মিয়ানমারে রাখাইন রাজ্যে সীমান্ত রক্ষী পুলিশ (বিজিপি)’র ২৪টি আউট পোষ্টে রোহিঙ্গাদের উপর সশস্ত্র হামলা চালাচ্ছে দেশটির সামরিক বাহিনী। শুক্রবার থেকে থেমে রাখাইন রাজ্যে রাথিডং,বুচিডং ও মংডুসহ তিনটি শহরে ২৪টি বিজিপি’র আউট পোষ্টে সশস্ত্র হামলার ঘটনার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শুরু করা সামরিক অভিযানের মুখে হাজার-হাজার নির্যাতিত রোহিঙ্গার শিশু-নারী-পুরুষ নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ছয়টি সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও পুলিশ সদস্যরা কড়া নজরদারি করেছে এবং ওইসব সীমান্ত এলাকায় অতিরিক্ত বিজিবি ও পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
তুমরম্ব্র স্থানীয় বাসিন্দা সামশুল আলম মোবাইলে জানান, নাইক্ষ্যংছড়ির দুগৃম ঘুমধুম,তুমর্রু ও রেজু মঞ্জয় পাড়ায় আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে শতাধিক রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। অপরদিকে চাকঢালার সীমান্তের ওপারে ওয়ালিডং,খালিডং ও বিকুবুনিয়ার জঙ্গলে এবং সীমান্তের জিরো পয়েন্ট এলাকায় বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে।
লেমুছড়ি এলাকার বাসিন্দা মোঃ কালু বলেন, সীমান্তের ওপারে অনুপ্রবেশের অপেক্ষমান বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গারা যে কোন সময় এক যোগে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করলে বিজিবি সদস্যরা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে পারবে কিনা জানি না। আমরা আতঙ্কে আছি। অনুপ্রবেশ ঠেকাতে অতিরিক্ত বিজিবি ও পুলিশ সদস্য মোতায়েনের দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে তুমরু সীমান্তে ২৭১নম্বর তুমরু মৌজার হেডম্যান কাইছা প্রু তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, রোহিঙ্গারা হাতে কিরিচ,রামদা,লাঠি নিয়ে এলাকায় গ্রামের আশে পাশে ঘুরা ফেরা করছে। আমরা আতঙ্কে আছি। আমাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা জোরদার করার দাবি জানাচ্ছি। স্থানীয়রা বলেন, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের পিলার ৪১নম্বর থেকে ৪৭নম্বর পিলারে ঘুমধুম,তুমরু,চাকঢালা,আশারতলী,ফুলতলী ও লিমুছড়িসহ ছয়টি সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস.এম সরোয়ার কামাল বলেন, ঘুমধুমে কলাতলী ও তুমরুসহ তিনটি পয়েন্টে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ হয়েছে। তাদের বাংলাদেশের ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। নির্দ্দিষ্ট তিনটি পয়েন্টে আটকে রাখা হয়েছে। ঘুমধুম বাজারের কাছাকাছি তিনটি পয়েন্টে ২৫০জনসহ কলাতলীতে ২৫জন তুমরুতে ২৫জনের মত আটকে রাখা হয়েছে। বিজিবি সদস্যরা তাদের সুযোগ বুঝে ফেরৎ পাঠানো হবে। ঘটনাস্থলে সার্বক্ষণিক অবস্থান কার করছেন বলে তিনি জানান। সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত বাসিন্দারদের আতঙ্ক না হবার জন্য বলা হচ্ছে।
এদিকে সকালে বিজিবি’র মহাপরিচালক আবুল হোসেন,বান্দরবানের জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিকসহ প্রশাসনের কমকতারা এলাকা পরিদর্শনের করেন।।
বিজিবি’র মহাপরিচালক আবুল হোসেন, সাংবাদিকদের বলেন সরকার কোন ভাবে রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ করতে দেবে না। অনুপ্রবেশ ঠেকাতে প্রয়োজনীয় আরো সংখ্যক বিজিবি’র জোয়ানদের মোতায়েন করা হবে। সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে প্রশাসন।