পুরোদমে রাজনীতির মঞ্চে নিযুক্ত নিরূপা চাকমা : কারামুক্তির পর ডাকসুতে সংবর্ধনা

518

WP_20160108_096

 
ঢাকা ব্যুরো অফিস, ৯ জানুয়ারি ২০১৬, দৈনিক রাঙামাটি (প্রেস বিজ্ঞপ্তি) : হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি সদ্য কারামুক্ত নিরূপা চাকমাকে সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে। শুক্রবার, ৮ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১১টায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু হল রুমে সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়।

সংবর্ধনা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক মাইকেল চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি শ্যামলী শীল, বাংলাদেশ ছাত্র যুব আন্দোলনের সহআহ্বায়ক আতিক অনিক, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (ঢাবি আহ্বায়ক) ইভা মজুমদার ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি সিমন চাকমা। সভা পরিচালনা করেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিপুল চাকমা।

সংবর্ধনা সভায় নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি শ্যামলী শীল কারামুক্ত নিরূপা চাকমাকে অভিনন্দন জানান। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকারের দমন-পীড়নের তীব্র সমালোচনা করেন। পাহাড়ি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই সংগ্রামের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে শ্যামলী শীল বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের শিশুরা ফিলিস্তিনি শিশুদের মতো ভীতিকর পরিস্থিতির মধ্যে বেড়ে উঠছে। ’

সভায় নিরূপা চাকমা নিজের কারাভোগের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। সেনা-পুলিশের অন্যায় দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ জানান। জেল-জুলুম মামলা-হুলিয়া দিয়ে দুনিয়ার কোথাও বিপ্লবীদের দমিয়ে রাখা যায়নি অভিমত ব্যক্ত করে তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামেও এর ব্যতিক্রম হবে না। ফিলিস্তিনি জনগণের ন্যায্য সংগ্রামে সংহতি প্রকাশ করতে গিয়ে জেল খাটায় ভয়ে দমে যাওয়া দূরের কথা, কারাগারে রুদ্ধ হওয়ায় তিনি গর্ববোধ করছেন। পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের লড়াই সংগ্রাম এগিয়ে নিতে তিনি আরও বেশী দায়িত্বশীল হয়ে ভূমিকা রাখতে সচেষ্ট থাকবেন বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে আয়োজক কমিটি ও উপস্থিত প্রগতিশীল ছাত্র ও নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে নিরূপাকে সংবর্ধনা জানানো হয়।

উল্লেখ্য, গত ২৯ নভেম্বর ২০১৫, আন্তর্জাতিক ফিলিস্তিনি সংহতি দিবসে খাগড়াছড়ি সদরের চেঙ্গী স্কোয়ারে ৮গণসংগঠনের আয়োজিত সমাবেশে মিছিল সহকারে যাবার পথে খেজুড়বাগান উপজেলা রাস্তায় সেনা-পুলিশ হামলা চালায়। এ সময় হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভানেত্রী নিরূপা চাকমা ও খাগড়াছড়ি জেলা দপ্তর সম্পাদিকা দ্বিতীয়া চাকমাকে আটক করে নিয়ে যায় এবং সমাবেশে যোগদানের লক্ষ্যে জড়ো হতে থাকা ছাত্র-যুবকদের লাঠিপেটা করে তাড়িয়ে দেয়। খবংপুজ্জ্যায় ঢুকে সেনা জওয়ানরা হুমকিমূলক টহল দিয়ে লোকজনকে সন্ত্রস্ত করে রাখে। চেঙ্গী নদীর পারেও সেনা জওয়ানরা লোকজনদের ধাওয়া করে। একই দিন মধুপুরে শান্তিপূর্ণ সমাবেশে হামলা চালায়। এদিন সেনা-পুলিশের হামলায় নারী ও স্কুল ছাত্রসহ ১৪ জনের অধিক জখম হয়।
নিরূপা চাকমা ও দ্বিতীয়া চাকমাকে আটকের পর ষড়যন্ত্রমূলকভাবে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা সাজিয়ে কারাগারে প্রেরণ করে। দীর্ঘ ১৮দিন কারাবাসের পর গত ১৭ ডিসেম্বর নিরূপা চাকমা ও দ্বিতীয়া চাকমা খাগড়াছড়ি জেল থেকে জামিনে মুক্ত হন। সেদিনই রেডস্কোয়ারে তিন গণতান্ত্রিক সংগঠন ডিওয়াইএফ-পিসিপি ও এইচডব্লিউএফ’র পক্ষ থেকে তাদের তাৎক্ষণিকভাবে সংবর্ধনা দেয়া হয়।
নিরূপা ও দ্বিতীয়া মুক্তি লাভ করায় সংগঠনের নেতা-কর্মীগণ চাঙ্গা হয়ে উঠেছে বলে জানা গেছে। বিভিন্ন সাংগঠনিক টিমে বিভক্ত হয়ে তারা সাংগঠনিক সফরে নেমেছে।

সম্পাদনা- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরোপ্রধান