ঢাকা ব্যুরো অফিস, ২১ নভেম্বর ২০১৫, দৈনিক রাঙামাটি : নানামূখি আলচনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে চোখ ও পায়ের চিকিৎসার সেরে দুইমাসের বেশি সময় লন্ডনে অবস্থান শেষে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দেশে ফিরেছেন। লন্ডনে অবস্থান কালে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা ছিল তিনি খুব শিগ্রই দেশে ফিরনে কি ফিরছেন না। সব জল্পনা-কল্পনার মুখে ছাই দিয়ে তিনি দেশে ফিরলেনা। এখন সেই আনন্দের বন্যায় ভাসছেন বিএনপি ও তার অংগ সংগঠনের নেতা কর্মিরা।
গতকাল শনিবার বিকেলে বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে এমিরেটাস এয়ারলাইনসের একটি বিমানে তিনি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। পরে সাড়ে ৫টার দিকে ভিআইপি গেট দিয়ে বের হয়ে তিনি বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এর আগে গত শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত ১০টা ১০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় শনিবার ভোর ৪টা ১০মিনিট) এমিরেটাস এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে ঢাকার উদ্দেশ্যে লন্ডন হিথ্রো বিমানবন্দর ত্যাগ করেন তিনি।
বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে বিদায় জানান তার বড় ছেলে তারেক রহমান, ছেলের স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান, ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান, তার তিন নাতনী, যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক ও সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদসহ অন্য নেতাকর্মীরা। এদিকে খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দলের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তারা খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানিয়ে লেখা ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড প্রদর্শণ করেন। মুহুর্মুহু স্লোগানে তারা বিএনপি নেত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, সেলিমা রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, মুজিবুর রহমান সারোয়ার, যুবদলের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মহিলা দলের সভাপতি নূরে আরা সাফাসহ দলের অসংখ্য নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
দেশের ক্রান্তিকাল ও রাজনৈতিক সংকট বিবেচনায় নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া চিকিৎসা অসম্পূর্ণ রেখেই দেশে ফিরেছেন বলে জানিয়েছিলেন দলটির মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন। এদিকে বর্তমান দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে দাবি করে এ অবস্থায় বিএনপি চেয়ারপারসনের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দলটি। বিএনপি নেত্রীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা ‘অপ্রতুল’ দাবি করে তার জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো জোরদারে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, ‘প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া শনিবার লন্ডন থেকে দেশে ফিরছেন। কিন্তু দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে আমাদের দল উদ্বিগ্ন।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য লন্ডন যান বিএনপি চেয়ারপারসন। সেখানে বড় ছেলে তারেক রহমান ও ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করেন তিনি। প্রায় দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে তার চোখ ও পায়ের চিকিৎসা চলছে। ২০০৬ সালে ক্ষমতা হারানোর পর যুক্তরাজ্যে এটি ছিল খালেদার দ্বিতীয় সফর। ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্র ঘুরে দেশে ফেরার পথে বড় ছেলে তারেককে দেখতে লন্ডনে গিয়েছিলেন তিনি। বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলায় (২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলা) হুলিয়া নিয়ে গত সাত বছর ধরে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে লন্ডনে রয়েছেন। দেশে ফিরেছেন খালেদা জিয়া।
পোস্ট করেন- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরোপ্রধান।