॥ আলমগীর মানিক ॥ সরকারি আইন সহায়তা কার্যক্রমের গতি বাড়ানোর উপর গুরুত্বারোপ করেছেন রাঙামাটি জেলায় সদ্য যোগদান করা জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ কাউসার। তিনি বলেন, প্রতিটি মানুষের সুবিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে, এই অধিকার আমাদের সংবিধানেই সুনিশ্চিতভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে। যারা গরীব এবং পশ্চাদপদ তারাও যাতে বিচারের সময় ন্যায় বিচার পেতে পারেন এই লক্ষ্যেই সরকার জাতীয় আইনগত সহায়তা আইন করে, এ জন্য একটি সংস্থা গঠন করেছে। দরীদ্রমানুষের মামলার খরচ যে সরকারিভাবে প্রদান করা হয় এই প্রচারণা জোরদার করা এবং এ লক্ষ্যে জনগণকে সচেতন করা সকল সচেতন নাগরিকের দায়িত্ব। জেলা জজ বলেন, পাহাড়ের মানুষ অনেক সহজ সরল আর সে কারণেই তাদের জন্য রয়েছে ঐতিহ্যবাহী আইনী কাঠোমো এবং বিশেষ আইনী ব্যবস্থা। এই বিষয়গুলো মাথায় রেখেই এখানকার বিচার ব্যবস্থা পরিচালনা করতে হবে।
অনুষ্ঠানে জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থার পরিচালক মালিক আব্দুল্লাহ আল-আমিন বলেন, পাহাড়ের সাধারণ মানুষ যাতে বিনামূল্যে আইনী সহায়তা পায় এবং ন্যায্য বিচার থেকে বঞ্চিত না হয়, সেই লক্ষ্যে এখন থেকে প্রতি সপ্তাহেই জেলার উপজেলাগুলোতে রাঙামাটির লিগ্যাল এইড অফিসার যাবেন এবং অন্তত ১৫ থেকে ২০ মিনিট বক্তব্য দিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় বিচারপ্রার্থী জনগণকে সচেতন করে গড়ে তুলবেন। তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী প্রথাগত আইনে বিচার প্রার্থীদের জন্য প্রদত্ত রায়গুলোকে আরো শক্তিশালী করে গড়ে তোলার জন্য স্থানীয় পর্যায়ে বিচার কার্যক্রম শেষ করে পরবর্তীতে জেলার লিগ্যাল এইড অফিসারের নিকট নিয়ে এসে বিচারের রায়ের সীমোহরযুক্ত কাগজ নেওয়ার উপর গুরুত্বারোপ করে প্রধান অতিথি বলেন, প্রথাগত আইন বাতিল হোক এটা আমি চাইনা। তবে প্রথাগত আইনের পাশাপাশি সরকারের প্রচলিত আইনের ব্যবহার করলে মানুষ ভবিষ্যতে ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হবে না।
তিন পার্বত্য জেলার মানুষের জন্য সরকারি আইনগত সহায়তা নিশ্চিতকরণ প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় দুই বিচারক উপরোক্ত মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা বাংলাদেশ এর পরিচালক মালিক আব্দুল্লাহ আল-আমিন। এতে সভাপতিত্ব করেন রাঙামাটিতে সদ্য যোগদানকৃত সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ কাউসার।
বক্তব্য রাখেন রাঙামাটির চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট শামসুদ্দিন খালেদ, ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মোঃ শহিদ উল্লাহ, রাঙামাটি আইনজীবি সমিতির সভাপতি এডভোকেট প্রতিম রায় পাম্পু, প্রকল্প কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান, ইউএনডিপি এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার হোসেন শহিদ সুমন, ইউএনডিপি-সিএইচটিডিএফ এর কর্মকর্তা ঐশ্বর্য চাকমা প্রমুখ।
রাঙামাটির চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের যুগ্ন জেলা জজ মোঃ আজিজুল হক এর সঞ্চালনায় উক্ত কর্মশালায় বিভিন্ন উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, হেডম্যান-কার্বারী, এনজিওকর্মী ও গণমাধ্যমকর্মীরা অংশ্রহণ করেন।