॥ আলমগীর মানিক ॥
পাহাড়ের দূর্গম এলাকার শিশুদেরকে আধুনিক শিক্ষার আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর খাগড়াছড়ি রিজিয়নের উদ্যোগে শুরু করা ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে পাঠদান প্রক্রিয়াসহ স্থানীয় প্রান্তিক চাষিদের শেখানো হবে জুমচাষের আধুনিক পদ্ধতি, বৃষ্টির পানি কিভাবে নিরাপদে ধরে রাখা যায় এবং লাভজনক মাছ চাষসহ নানা বিষয়ের প্রয়োজনীয় কৃষি তথ্য জানানোর লক্ষ্যে ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস ডিভিডি প্লেয়ারের মাধ্যমে ডিজিটাল প্রকল্পটি অবশেষে আলোর মুখ দেখছে।
মঙ্গলবার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উক্ত প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রীর আর্ন্তজাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. গওহর রিজভী। অবশেষে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২০৩ পদাতিক ব্রিগেডের উদ্যোগে পাহাড়ের সূদূর সাজেকের দূর্গম রুইলুই পাড়ায় ডিজিটাল স্কুল প্রোগ্রামের পাইলট প্রকল্প আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হতে যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট্য দায়িত্বশীল সূত্রে জানাগেছে, উক্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন খাগড়াছড়ির সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, রাঙামাটির সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু, সেনাবাহিনীর চট্টগ্রাম ডিভিশনের জিওসি জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার এডব্লিউসি-পিএসসি, সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার, পার্বত্য সচিব নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা এনডিসি, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক দেবব্রত চক্রবর্তী, গুইমারা রিজিয়নের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল মুহম্মদ কামরুজ্জামান-এনডিসি,পিএসসি, রাঙামাটি সেনা রিজিয়নের কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার সানাউল হক এসজিপি-পিএসসি, খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার স.ম. মাহবুব আলম, খাগড়াছড়ি বিজিবি সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল মতিউর রহমান, বিজিবি-এম, রাঙামাটি শাখা ডিজিএফআই অধিনায়ক কর্ণেল মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল, পিএসসি, রাঙামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা, রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মানজারুল মান্নান, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান তরুন কান্তি ঘোষ, খাগড়াছড়ি সার্কেল চীফ সাচিং প্রু জেরী, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী, মারিশ্যা জোন কমান্ডার লেপ্টেন্টে কর্ণেল এসএম শাসসুম মুহীত প্রমুখ।
বর্তমান সরকারের গৃহিত ডিজিটালাইজেশনের প্রক্রিয়া অনুসরণ করে দূর্গম পাহাড়ের শিক্ষাবঞ্চিত এলাকার শিশুদের জন্য ভিডিও ক্লাসের মাধ্যমে ডিজিটাল স্কুল প্রোগ্রামসহ দূর্গম এলাকায় ডিভিডি প্লেয়ারের মাধ্যমে প্রত্যেক গ্রামের কার্বারীদের মাধ্যমে চাষিদের শেখানো হবে জুমচাষের আধুনিক পদ্ধতি, বৃষ্টির পানি কিভাবে নিরাপদে ধরে রাখা যায় এবং লাভজনক মাছ চাষসহ নানা বিষয়ের প্রয়োজনীয় কৃষি তথ্য জানানোর এক অন্যন্য উদ্যোগ নিয়েছে খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়ন কতৃপক্ষ।
এরআগে চলতি বছরের গত আগষ্ট মাসের ২৭ তারিখ শনিবার দুপুরে সাজেকের রুইলুই পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ডিজিটাল স্কুল ও বহুমাত্রিক সচেতনামূলক এই কর্মসূচীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে ছিলেন পার্বত্য সচিব নিজেই। উদ্বোধনের পর বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ডিভিডির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল স্কুল প্রোগ্রামের বিভিন্ন বিষয় প্রদর্শণ করা হয়।
ডিজিটাল স্কুল প্রোগ্রামে খাগড়াছড়ি ক্যান্ট: পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষকবৃন্দ ভিডিও ক্লাসের মাধ্যমে প্রথম শ্রেণী হতে পঞ্চম শ্রেণী পযন্ত সব বিষয়ের পাঠ্যক্রম তৈরী করেছেন। এ প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ২৫লক্ষ টাকা। খাগড়াছড়ি রিজিয়নের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল স.ম. মাহবুব আলম বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘদিন চাকরির সুবাদে বিভিন্ন দূর্গম অঞ্চলে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। দেখা গেছে তারা অনেক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। বিদ্যালয় বিহীন গ্রামগুলোতে গ্রামের লোকজন চাঁদা তুলে শিক্ষকের বেতন দেওয়া হতো কোথাও কোথাও।
আমরা সেই সব সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের কাছে ডিজিটাল স্কুল প্রোগ্রাম পৌঁছে দিতে চাই।
তিনি আরো বলেন, ডিজিটাল স্কুল প্রোগ্রামের জন্য দক্ষ শিক্ষক দিয়ে ইতিমধ্যেই চার শতাধিক ডিভিডি তৈরি করা হয়েছে। ডিভিডি প্লেয়ারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়ে সহজে পাঠদান দেওয়া যাবে। দু’য়েক মাসের মধ্যে তা চালু করা হবে বলেও জানান তিনি।
অপরদিকে, খাগড়াছড়ি সদর জোন অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. হাসান মাহমুদ বলেন, শুধু ডিজিটাল স্কুল প্রোগ্রাম নয়, দূর্গম এলাকায় ডিভিডি প্লেয়ারের মাধ্যমে জুমচাষের আধুনিক পদ্ধতি, বৃষ্টির পানি কিভাবে নিরাপদে ধরে রাখা যায় এবং লাভজনক মাছ চাষসহ নানা বিষয়ে জানানো হবে। প্রত্যেক গ্রামের কার্বারীদের মাধ্যমে চাষিদের শেখানো হবে।