পার্বত্য চট্টগ্রামে বিজয় দিবস পালন ও ৮ দফা দাবীতে বুধবার, ১৪ ডিসেম্বর ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমঅধিকার আন্দোলনের মানববন্ধন

669

স্টাফ রিপোর্ট- ১২ ডিসেম্বর ২০১৬, দৈনিক রাঙামাটি (প্রেস বিজ্ঞপ্তি): ১৯৭১ সালের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধা জানিয়ে আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম সমঅধিকার আন্দোলন মাস ব্যাপী রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে ব্যাপক কর্মসূচী পালন করে আসছে। দেশের অখন্ডতা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য এবং উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের বিচ্ছিন্নতাবাদী চক্রান্ত তথা জুমল্যান্ড ষড়যন্ত্র বানচালের লক্ষ্যে পাহাড়ে দেশপ্রেমিক উপজাতি ও বাঙ্গালীদের নিয়ে সংগঠনের নেতাকর্মীরা সভা-সমাবেশ, উঠান বৈঠক, চা-চক্র, আলোচনা, এডভোকেসি মিটিং ইত্যাদি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী অব্যাহত রেখেছে।

বিজয় দিবস কর্মসূচীর ধারাবাহিকতায় আগামী বুধবার ১৪ ডিসেম্বর ২০১৬ বেলা ১১টায়, ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে পাহাড়ের সকল দল ও সংগঠনকে সম্পৃক্ত করে বিজয় দিবস পালনের দাবীতে মানববন্ধন কর্মসুচীর ডাক দেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, সন্তুু লারমার জনসংহতি সমিতি, ইউপিডিএফ, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ বিজয় দিবস পালনে বাধাসহ উপজাতীয় শিশু-কিশোর, শিল্পী, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও উপজাতীয় জনগণকে নানাভাবে হয়রানি করে আসছে। বিজয় দিবস পালনে উৎসাহি দেশপ্রেমিক উপজাতি ও বাঙালিদেরকে সার্বিক নিরাপত্তা প্রদানসহ ৮ দফা দাবীতে পার্বত্য চট্টগ্রাম সমঅধিকার আন্দোলন ঢাকায় বুধবারের সমাবেশ ও কর্মসূচী পালন করবে।

মানববন্ধন কর্মসূচীতে সভাপতিত্ব করবেন তিন পার্বত্য জেলার জনপ্রতিনিধি, তৃণমূল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ, ইউপি মেম্বার, চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে গঠিত সমঅধিকার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক, প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব, রাঙামাটি জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার জনাব মনিরুজ্জামান মনির।

এছাড়া পার্বত্যকালো চুক্তি ও বহুল বিতর্কিত ভূমি কমিশন আইন-২০১৬ বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত ৫ বাঙালি সংগঠন পার্বত্য নাগরিক পরিষদ, পার্বত্য গণপরিষদ, পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদ, বাঙালি ছাত্র ঐক্য পরিষদ, জাগো পার্বত্যবাসী এর নেতৃবৃন্দ মানববন্ধন কর্মসূচীর সাথে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখবেন। উক্ত কর্মসূচী সফল করার জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে।

বিজয় দিবসের আলোকে পার্বত্য চট্টগ্রাম সমঅধিকার আন্দোলনের ৮ দফা:

১। রাঙামাটি জেলা সদরে অবস্থিত পাকিস্তানী দালাল রাজাকার চাকমা চীফ ত্রিদিব রায়ের নামে প্রতিষ্ঠিত ত্রিদিবনগর বাতিল করে উক্ত স্থানের নাম মজিবনগর করতে হবে। রাজাকার কমান্ডার বিজয় কেতন চাকমাসহ উপজাতীয় রাজাকার, মিলিশিয়া, শান্তি কমিটির নেতাদের বিচার করতে হবে।

২। গত ২০ নভেম্বর ২০১৬ ঢাকায় ডিআরইউতে সংবাদ সম্মেলন করে কতিপয় ইউপিডিএফ নেতা বিজয় দিবসের বিরুদ্ধে আপত্তিকর দেশদ্রোহী ও উস্কানীমূলক বক্তব্য দিয়েছে। তারা বিজয় দিবস পালন না করারও ঘোষনা দিয়েছে। যা অত্যন্ত আপত্তিকর। এর ফলে দুর্গম পাহাড়ী এলাকায় দেশ প্রেমীক উপজাতি ও বাঙালিরা দারুন নিরাপত্তা হীনতা ও আতংকে ভোগছে। অবিলম্বে ঐসব ইউপিডিএফ নেতাদেরকে আটক এবং বাঙালি উপজাতি জনগোষ্টির নিরাপত্তা প্রদানের জন্য প্রশাসনকে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে।

৩। বিজয় দিবস কর্মসূচীতে বাধাদানকারী জেএসএস, ইউপিডিএফ, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদসহ উগ্র-সাম্প্রদায়িক অস্ত্রধারী উপজাতীয় সন্ত্রাসীদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে।

৪। রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের সকল উপজাতীয় রাজনৈতিক দল ও সংগঠনকে বিজয় দিবসের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

৫। যেসব উপজাতীয় শিশু-কিশোর, অভিভাবক, শিল্পী, শিক্ষক-শিক্ষিকা যারা বিজয় দিবসের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন তাদের জান মালের নিরাপত্তাসহ সর্বপ্রকার সহযোগিতা করতে হবে।

৬। সরকারের বেতনভোগী লাভজনকপদে অধিষ্ঠিত প্রতিমন্ত্রীর ক্ষমতাধারী সন্তুুলারমাসহ সকল উপজাতীয় নেতাদেরকে বিজয় দিবসের যাবতীয় কর্মসূচীতে যোগদানে বাধ্য করতে হবে।

৭। বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস, শহীদ দিবসসহ বাংলাদেশের জাতীয় দিবসগুলো যাতে তিন পার্বত্য জেলার সকল উপজাতীয় নেতারাও সসম্মানে পালন করেন, সেই লক্ষ্যে সরকারী প্রশাসনকে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৮। পার্বত্য কালোচুক্তি ও বিতর্কিত ভূমি কমিশন আইন-২০১৬ বাতিলসহ দেশবিরোধী মিথ্যা বানোয়াট বিকৃত তথ্যের অপপ্রচারকারী উপজাতীয় নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং তথাকথিত জুম্মল্যান্ড নামে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনকে সমূলে বিনাস করতে হবে।

মহান বিজয় দিবস ২০১৬ উপলক্ষ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম সমঅধিকার আন্দোলনের পূর্ব ঘোষিত ৯ দফা দাবীনামা এবং বিজয় দিবসের মানববন্ধনে প্রদত্ত ৮ দফা দাবীনামা বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের অখন্ডতা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সুসংহত করার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্য হওয়ার অনুরোধ করা হলো।

পোস্ট করেন- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরো অফিস।