রাঙামাটিতে বার্ষিক পুষ্টি পরিকল্পনা পর্যালোচনায় দুইদিন কর্মশালা সম্পন্ন

666

॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥

রাঙামাটি জেলার বার্ষিক পুষ্টি পরিকল্পনা পর্যালোচনার লক্ষ্যে ২দিন ব্যপী রিভিও কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৩ নভেম্বর) রাঙামাটি পার্বত্য জেলাপ্রশাসকের সম্মেলন কক্ষ্যে ২দিনের এই কর্মশালা শুরু হয়। বৃহস্পতিবার পরিকল্পনার চুড়ান্ত পর্যালোচনাশেষে এই কর্মশালা শেষ হয়। জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সমাপনী অনুষ্ঠানের জেলার ৮ উপজেলার ২২টি বিভাগের মাধ্যমে গৃহীত চুড়ান্ত পরিকল্পনার উপর বিস্তারিত আলোচনা এবং পর্যালোচনা শেষে তা চুড়ান্ত করা হয়। জেলা পুষ্টি সমন্বয় কমিটির সদস্যগণ তথা সংশ্লিষ্ট ২২টি সরকারি বিভাগের প্রতিনিধিরা এর আগে বিগত নভেম্বরে নিজ নিজ বিভাগের চুড়ান্ত পরিকল্পনা জমা দিলে তা জেলা পুষ্টি সমন্বয় কমিটিতে চুড়ান্তভাবে গৃহীত হয়।

বুধবার কর্মশালার প্রথম দিনে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত পর্যালোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন, ভারপ্রাপ্ত জেলাপ্রশসক তথা অতিরিক্ত জেলাপ্রশাসক (রাজস্ব) শিল্পী রাণী রায়। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা পুষ্টি সমন্বয় কমিটির সদস্য সচিব তথা সিভিল সার্জন ডাঃ বিপাস খীসা। এ সময় বাংলাদেশের পুষ্টি পরিস্থিতি, জাতীয় পুষ্টি নীতি ও পুষ্টি পরিষদের কার্যক্রমের উপর পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন, জাতীয় পুষ্টি পরিষদের পরিচালক ডা: জুবাইদা নাসরিন।

পরে বিভিন্ন বিভাগের প্রতিনিধিরা তাদের পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন এবং পাহাড়ি জেলা রাঙামাটিতে পুষ্টি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাধাসমূহ নিয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন।

পুষ্টি বিষয়ক ধারণাপত্রে জানানো হয়, বাংলাদেশ বর্তমান বিশ্বে অন্যতম গতিশীল অর্থনৈতিক দেশ। অবকাঠামোগত উন্নয়নের ক্ষেত্রেও দেশটি উল্লেখযোগ্য সাফল্যের পথে রয়েছে। অনেক মানবসূচকেও আমরা ভাল অগ্রগতি অর্জন করেছি। বিশেষ করে সবার জন্য খাদ্য ও প্রাথমিক শিক্ষা উল্লেখযোগ্য।

পাশাপাশি নারীর ক্ষমতায়ন, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি, সবার জন্য নিরাপদ পানি ও পয়োঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, ডিজিটাল প্রযু্িক্তর ব্যবহারে আমরা সঠিক পথেই আছি। তদুপরি সবার জন্য নিরাপদ খাদ্য, পুষ্টিসমৃদ্ধ বৈচিত্র্যপূর্ণ খাবারের সহজলভ্যতা, বিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার হ্রাস, গ্রামীণ ও শহরে বিশেষ করে বস্তি এলাকায় সুপেয় পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে আমাদের এখনো অনেক করণীয় আছে।

আলোচকগণ জানান যে, বাংলাদেশ সরকার সামগ্রিক পুষ্টি উন্নয়নে অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যা”েছ, যার উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ হলো জাতীয় পুষ্টি নীতি ২০১৫ ও দ্বিতীয় জাতীয় পুষ্টি কর্মপরিকল্পনা ২০১৬-২০২৫ প্রণয়ন। এসডিজি অর্জনে সরকারের সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ এবং বিডিএইচএস ২০১৭ এর তথ্যমতে পুষ্টিসূচকের সামগ্রিক অগ্রগতি তারই বহিঃপ্রকাশ। বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদ পুনর্গঠন ও এর কার্যক্রমের সক্রিয়তা পুরো কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করেছে। ২০১৮ সালের আগস্ট মাসের এক সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জেলা ও উপজেলা পুষ্টি সমন্বয় কমিটি গঠন সরকারের এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ।

জেলা ও উপজেলা পুষ্টি সমন্বয় কমিটির অন্যতম কাজ হলো সংশ্লিষ্ট জেলা ও উপজেলার জন্য স্থানীয় চাহিদাভিত্তিক অংশগ্রহণমূলক বহুখাতভিত্তিক বার্ষিক পুষ্টি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা। কেয়ার বাংলাদেশ পুষ্টি উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকারের কর্মকৌশলের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।

বিভাগীয় প্রধানগণ জানান, মাঝখানে কভিড পরিস্থিতির কারণে ফলিত পুষ্টি বাস্তবাংন প্রক্রিয়া কিছুটা বাধাগস্ত হলেও পিছিয়ে পড়া রাঙামাটি জেলায় এই সমন্বিত উদ্যোগের কারণে পুষ্টি পরিস্থিতির অনেক উত্তরণ হয়েছে। গৃহীত পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করা গেলে আগামী দিনে আরো ভালো ফলাফল আসবে বলে আশা করা যায়।