্থায়ী বাসিন্দাদের সনদ নবায়নের সুযোগ দেবার পরামর্শ প্রদান করেন তিনি।

রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের পাশাপাশি রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট সকলকে বিষয়টি নিয়ে জোরদার প্রচারণা চালিয়ে নাগরিক সেবা জনগণের দৌঁড়গড়ায় পৌঁছাতে তিনি উৎসাহ প্রদান করেন।