রাঙামাটির বাজার ও শপিং কমপ্লেক্সগুলোতে জীবন’র নারীর নিরাপত্তা ক্যাম্পেইন পরিচালনা

657
স্টাফ রিপোর্টার 
জনস্থানসহ সকল প্রকার চলাচলকারী স্থানে নারী ও কন্যা শিশুদের উপর যৌন হয়রানি, নিপীড়ন ও নানাবিধ যৌন সহিংসতা বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশে নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটি জরিপ অনুসারে দেখা যায় ১০ থেকে ১৮ বছর বয়সী নারী ও কন্যা শিশুদের ৯০ শতাংশই রাস্তা, বাজার বা বিপণী কেন্দ্র, গণপরিবহন সহ অন্যান্য স্থানে যৌন হয়রানি, সহিংসতা ও অবাঞ্ছিত শারীরিক স্পর্শের শিকার হয়।
সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) এর তরুণদের প্ল্যাটফর্ম ‘ইয়াং বাংলা,’  ইউনাইটেড নেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনডিপি) এর মানবাধিকার কর্মসূচি (এইচআরপি) এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশন নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে একটি সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন শুরু করেছে। জনস্থানে নারীর নিরাপত্তা বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অংশীজনসহ তরুণ সমাজ ও নাগরিকদের ধারণা, দৃষ্টিভঙ্গি ও আচারণে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা এর অন্যতম লক্ষ্য।
জনস্থানে নারীর নিরাপত্তা ক্যাম্পেইনের লক্ষ্য হলো নারীর নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে নীতিমালার সীমাবদ্ধতাকে চিহ্নিত করে তা নীতিনির্ধারকদের জানানো যাতে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
জনস্থানে নারীর নিরাপত্তা ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে বাংলাদেশের পাঁচটি বিভাগের ১০ জেলায় মাঠ পর্যায়ে দশটি তরুণ সংগঠন কাজ করছে। জনস্থানে নারীর নিরাপত্তা  ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে অপরাজিতা যুব কল্যাণ সংস্থা  ১৪ ডিসেম্বর রাঙামাটির বনরুপা বাজার, বি এম শপিং কমপ্লেক্স, বৃহত্তর বনরুপা ব্যাবসায়ী কল্যাণ সমিতির কর্মকর্তাদের সাথে জনসচেতনতামূলক মতবিনিময় সভা ও বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণা সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। মাঠ পর্যায়ের কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বৃহত্তর বনরুপা ব্যাবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক তাপস দাশ। তিনি তার বক্তব্যে জনস্থানে নারীর নিরাপত্তা ক্যাম্পেইনের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, এটি বর্তমান সময় বিবেচনায় যুগোপযোগী একটি কর্মসূচি এবং রাঙামাটি যেহেতু পর্যটনবান্ধব শহর, এই কর্মসূচি আমাদের ব্যাবসায়ী ভাইদের সচেতন করতে খুবই কার্যকর ভূমিকা রাখবে। আমরা এই কর্মসূচীর সাথে একাত্মতা প্রকাশ করছি এবং সার্বিক সহযোগিতা এবং সাফল্য কামনা করছি । আমি মনে করি, জনস্থানে নারীর নিরাপত্তার জন্য আরো কাজ হওয়া দরকার এবং মানুষের হৃদয়ে এবং তার আচারণগত দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে হবে।‌ সকল ব্যবসায়ী এবং কর্মচারী কর্মকর্তাবৃন্দ যারা আছেন সকলেই ইতিবাচক এবং নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে এবং তাদের নিরাপত্তায় আমরা সকল বিষয় দৃষ্টি রাখি এবং ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করি। আগামীতে নারীদের নিরাপত্তার জন্য জনসচেতনতা মূলক কোন কর্মকান্ড যদি প্রয়োজন হয় সে বিষয়ে আমরা অবশ্যই মূল্যায়ন করব। পাশাপাশি সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টি সবার আগে আমরা গুরুত্ব দিব। আপনারা জানেন, বনরুপা বাজার ও বি.এম. শপিং কমপ্লেক্সটি সিসি ক্যামেরায় আওতায় রয়েছে । এখানে কোন প্রকার সমস্যা হলে আমরা সাথে সাথে ব্যবস্থা নিতে পারবো বলে আপনাদের আস্বস্ত করছি।”
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বি.এম. শপিং কমপ্লেক্স এর বিভিন্ন দোকানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ। জনস্থানে নারীর নিরাপত্তা ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে রাঙামাটির বিভিন্ন দোকান মালিক সমিতির কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের সাথে  কথোপকথন হয় এবং শপিং কমপ্লেক্স এর বিভিন্ন ক্রেতা বিক্রেতার সাথে এই ক্যাম্পেইনের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য নিয়ে জনসচেতনতামূলক আলোচনা হয়। সকলেই এমন আয়োজন ও  উদ্যোগের জন্য সাধুবাদ জানিয়েছেন। এই কর্মসূচিটি পরিচালনা এবং সমন্বয় করেন জীবন ইয়ুথ ফাউন্ডেশন এর সাধারণ সম্পাদক সাজিদ-বিন-জাহিদ (মিকি) ও জীবন এবং অপরাজিতার কার্যনির্বাহী সদস্যবৃন্দ।