॥ বান্দরবান প্রতিনিধি ॥
নির্বাচনের শেষ মুহুর্তে এসে নির্বাচনি প্রচারণা থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন বান্দরবান সদর উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীর। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের আইডি থেকে লাইভে এসে নির্বাচন প্রচারণা থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা জানান তিনি।
এবারের নির্বাচনে বান্দরবানের সাতটি উপজেলায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা অংশ নিয়েছেন। প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। চেয়ারম্যান একে এম জাহাঙ্গীর মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) প্রচারণা তেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়ায় জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এবারের উপজেলার পরিষদ নির্বাচনের আওয়ামী লীগের প্রার্থীর হিসেবে আনারস মার্কা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনের অংশ নিয়েছেন। এদিকে তার নির্বাচনের পোস্টা বিভিন্ন স্থানে গ্রাম-গঞ্জে ও শহরের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে গেছে। কিন্তু হঠাৎ করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো সিদ্ধান্ত নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারের পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের মাঝে ভিন্ন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে, সোমবার সকালে পৌর শহরের হোটেল প্লাজা কনফারেন্স কক্ষে সাংবাদিকদের সাথে তিনি মতবিনিময় সভা করেছিলেন। সভায় তিনি বলেন, নির্বাচনে আমাকে প্রাণ নাশের দৃশ্যমান ও অদৃশ্যমান হুমকি দেয়া হচ্ছে। আমার সমর্থনে যারা কাজ করছে তাদেরকে হুমকি দেয়া হচ্ছে। এমনকি ৬টি ইউনিয়নে আমি কাজ করতে পারছি না। ফলে আমার পক্ষে নির্বাচন পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই পরিস্থিতি বুঝে নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়ানো কথা বলেছেন তিনি।
অপর দিকে উপজেলার পরিষদ নির্বাচনে ব্যাপক প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন মোটরসাইকেল প্রতীক প্রার্থী আব্দুল কুদ্দুস। তিনি গত নির্বাচনের আগে টানা ৪ বারের উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
নির্বাচন অফিস দেওয়া তথ্য মতে, আগামী ৮ মে বান্দরবান সদর ছাড়াও আলীকদম উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সদর উপজেলায় মোট ভোটারের সংখ্যা রয়েছে ৭১ হাজার ৪শত ৪৪জন। তার মধ্যে মহিলা ৩৩ হাজার ৮শত ৭৪ ও পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ৩৭ হাজার ৫শত ৭০ জন। এছাড়াও স্থায়ী ভোট কেন্দ্র ৪৫টি সহ মোট ভোট কক্ষের সংখ্যা রয়েছে ১শত ৬৯। তবে একই তারিখে রোয়াংছড়ি ও থানছি উপজেলার নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও কুকি চিন ইস্যুতে এই ২ উপজেলার নির্বাচন স্থগিত করেছেন নির্বাচন কমিশন।
মঙ্গলবার সকালে নিজের ব্যবহৃত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে বার্তা লাইভে এসে বলেছেন, তাঁর সমথর্কদের হুমকি ও নির্বাচনে কাজ করতে বাধা সৃষ্টি করায় এবং দলীয়ভাবে কোন সমথর্ক না পাওয়া আপাতত নির্বাচন প্রচার-প্রচারণা স্থগিত ঘোষণা করার সিদ্ধান্তের কথা জানান। এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এই নিয়ে সাধারণ জনমনের বেশ আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
ভিডিও বার্তা তিনি বলেন, পারিপার্শ্বিক দৃশ্যমান এবং অদৃশ্যমান চাপে আমি মানসিক দিশেহারা। কখন কি ঘটে যায়, এটি অনুমান করা যাচ্ছে না। প্রতিনিয়ত যেভাবে আমাকে এবং আমার কর্মী সমর্থকদের চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। আমি যেহেতু আওয়ামী লীগের আদর্শ কর্মী হিসেবে আমার জন্য জনগণের ক্ষয়ক্ষতি, কারো জীবন বিনাশ হোক এই শঙ্কাকে সামনে রেখে এমন নির্বাচন আমার দরকার নেই।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুর রহিম চৌধুরী সাথে যোগাযোগ করা তিনি বলেছেন, একে এম জাহাঙ্গীর নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো বিষয়ে ব্যাপারে দলের কাউকে জানায়নি।