॥ বাঘাইছড়ি সংবাদদাতা ॥
বাঘাইছড়ি উপজেলায় এক মোটরসাইকেল চালককে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা এ সময় আরো একজন গুলিবিদ্ধ হলেও সৌভাগ্যক্রমে সে বেঁচে যায়। নিহত মোটরসাইকেল চালকের নাম সুখেন চাকমা (২০)। আহত সজীব চাকমাও (২১) পেশায় মোটরসাইকেল চালক। বুধবার (৩০ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সাজেক ইউনিয়নের মিডপয়েন্ট এলাকায় মোটর সাইকেল থামিয়ে তাদের গুলি করে সন্ত্রাসীরা।
নিহত সুখেন চাকমা সাজেক ইউনিয়নের মিডপয়েন্ট গ্রামের মঙ্গল চাকমার ছেলে। গুলিবিদ্ধ সজীব চাকমা একই গ্রামের মঙ্গল চান চাকমার ছেলে। তাঁরা দুজনেই জনসংহতি সতিমির সমর্থক বলে জানা গেছে। তবে ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালান।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সাজেক থানা ওসি নুরুল আলম জানান, বুধবার সকালে সুখেন নিজের মোটরসাইকেল চালিয়ে মিডপয়েন্ট থেকে দাড়িপাড়া গ্রামের দিকে যাচ্ছিলেন। সজীব ওই মোটরসাইকেলের পেছনে বসেছিলেন। মিডপয়েন্ট গ্রাম থেকে আধা কিলোমিটার দূরত্বে পৌঁছালে একদল দুর্বৃত্ত মোটরসাইকেলের গতি রোধ করে। কিছু বলার আগেই দুর্বৃত্তরা সুখেন ও সজীবকে লক্ষ্য করে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দুজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে সুখেন মারা যান। সজীবকে দীঘিনালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়।
এ ঘটনার জন্য আঞ্চলিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) কে দায়ী করেছে জেএসএস (সন্তু) বাঘাইছড়ি উপজেলার সাংগঠনিক সম্পাদক ত্রিদিপ চাকমা। তিনি বলেন, ইউপিডিএফ কমান্ডার আপন চাকমার নেতৃত্বে বিনা উস্কানিতে আমাদের সমর্থক এই নিরীহ গ্রামবাসীকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি চালায় তারা। আমরা এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
এদিকে, ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) সাজেক অঞ্চলের সমন্বয়ক আর্জেন্ট চাকমা এই ঘটনার সাথে তাদের দলের কোন সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন এবং নিউ লংকর এলাকায় ইউপিডিএফ এর কোন কর্মকা- নেই বলে দাবী করেন। তার মতে এটি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়।
বাঘাইছড়ি ও সাজেক থানার সার্কেল এএসপি, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল আওয়াল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমরা সংবাদ পাওয়ার পরপরই এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এবং মরদেহ উদ্ধারসহ আইনি ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করছি। এলাকাটি খুবই দুর্গম, উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে তাই একটু সময় লাগবে।
প্রসঙ্গত, আগামী ২রা ডিসেম্বর পার্বত্য শান্তি চুক্তির ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে বাঘাইছড়ি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিশাল জনসমাবেশের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)। তার দুইদিন আগে এমন ঘটনায় এলাকায় সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সমাবেশ কে ঘিরে বড় সংঘাতের আশঙ্কা করছে কেউ কেউ।