পাহাড়ী ঢলে বিধ্বস্ত বিলাইছড়ির ফারুয়া ইউনিয়নে ত্রাণ বিতরণ করলেন উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনও

195

। অসিম চাকমা-বিলাইছড়ি।

টানা ভারী বর্ষণের ফলে পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট স্মরণ কালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় তলিয়ে যাওয়া দূর্গম ফারুয়া বাজার ও ফারুয়া ইউনিয়ন পরিদর্শন করলেন বিলাইছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীরোত্তম তঞ্চঙ্গ্যা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মিজানুর রহমান।

টানা ৮/৯ দিন ধরে বৃষ্টি এবং পাহাড়ি ঢলে প্রায় দীর্ঘ ৮ দিন পর্যন্ত সদর থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হলে বুধবার (৯ আগস্ট) তারা সেখানকার ক্ষতিগ্রস এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন ও জনগণের সঙ্গে মত বিনিময় করেন ।

ফারুয়া পরিদর্শনকালে তারা ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে দূর্যোগ ব্যব্স্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে অতি ক্ষতিগ্রস্থ দুইশত পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন। এবং আরো ১০ মেঃটন খাদ্য শস্য পোঁছে দিবেন বলে জানান। পরে ৩ নং ফারুয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বিদ্যালাল তঞ্চঙ্গ্যা ও ইউপি সদস্য, বাজার কমিটি, শিক্ষক,জন প্রতিনিধি, হেডম্যান- কার্বারিদেরও সঙ্গে মত বিনিময় করেন। এসময় তাদের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তায়ন কর্মকর্তা মোঃ শামসুদ্দিন ও উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা( ভাঃ) মোঃ মিজানুল হক ও রিপোর্টার সুজন কুমার তঞ্চঙ্গ্যা প্রমূখ।

স্থানীয়দের ভাষ্য মতে, এত বড় ধ্বংসজ্ঞ জীবনে কখনো দেখেননি ফারুয়াবাসী, তাই বন্যার করাল গ্রাসে যেদিকে তাকাই শুধুই ধ্বংস যজ্ঞ। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সবাই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। অনেকের দোকান, ঘর- বাড়ি, ধান্য জমি, সবজির ক্ষেত, জুম ও গৃহপালিত পশু ইত্যাদি। ভেঙ্গে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থাও। এবং ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বেশ কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় । ফারুয়া বাজার ছাড়াও ওরাছড়ি ও তক্তানালা বাজারগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এবং ইউনিয়নের অন্যান্য ছোট ছোট বাজারগুলোতো হয়েছে। রাঙ্গামাটির ১০ উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বিলাইছড়ি উপজেলা বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে তারা মনে করেন। তাই এখান থেকে উত্তোরন ঘটাতে তারা সরকারীসহ বেসরকারী সংস্থা ও দাতাগোষ্ঠীর সহযোগীতা কামনা করেন।

এদিকে ফারুয়া ইউনিয়ন ছাড়াও উপজেলার অন্য তিন ইউনিয়নও বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বিশেষ করে পাহাড় ধসে অনেকের ঘর-বাড়ি, জুমের ফসল, বিদ্যালয়, রাস্তা-ঘাট পাহাড়ী ঢলে বর্ষা সীজনের ধান্য জমি, সবজি ক্ষেত, গবাদী পশু ইত্যাদি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

বড়তলী ইউপি সূত্রে জানা যায়, সেখানে প্রায় ৫ টি গ্রাম পাহাড়ী ধলে সৃষ্ট বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, এছাড়া অন্যান্য ক্ষতিতো রয়েছে। এছাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার প্রায় ৬ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় পাহাড়ী ঢলে ও পাহাড় ধসে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তাই এই বিদ্যালয়গুলোর শ্রেনী কায্যক্রম চালিয়ে নিতে ব্যাহত হবে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ শামসুদ্দিন জানান, পুরো উপজেলায় আনুমানিক ১৫ কোটির মত সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে। যার জন্য দূর্যোগ ব্যব্স্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে এবং রাঙ্গামাটি ডিসি’র তত্বাবধানে ফারুয়া ইউনিয়নে ২০ মেঃ টন, বিলাই ছড়ি ইউনিয়নে ১০ মেঃ টন, বড়থলি ইউনিয়নে ৫ মেঃ টন এবং কেংড়াছড়ি ইউনিয়নে ৫ মেঃ টন খাদ্য শস্য বরাদ্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।