॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥
সনাতন ধর্মের অন্যতম দেবতা বিষ্ণুর অবতার শ্রী কৃষ্ণের জন্মদিন ঘিরে সারাদেশের ন্যায় পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতেও উৎসব মুখর পরিবেশে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপিত হয়েছে। শ্রী কৃষ্ণের জন্মতিথি ঘিরে শুক্রবার (১৯ আগস্ট) সকাল থেকেই রাঙামাটি শহরে ভক্তদের ঢল নেমেছিল। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে নানান বয়সী ভক্তবৃন্দ যেন কৃষ্ণ প্রেমের এক অদৃশ্য টানে ছুটে এসেছিলেন জন্মাষ্টমী উৎসবের মহা শোভাযাত্রায়। সব বয়সের মানুষের সরব অংশগ্রহণে এক নবরূপ ধারণ করে শ্রীকৃঞ্চের জন্মতিথি উৎসবের মাঙ্গলিক মহাশোভাযাত্রা। ব্যানার-ফেস্টুন আর বাদ্যের তালে তালে নেচে গেয়ে শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিন পালন করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
হিন্দু পঞ্জিকা মতে, ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে যখন রোহিণী নক্ষত্রের প্রাধান্য হয়, তখন জন্মাষ্টমী পালিত হয়। প্রতি বছরের মতো এবারও শ্রীশ্রী জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদসহ ‘সনাতনী সম্প্রদায়ের ব্যানারে’ আয়োজন করা হয় জন্মাষ্টমীর বর্ণিল মহাশোভাযাত্রা। শোভাযাত্রাটি সহ¯্র মানুষের অংশগ্রহণে পরিণত হয় মিলনমেলায়। পরে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। অন্তত আধা কিলোমিটার দীর্ঘ এ শোভাযাত্রার অগ্রভাগে ছিলেন রাঙামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদানকালে খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার এমপি বলেন, অত্যাচারীর বিরুদ্ধে দূর্বলের অধিকার ও পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতেই পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এই পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন। শান্তি ও সম্প্রীতির মেলবন্ধনের মাধ্যমে পার্বত্য অঞ্চল থেকে অশুভ শক্তি বিনাশে সকল সম্প্রদায়কে এক হয়ে কাজ করার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, ভগবান শ্রী কৃষ্ণ দুষ্টের দমন ও সৃষ্টের পালন নীতি অবলম্বন করেছিলেন, ঠিক তেমনি করে পার্বত্যাঞ্চলের পাহাড়ী-বাঙ্গালী সকল সম্প্রদায়কে এক হয়ে পার্বত্যাঞ্চল থেকে অশুভ শক্তিকে দুর করে শুভ শক্তির আর্বিভাব ঘটাতে হবে। তাই অশুভ শক্তি বিনাশে সকল সম্প্রদায়ের মানুষকে এক হয়ে কাজ করার আহবান জানান তিনি।
শুক্রবার সকালে রাঙামাটি শাহ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে এই শোভাযাত্রাটি শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।
শোভাযাত্রায় অন্যান্যের মধ্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব এসএম ফেরদৌস ইসলাম, জেলা প্রশাসনের সহকারী ম্যাজিষ্টেট বিজন কুমার জোয়ার্দার, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ রাঙামাটির সভাপতি অমর কুমার দে, জম্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সভাপতি স্মৃতি বিকাশ ত্রিপুরা, রাঙামাটি জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক স্বপন কান্তি মহাজন, জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সমন্বয়কারী বাবলা মিত্রসহ রাঙামাটি শহরের বিভিন্ন মন্দির থেকে ঢাঁক-ঢোলসহ শত শত নারী-পুরুষ শোভাযাত্রার র্যালীতে অংশগ্রহণ করেন। আলোচনা সভা ছাড়াও মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জলন ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।