॥ নুরুল কবির বান্দরবান থেকে ॥
বান্দরবানে বর্তমানে গ্রাহকের কাছে বিদ্যুৎ বিভাগের পাওনা ৪ কোটি ৬৪ লাখ ২৩ হাজার টাকা। এর মধ্যে শুধুমাত্র জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের কাছেই বকেয়া প্রায় ৯৩ লাখ টাকা। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোডের (পিডিবি) বান্দরবান সরবরাহ কেন্দ্র সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
পিডিবি সূত্রে জানা যায়, বান্দরবান জেলায় ৭টি উপজেলা ও দুটি পৌরসভা থাকলেও জেলা দুটি সরবরাহ কেন্দ্রে বিভক্ত। বান্দরবান সদর, থানচি, রুমা, রোয়াংছড়ি উপজেলা এবং বান্দরবান পৌরসভা পিডিবি বান্দরবান কেন্দ্রের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। অপরদিকে লামা, আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা এবং লামা পৌরসভা কক্সবাজার জেলার মাধ্যমে লামা কেন্দ্র পরিচালিত হয়।
পিডিবি বান্দরবান কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ আমির হোসেন বলেছেন, বান্দরবান সরবরাহ কেন্দ্রের জন্য চট্টগ্রামের দোহাজারী হতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। দৈনিক বিদ্যুতের চাহিদা ১১ মেগাওয়াট। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রতিদিন ৬-৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, এ জন্য বর্তমানে বান্দরবানে লোড শেডিং দিতে হচ্ছে। তবে তিনি বলেন, লোড শেডিং যত কম করা যায় তার জন্য তাঁরা চেষ্টা করেন। নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, বান্দরবান সরবরাহ কেন্দ্রে বর্তমানে (২৬ জুলাই পর্যন্ত ) মোট গ্রাহক ১৮ হাজার সাত জন। এরমধ্যে প্রিপেইড মিটার গ্রাহক ২২১৭ জন, অন্যরা পোস্টপেইড মিটার গ্রাহক।এদিকে পিডিবি বান্দরবান কেন্দ্র গ্রাহকের কাছে মোট বকেয়া পাবে ৪ কোটি ৬৪ লাখ ২৩ হাজার টাকা। এরমধ্যে শুধুমাত্র বান্দরবান জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের (ডিপিএইচই) কাছেই বকেয়া ৯৩ লাখ ৮১ হাজার টাকা।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগে এর সহকারী প্রকৌশলী খোর্শেদ আলম প্রধান বলেন, ডিপিএইচইর বিদ্যুৎ বকেয়া বলা হলেও এটা বান্দরবান পৌর পানি সরবরাহ কেন্দ্রের বকেয়া। ডিপিএইচই পৌর এলাকার পানি সরবরাহ করে। এজন্য পানির গ্রাহক পৌরসভাকে বিল দেয়। সে বিল পেলেই বিদ্যুতের বিল পরিশোধ করা হয়। পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ আমির হোসেন বলেন, বিদ্যুৎ ব্যবহার করলেও অনেকে বিল পরিশোধ করতে না চাওয়ায় বকেয়া বাড়ছে।
এদিকে বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উক্ত কেন্দ্রের আওতায় ৪১টির মত সরকারি প্রতিষ্ঠান আছে। প্রত্েযকের কাছেই কম বেশি বিল বকেয়া আছে। এছাড়া অনেক অফিসে কর্মকর্তা বদল হলে আগের বিলগুলো বকেয়া থেকে যায়। এছাড়া অনেকে সরকারি বাসা ও ডরমেটরিতে থাকলেও বিল না দিয়েই চলে যায়। এ জন্যও বিপুল টাকা বকেয়া হচ্ছে। যাঁরা বাসা ও ডরমেটরিতে থাকবেন, বদলী হওয়ার আগে সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নজরদারি করলে বিদ্যুতের বিল এভাবে বকেয়া থাকতো না।
নির্বাহী প্রকৌশলী দাবি করেন, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর বকেয়া আদায়ে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ায় পুরোনো অনেক বকেয়া আদায় হয়েছে। লোড শেডিং কমানোর জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতেও বান্দরবানে কম লোড শেডিং হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।