॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥
রাঙামাটির দুর্গম বিলাইছড়ি উপজেলার সড়ক যোগাযোগ নিশ্চিত করতে ৩৩৮ কোটি ৫৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে কাপ্তাইয়ের করিগরপাড়া ও বিলাইছড়ি পর্যন্ত ৪০ কিলোমিটার নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন, খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার এমপি।
শনিবার (৮ অক্টোবর) সকালে কাপ্তাইয়ের কারিগরপাড়া মুখে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাঙামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী, রাঙামাটি জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আহমেদ শফি, রাঙামাটি জেলা পরিষদ সদস্য অংসুইছাইন চৌধুরী, কাপ্তাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মফিজুল হক, কাপ্তাই উপজেলা প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম চৌধুরী, চন্দ্রঘোনা থানার ওসি ইকবাল বাহার চৌধুরী, কাপ্তাই ইউপি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ, রাইখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সুইচাইপ্রু মারমা, সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ তালুকদার সহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ৩৩৮ কোটি ৫৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৪০ কিলোমিটার রাস্তার নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। ইতিমধ্যে ২০ কিলোমিটার রাস্তার কাজ শুরু হবে।
উদ্বোধন করতে গিয়ে দীপংকর তালুকদার এমপি বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময় আন্তরিত। আর জননেত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতা দুর্গম পাহাড়ে সড়ক যোগাযোগের নতুন দ্বার উন্মোচিত হচ্ছে। এতে করে পার্বত্য অঞ্চলের প্রতিটি উপজেলাকে সড়ক যোগাযোগের মাধ্যম উন্নত করে স্থানীয় জনগনের জীবনমান পরিবর্তন উন্নয়নের দিকে ধাবিত হচ্ছে। তিনি বলেন, এই সড়কটির কাজ শেষ হলে স্থানীয় জনগন তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য যেমন বাজার জাত করতে পারবে তেমনি এই অঞ্চলর পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটবে। এই সড়ক নির্মাণ হলে পর্যটন শিল্পের উন্নয়নের পাশাপাশি এই এলাকার জনগোষ্ঠীর উৎপাদিত পণ্য ঘরে বসেই বিক্রি করতে পারবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
কাপ্তাই উপজেলা প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম চৌধুরী জানান, রাঙ্গামাটি জেলা স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ২০২৫ সালের মধ্যে এর নির্মাণ কাজ শেষ হবে। তিনি আরোও জানান, গত ৪ মে একনেকের সভায় গণভবন হতে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই প্রকল্পের অনুমোদন দেন। ৩৩৮ কোটি ৫৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
রাইখালী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ জাকরিয়া জানান, প্রকল্পটি যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হলে বিলাইছড়ি ও কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী এলাকার জনসাধারণের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতি ও অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হবে।
ভালুকিয়া এলাকার নিহার তনচংগ্যা জানান, কারিগর পাড়া হইতে বিলাইছড়ি পর্যন্ত সড়ক করা হলে সড়কের ব্যবহারকারী ও পিছিয়ে থাকা জনসাধারণের উন্নতি বয়ে আনবে। আমাদের এলাকাটি একটি দুর্গম পাহাড়ি জনপদ ও সবদিকে পিছিয়ে থাকা এলাকা। অনুমোদিত প্রকল্পের অর্থ যাতে দুর্নীতি না হয়ে যথাযথভাবে ব্যয় করে বাস্তবায়িত হয় এবং জনসাধারণের ও দেশের স্বার্থে উন্নতি জন্য কাজ করা হয় সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।
রাঙ্গামাটি জেলা এলজিইডি সুত্রে জানা যায়, কাপ্তাইয়ের কারিগর পাড়া হতে বিলাইছড়ি পর্যন্ত সর্বমোট ৪০ কিঃ মিঃ দূর্গম সড়ক নির্মান করা হবে। তৎমধ্যে ৩১ কিঃ মিঃ কাপ্তাই অংশে এবং ৯ কিঃ মিঃ বিলাইছড়ি উপজেলার অংশে পড়েছে। অধিকাংশ পথই উঁচু নীঁচু পাহাড় বেষ্টিত। এই ৪০ কিঃ মিঃ সড়কে সর্বমোট ১১টি ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। ৭টি কাপ্তাই উপজেলা অংশে এবং ৪টি বিলাইছড়ি উপজেলা অংশে ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। বিলাইছড়ি অংশে প্রতিটি ব্রিজ হবে ৪শত মিটার। এই বিশাল কর্মযজ্ঞে শেষ না হওয়া পর্যন্ত স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, জনগণ, প্রশাসন এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা কামনা করেন স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তারা।