নানিয়ারচরে এলাকায় চাষিদের ৮২ হাজার আনারস গাছ কেটে সাবাড়

594

॥ মঈন উদ্দীন বাপ্পী ॥

রাঙামাটি জেলার নানিয়ার উপজেলায় আবারও রাতের আধারে বাঙালি চাষীদের ফলদ আনারস গাছ কেটে ফেলা হয়েছে।

স্থানীয় চাষীদের বক্তব্য, নিরাপত্তা বাহিনী সূত্র এবং পুলিশ জানিয়েছে রোববার সন্ধ্যার দিকে এবং রাতের আধারে মোট ৮জন চাষীর আনারস বাগান কেটে ফেলা হয়। স্থানীয়রা দাবি করেছেন স্থানীয় একদল উপজাতীয় যুবক পরিকল্পিতভাবে চাষীদের এসব বাগান কেটে ফেলে। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী রোববার সন্ধ্যায় উপজেলার বুড়িঘাট ইউনিয়নের দুই একর জমির অন্ততঃ ৮২ হাজার আনারস গাছ সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেওয়া হয়।

এদিকে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা দেখা দেওয়ায় এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। জানাগেছে সেনা সদস্য ও পুলিশের সমন্বয়ে গঠিত যৌথবাহিনী এলাকায় টহল দিচ্ছে।

সোমবার ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে সেনা সদস্যরা ৫জনকে আটক করে। পরে তাদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়। তবে এ বিষয়ে এলাকায় নানা গুজব ছড়ানো হচ্ছে বলে দাবি করেছে স্থানীয়রা।

২০১৪ সালে একই কায়দায় বাঙালি চাষীদের আনারস আনারস বাগান কেটে সাবাড় করে দেয় দুস্কৃতিকারীরা। বাঙালি চাষীরা দাবি করেছে দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ প্রশাসনিক পদক্ষেপ না নেওয়ায় বারবার এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। তারা অবিলম্বে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে রাঙামাটির পুলিশ সুপার মো. সাঈদ তারিকুল হাসান জানান, খবর পেয়ে আমরা তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে। কিছু দুস্কৃতিকারী মাঝেমধ্যে এসব ঘটনার জন্ম দিয়ে এখানকার পরিস্থিতিকে ঘোলাটে করার চেষ্টা করে। প্রশাসন সে বিষয়ে সতর্ক এবং যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

এদিকে প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্থ দুই চাষীর জন্য ৪০ হাজার টাকার নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছেন। এর মধ্যে জেলা প্রশাসনের ত্রাণ তহবিল থেকে ২০ হাজার টাকা এবং সেনা জোনের তহবিল থেকে ২০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। উল্লেখিত ৪০ হাজার টাকা আনারস চাষী মধু মিয়া ও জামাল সিকদার কে প্রদান করা হয়।

আনারস বাগান কেটে ফেলার পর সোমবার এ বিষয়ে নানিয়ারচর থানায় ক্ষতিগ্রস্থ চাষী মধু মিয়া বাদী হয়ে একটি মামলা রুজু করেন। মামলায় ২০জনের নাম উল্লেখ করে ৭০জনকে আসামী করা হয়।

সোমবার বুড়িঘাট এলাকা থেকে সেনা সদস্যরা অভিযুক্তদের মধ্য থেকে যাদের আটক করেছে এরা হলো রেনু মার্মা (৫০) ছাইনিও মার্মা (৫৬) লা থোয়াই মার্মা (৩০) মংলা অং মার্মা (৫৫)ও আশি প্র“ মার্মা (২৫)। আটককৃতদের সকলের বাড়ি বুুড়িঘাট ইউনিয়নের উপর পুলি পাড়ায় বলে জানা গেছে।