॥ মোঃ নাজিম উদ্দীন ॥
রাঙামাটিতে যোগদান করা নবাগত পুলিশ সুপার মীর মোদ্্দাছ্্ছের হোসেন বলেছেন, জাতীয় দিবসগুলোতে জেলার সুবিধা বঞ্চিত ও বিশেষ শিশুদের জন্য পলওয়েল পার্ক দর্শনে ছাড় দেওয়া হবে। পাশাপাশি বিদ্যালয়গুলোর জন্যও নির্দিষ্ট দিনে প্রবেশ মূল্য মওকুফ করার চিন্তা রয়েছে কর্তৃপক্ষের। তবে এই সুবিধা এখনই নয়, পলওয়েল পার্কের নির্মাণ কাজ গোছানোর পর সুবিধাজনক সময়ে এই ঘোষণা প্রদান করা হবে। পুলিশ সুপার আরো বলেন, আমি দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে সাংবাদিকদের সাথে সমন্বয় করে জনকল্যাণে কাজ করতে চাই।
মঙ্গলবার দুপুরে রাঙামাটিতে কমর্রত সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে জেলা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এই নবাগত কর্ণধার উপরোক্ত মন্তব্য করেন। পলওয়েল ক্যাফেটরিয়ায় আয়োজিত মত বিনিময় সভায় রাঙামাটি প্রায় সকল গণমাধ্যম কর্মী উপস্থিত ছিলেন। সভার শুরুতেই প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ পুলিশ সুপারকে ফুলের গোছা দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোঃ ছুফি উল্লাহর সঞ্চালনায় এ সময় বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) তাপশ রঞ্জন ঘোষ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেড কোয়ার্টার) মাঈনুদ্দিন চৌধুরী, প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল, রাঙামাটি প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি একেএম মকছুদ আহমদ ও সুনীল কান্তি দে এবং সাধারণ সম্পাদক মোঃ আনোয়ার আল হক।
সভায় বেশ কিছু সাংবাদিক জেলার আইন শৃঙ্খলা এবং গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে পুলিশের সমন্বয় বিষয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন। এসপি তা মনোযোগের সাথে শোনেন এবং আগামী দিনে বিষয়গুলো সমাধানে কাজ করার প্রতিশ্রতি ব্যক্ত করে বলেন, ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডাকে মহান মুক্তিযুদ্ধে পুলিশ সদস্যরাই প্রথম প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। তিনি জেলা যে কোনো মূল্যে জেলার আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের রাখাসহ মাদকের বিরুদ্ধে আপোষহীন থাকার ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রাখা হবে। পার্বত্যঞ্চলের কিছু মানুষের বাড়িতে যেসব চোলাই মদ তৈরি হয় সে ব্যাপারে পুলিশ অবগত আছে। তবে সেই মদ যদি বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি হয় বা পাচারের চেষ্টা করা হয় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো।
এসপি জানান, রাঙামাটিতে আগত ট্যুরিস্টদের বিনোদন দিতে অনেক আকৃষ্ট স্থান রয়েছে। এর বদলে মাদক দিয়ে কেউ আকৃষ্ট করার চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ মাদক যেমন কারো জন্য মঙ্গল নয়, তেমনি রাঙামাটির প্রতি ট্যুরিস্টদের যেন কোন নেতিবাচক ধারণ না জন্মায় সেই ব্যাপারে সকলকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
তিনি আরও জানান, দুর্গমতার কারনে রাঙামাটিতে যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত কঠিন। সেইজন্য যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করতে হবে। এইজন্য টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করতে হবে। আপনারাও সেই ব্যাপারে কাজ করবেন।
তিনি বলেন, ‘যোগদানের পর চেয়ারে বসা হয়নি। এসে বিলাইছড়ি উপজেলার দুর্গম ফারুয়া ইউনিয়নে ছুটে গেছি। এখানে ১৪হাজার লোকের বসবাস। থানার জন্য জায়গা বরাদ্ধ থাকলেও কোন থানা নেই। তাই জায়গা সনাক্ত করেছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে থানা তৈরির চেষ্টা করা হবে। এছাড়া সাজেকে গিয়েছি। এলাকাটিও দুর্গম। দুর্গম এলাকার ফাঁঁড়িগুলো পরিদর্শন করেছি। যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতি ঘটলে জনগণও উপকৃত হবে যোগ করেন পুলিশ সুপার’।
বক্তৃতার প্রারম্ভে তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার পরিবারবর্গ,স্বাধীনতার যুদ্ধে নিহত সকল শহীদ, নিহত ত্রিশ লক্ষ মা-বোন এবং নিহত পুলিশ সদস্যদের বিনম্র শ্রদ্ধা এবং বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন।