ঘুর্ণিঝড় ‘মোরা’য় লন্ড ভন্ড রাঙামাটি: নিহত দুই পরিবারকে ডিসির আর্থিক অনুদান প্রদাণ

461


আলমগীর মানিক- ১ জুন ২০১৭, দৈনিক রাঙামাটি: ঘুর্ণিঝড় মোরার আঘাতে লন্ড ভন্ড হয়ে যাওয়া রাঙামাটি শহরকে রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় পুর্ণগঠনে পূর্নদমে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট্য কয়েকটি বিভাগের লোকজন। শহরের বিভিন্ন স্থানে আক্রান্ত লোকজনকে তাদের নিজস্ব ভিটায় ফেরাতে এবং জীবন যাত্রাকে স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে আসতে কাজ করছে জেলা প্রশাসন, ত্রাণ ও দূর্যোগ বিভাগ এবং বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। এদিকে ঝড়ের সময় গাছ চাপা পড়ে রাঙামাটি শহরে নিহত দুইজনের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা বাবদ পরিবার প্রতি ২০ হাজার টাকা করে মোট ৪০ হাজার টাকা প্রদান করেছেন রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোঃ মানজারুল মান্নান। বুধবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে নিহত দু’জনের পরিবারকে আর্থিক সহায়তার চেক তুলে দেন জেলা প্রশাসক। এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোায়াজ্জেম হোসেন, জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা বিশ্বনাথ মজুমদার, নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট রফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। এদিকে বসতঘরসহ ক্ষতিগ্রস্থদের ত্রাণ সহায়তার লক্ষে জেলা প্রশাসনের পক্ষ তালিকা তৈরী করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক। তিনি জানিয়েছেন, মোরার আঘাতে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাগুলোর তালিকা শহরসহ উপজেলা গুলো থেকে আমাদের কাছে পর্যায়ক্রমে প্রেরণ করছে। আমরা সবগুলো জায়গাতেই ত্রাণ পৌছানোর ব্যবস্থা নিয়েছি।

জেলা প্রশাসক আরো জানান, জেলাজুড়ে প্রায় তিনশো ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। অধিকাংশ ঘরের চাল উড়ে গেছে। আমরা সেগুলোর তালিকা করে ক্ষতিগ্রস্থদের ত্রাণ দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। আমাদের হাতে কিছু ত্রাণ দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। আরো ত্রাণের জন্য মন্ত্রণালয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। সেগুলো যথাসময়ে চলে আসবে। এদিকে বিদ্যুত ব্যবস্থা পুরোপুরি বিপর্যস্থ হয়ে গেছিলো। কিছু কিছু ক্ষেত্রে উন্নতি ঘটেছে বৃহস্পতিবারের মধ্যে বিদুৎ ব্যবস্থা সচল হয়ে যাবে বলেও জানিয়েছেন প্রশাসক মোঃ মানজারুল মান্নান।

এদিকে, জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা বিশ্বনাথ মজুমদার জানিয়েছেন, বিভিন্ন উপজেলা থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জেলার বিভিন্ন স্থানে সর্বমোট ১৫০টি ঘর সম্পূর্ন ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এবং এক হাজার ২৭টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থদের কাছে শীঘ্রই ত্রাণ সহায়তা পৌছে দিতে কাজ করছে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন। তিনি জানান, যাদেরকে টিন দেওয়ার দরকার তাদেরকে টিন, টাকা দেওয়ার দরকার তাদেরকে টাকা এবং অনেককেই চাউল দেওয়া হবে।

এদিকে,ঘুর্নিঝড় মোরা’র তান্ডবে ক্ষতিগ্রস্থ  রাঙামাটিতে বৈদুতিক লাইন সংযোগের কাজ ও রাস্তার উপর ভেঙ্গে পড়া গাছপালা সরিয়ে নেওয়া কাজ শুরু হয়েছে। ঘুর্ণিঝড় মোরা’র তান্ডবে রাঙামাটিতে বসতঘর, বৈদ্যুতিক লাইন, ক্যাবল টিভির লাইন ক্ষতিগ্রস্থসহ  রাস্তার উপর গাছ পালা ভেঙ্গে পড়ে যায়। এসব ক্ষতিগ্রস্থ বৈদ্যুতিক লাইন ও রাস্তার উপর ভেঙ্গে পড়া গাছের ডালপালা সরিয়ে নেওয়ার কাজ মোরার আঘাত পরবর্তী মঙ্গলবার রাত থেকে শুরু করে বুধবার সারাদিনব্যাপী উদ্ধার তৎপরতা চালিয়েও শেষ করতে পারেনি যৌথ উদ্ধারকারী দল। রাঙামাটি শহরে এখনো অনেক এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে্যু। সন্ধ্যা নাগাদ শহরের গুরুত্বপূর্ন কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে সক্ষম হয়েছে বিদ্যুত বিভাগের লোকজন।

বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী কর্মকর্তা সবুজ কান্তি মজুদার জানান, রাঙামাটি শহরে প্রায় শতাধিক বিদ্যুৎ কর্মী কাজ করছে। রাঙামাটি শহরের প্রায় ২০ টি পয়েন্টে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের লোকবল কম থাকায় চট্টগ্রাম সহ বিভিন্ন জেলা থেকে কর্মীদের নিয়ে এসে কাজ করানো হচ্ছে। আশা করছি আগামী দুই এক দিনের মধ্যে রাঙামাটি শহরে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

পোস্ট করেন- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরো প্রধান