পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান হলেন জেনারেল (অবঃ) অনুপ চাকমা

37

॥ স্টাফ রিপোর্টার॥
দীর্ঘ পাঁচ মাসের অনিশ্চয়তা শেষে অবশেষে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডে নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়েছে সরকার। উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পেয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রদূত ও মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) অনুপ কুমার চাকমা। সোমবার (২০ জানু) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চুক্তি ও বৈদেশিক নিয়োগ শাখার উপসচিব আবুল হায়াত মোঃ রফিক স্বাক্ষরিত (স্মারক নাম্বার: ০৫.০০.০০০০.১৪৬.০০.০০৭.১৭-৬৩) প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই নিয়োগ প্রদান করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড আইন, ২০১৪ এর ৬ (২) ধারা অনুযায়ী মেজর জেনারেল (অব:) অনুপ কুমার চাকমা, এনডিসি, পিএসসি-কে অন্য যে কোন পেশা, ব্যবসা কিংবা সরকারি, আধা-সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান/ সংগঠন-এর সাথে কর্ম-সম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে যোগদানের তারিখ থেকে ০২ (দুই) বছর মেয়াদে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে সরকারের সচিব পদমর্যাদায় ও আর্থিক সুবিধাদিসহ চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করা হলো।
জানা গেছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল অনুপ কুমার চাকমা রাঙামাটির সন্তান। তিনি ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছর মিয়ানমারের বাংলাদেশ মিশনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবেও কাজ করেন।
১৯৫৬ সালে জন্মগ্রহণ করা সাবেক এই উচ্চ পদস্থ সামরিক কর্মকর্তা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে প্রথম শ্রেণিতে ডিফেন্স স্ট্যাডিতে ¯œাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি ২৫ ডিসেম্বর ২৯৭৭ সালে কমিশনপ্রাপ্ত হয়ে সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। এ সময় তিনি ২য় শ্রেষ্ঠ ক্যাডেট হিসেবে ‘সেনাপ্রধানের কেইন’ অর্জন করেন।
কর্মজীবনে তিনি ১৯৮১ থেকে ৮৫ পর্যন্ত সিলেটে স্কুল অব ইনফেন্ট্রি এন্ড ট্যাকটিক্স এর প্রশিক্ষক হিসেবে, ৮৮ পদাতিক ব্রিগেডের ব্রিগেড মেজর (১৯৮৬-৮৯) হিসেবে, ১৯৯০ সালে জেনারেল স্টাফ অফিসার (অপারেশন) গ্রেড-২ হিসেবে, লে: কর্ণেল থাকা অবস্থায় ২৪ ইস্ট বেঙ্গল ও ২৯ ইস্ট বেঙ্গলের অধিনায়ক হিসেবে ও পরে কমান্ড স্টাফ কলেজ মিরপুরের প্রশিক্ষক (১৯৯৩-৯৭) হিসেবে, কর্ণেল পদে থাকাকালে বিজিবি সেক্টর কমান্ডার এবং ব্রিগেড কমান্ডার হিসেবে, ব্রিগেডিয়ার পদে থাকাকালে সৈয়দপুর ব্রিগেডের ব্রিগেড কমান্ডার হিসেবে (২০০০-২০০১) এবং সেনা সদরের সামরিক প্রশিক্ষণ পরিদপ্তরের পরিচালক এবং সর্বশেষ মেজর জেনারেল থাকাকালে মাস্টার জেনারেল অর্ব অর্ডনেন্স হিসেবে ২০০৫ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।
সামরিক প্রশিক্ষণের মধ্যে তিনি সফলতার সাথে বেশকিছু কোর্স সম্পন্ন করেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কোর্সগুলো ছিলঃ ইনফেন্ট্রি লাইট এন্ড হেভি ওয়েপন কোর্স (১৯৮৩) স্থান: গুয়াংজু মিলিটারী একাডেমী, গুয়াংজু, গণপ্রজাতন্ত্রী চীন। কোর্স : আর্মি স্টাফ কোর্স (১৯৮৯-১৯৯০) স্থান: কমান্ড এন্ড স্টাফ কলেজ, মিরপুর-১২, ঢাকা, বাংলাদেশ। কোর্স: জার্মান ভাষা কোর্স (১৯৯০-১৯৯১) স্থান: ফেডারেল ইনিস্টিটিউট অব লেঙ্গুয়েজেস, কোলন, জার্মানী। কোর্স: কমান্ড এন্ড স্টাফ কোর্স (১৯৯১-১৯৯২) স্থান: কমান্ড এন্ড স্টাফ কলেজ, হামবুর্গ, জার্মানী। কোর্স: ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্স (জানুয়ারী-ডিসেম্বর ২০০২) স্থান: ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ, ঢাকা, বাংলাদেশ। কোর্স: সিনিয়র ইন্টারন্যাশনাল ডিফেন্স ম্যানেজমেন্ট কোর্স (২০০৭) স্থান: মন্টেরি, ক্যালিফোর্নিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।
এ ছাড়াও তিনি ইউনাইটেড ন্যাশনস্ অবজারভার মিশন ইন জর্জিয়া (ইউনোমিগ) মিশন-এ সেক্টর কমান্ডার/চিফ অপারেশন অফিসার পদে দায়িত্ব পালন (১৯৯৭-১৯৯৮) করেন। সর্বশেষ তিনি কুটনৈতিক মিশনে মিয়ানমার প্রজাতন্ত্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদুত পদে দায়িত্ব পালন (জুন ২০০৯-জুন ২০১৪) করেন। কর্মজীবনে তিনি ২৬টি দেশে অবস্থান/ ভ্রমন করেন, এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ অস্ট্রোলিয়া, বেলজিয়াম, ভুটান, কানাডা, চায়না, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জর্জিয়া, জার্মানি, গ্রীস, হলেন্ড, ইন্ডিয়া, লুকসেমবুর্গ, মালেয়েশিয়া, মিয়ানমার, পাকিস্তান, রাশিয়া, সিঙ্গাপুর, দক্ষিন কোরিয়া, সুইডেন, থাইলেন্ড, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং ভিয়েতনাম।