রাঙামাটিতে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স উদ্বোধনকালে মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক : সকল হাসপাতালে মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা ব্যয় বহন করবে রাষ্ট্র

409

Untitled-1

স্টাফ রিপোর্টার, ১ জানুয়ারি ২০১৬, দৈনিক রাঙামাটি : রাঙামাটিতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ,ক,ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, দেশের বীর সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্য থেকে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে এখন থেকে তাদের চিকিৎসা ব্যয় বহন করবে রাষ্ট্র। তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে দেশের যে কোনো হাসপাতালে ঔষুধপত্রসহ তাদের সকল স্বাস্থ্য সেবা বিনা পয়সায় প্রদান করা হবে, রাষ্ট্রীয়ভাবে এই চিকিৎসা ব্যয় বহন করা হবে। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধাদের বছরে দু’টি করে উৎসব বোনাস প্রদানের পাশাপাশি প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা করে সম্মানী ভাতা প্রদান করা হবে।

রাঙামাটিতে নির্মিত মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স উদ্বোধনকালে শুক্রবার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক এসব কথা বলেন। শুক্রবার সকালে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তিনতলা বিশিষ্ট এই ভবনের সূচনা ফলক উন্মোচন করেন। শহরের তবলছড়িতে ১ কোটি ৩৯ লক্ষ টাকা ব্যয়ে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করে রাঙামাটি গণপূর্ত বিভাগ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন রাঙামাটি আসনের সংসদ সদস্য উষাতন তালুকদার ও সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার। এ ছাড়া জেলা প্রশাসক সামশুল আরেফিন, পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রবার্ট রোনাল্ড পিন্টু স্থানীয় উর্ধতন সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ, জেলার মুক্তিযোবৃন্দ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সাংবাদিকগণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

পরে মন্ত্রী নতুন ভবনের বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখেন এবং জেলা প্রশাসকের সন্মেলন কক্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মিলিত হন।

দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি জাতির দায় উল্লেখ কওে সেই বীর সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, মৃত্যুবরণ করা সকল মুক্তিযোদ্ধাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদার পাশাপাশি একই ডিজাইনে তাদের কবর রাষ্ট্রীয়ভাবে নির্মাণ করে দেওয়া হবে- যা দেখে সবাই বুঝতে পারবেন এটা বীর মুক্তিযোদ্ধার সমাধিস্থল। অন্য ধর্মাবলম্বী মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু হলেও তাদের নিজ নিজ ধর্ম ও সংস্কৃতির আদলে একই সমাধিস্থল নির্মাণ করে দেবে রাষ্ট্র। এছাড়া যে কোনো সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা নিশ্চিত করা হবে। পাঠ্যসূচির ইতিহাসে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ও প্রকৃত তথ্যসম্বলিত কাহিনীসহ যুদ্ধাপরাধীদের কর্মকান্ড ও ঘটনাবলি সম্পর্কিত সঠিক তথ্য লিপিবদ্ধ করা হবে। আগামী জুলাই থেকে এসব সরকারি উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হবে। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বিষয়গুলো বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন বলে বক্তব্যদেন মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক।

মন্ত্রী আরও বলেন, স¤প্রতি বেগম খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে কটুক্তি করাসহ পাকিস্তানের এ দেশীয় দোসরদের সহায়তায় পাক হায়েনাদের গণহত্যা, লুণ্ঠন, মা-বোনদের ইজ্জতহরণ, নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী কর্মকান্ড সম্পর্কে যে মিথ্যাচার করেছেন তা প্রত্যাহার করে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে তাকে। খালেদা জিয়া যদি তা করেন সেটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ, অন্যথায় জাতি কখনও তাকে ক্ষমা করবে না।

জেলা প্রশাসক মো: সামসুল আরেফিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি দীপংকর তালুকদার বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া মন্ত্রীর সফরসঙ্গী এবং জেলা মুক্তিযোদ্ধা ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা এতে উপস্থিত ছিলেন।

মতবিনিময় সভা শেষে নানিয়ারচরের বুড়িঘাটে নির্মিত বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মুন্সী আবদুর রউফের সমাধিস্থল পরিদর্শন করেন মন্ত্রী মোজাম্মেল হক।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ,ক,ম মোজাম্মেল হকের সম্মানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ,ক,ম মোজাম্মেল হকের সম্মানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

পোস্ট- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরোপ্রধান।