রাঙামাটির সকল সরকারি দপ্তরে উচ্চগতি সম্পন্ন ইন্টারনেট সংযোগ দেয়া হচ্ছে

465

index

স্টাফ রিপোর্টার, ১ মার্চ ২০১৬, দৈনিক রাঙামাটি : রাঙামাটি জেলা সদরসহ সকল উপজেলা সদরে অবস্থিত ৯০টি সরকারি কার্যালয়ে উচ্চগতি সম্পন্ন ইন্টারনেট সংযোগ চালু করা হচ্ছে। এর মধ্যে জেলা সদরের ৬৫ টি সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং উপজেলাসমূহের ১৫টি সরকারি কার্যালয়ে এই সংযোগ দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সেল এর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়নাধীন এই প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত হলে হলে রাঙামাটি জেলার সরকারি অফিসগুলোতে প্রতি সেকেন্ডে ৩০ এমবি ক্ষমতা সম্পন্ন ইন্টারনেট সংযোগ চালু হবে।

রাঙামাটিতে এই প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল নামক একটি প্রতিষ্ঠান। এনফো সরকার প্রকল্পের আওতায় সারাদেশের সরকারি কার্যালয় সমূহে এই সংযোগ দেওয়া হচ্ছে বলে জানায় সংশ্লিষ্টরা। রাঙামাটি বিটিসিএল কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী সত্যজিৎ বড়–য়া দৈনিক রাঙামাটিকে জানান, এই প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ৬৫টি সরকারি দপ্তরে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সরবরাহের কাজে শেষ হয়েছে। সংযোগ প্রদানের কাজও চুড়ান্ত পর্যায়ে। তার মতে ইতোমধ্যে ৯০ শতাংশ কাজ বাস্তবায়ন হয়ে গেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে অবশিষ্ট কাজ শেস হতে আর এক সপ্তাহ থেকে ১০ দিন সময় লাগতে পারে। জেলা সদরের কাজ শেষ হওয়ার পরপরই উপজেলাসমূহে সংযোগ প্রদানের কাজ শুরু হবে।

প্রসঙ্গত, বিটিসিএল ব্রডব্যান্ড কানেকশন চার্জ প্রায় ৪০ শতাংশ কমিয়েছে সরকার। গত ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে এই সাশ্রয়ী মূল্য কার্যকর হবার কথা জানিয়েছিলেন টেলিমন্ত্রী তারানা হালিম। সাশ্রয়ী মূল্য অনুযায়ী এতদিন যে সংযোগ ১১শ’ টাকা ছিল সেটা ৭শ’ টাকা এবং ১৬শ’ টাকার সংযোগ ১১ শ’ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। এভাবেই সকল পর্যায়েই বিটিসিএল কানেকশন রেট কমানো হয়েছে। তবে বেসরকারি কোম্পানীগুলো এখনও তাদের রেট কমানোর বিষয়ে গড়িমসি করছে।

এদিকে রাঙামাটিতে বিটিসিএলএর কানেকটিভিটি বিড়ম্বনার এখনও অবসান হয়নি। প্রায় প্রতিদিনই হঠাৎ হঠাৎ সংযোগ ড্রপ করায় সংকটে রয়েছে এই শহরের ইন্টারনেট ইউজাররা। মাঝে মাঝে সারাদিন কোনো সময় দুইদিনও আর সংযোগ পাওয়া যায় না। এতে বিশষ করে আউটসোসির্ং এর সাথে জড়িতরা এবং ইজিপি টিন্ডার প্রদানকারী ঠিকাদারদের সবচেয়ে বেশী সঙ্কটে পড়তে হচ্ছে। একটি টেন্ডার কোটেশন করার মাঝপথে সংযোগ ড্রপ হওয়ার সহসা সংযোগ না এলে আবার এক থেকে দুই ঘন্টার কাজ বেড়ে যায় বলে জানিয়েছে ভূক্তভোগীরা। অনেক সময় অন্য কোথায় গিয়ে কোটেশন করার সময় না পাওয়ায় অনেক ঠিকাদার দরপত্র প্রস্তাবে অংশ গ্রহণ করতে পারছেন না। একইভাবে আউটসোর্সিং কাজের সাথে জড়িত নতুন প্রজন্মের তরুণরা জানায় ইন্টারনেট কানেকটিভিটি উন্নত করার জন্য সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টার কারণেই অনলাইন ব্যবসা এতটা এগিয়েছে। কিন্তু আমরা ব্যবসায় ভালোভাবে সংঙুক্ত হওয়ার পর যে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছি, তাতে আমাদের ক্যারিয়ার যেমন হুমকির মুখে পড়ছে তেমনি সরকারও বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

এ বিষয়ে কথা বললে বিটিসিএল এর সহকারী প্রকৌশলী জানান, আসলে যে সমস্যা হচ্ছে তাতে আমাদের কোনো হাত নেই। তিনি জানান প্রায় দেড় যুগ আগে রাঙামাটিতে টিএন্ডটির যে ভূগর্ভস্ত সংযোগ স্থাপন করা হয়। তার মেয়াদ শেষের পথে। তা ছাড়া সেই সময়ের ক্যাবল ব্যবস্থাপনা ছিল শুধুমাত্র টেলিফোন ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের কথা মাথায় রেখে। বর্তমানে এই তারের মাধ্যমে উচ্চগতি সম্পন্ন কানেকশন এবং ধারণ ক্ষমতার সমান সমান ব্যবহারকারী চাপ এই সংযোগ হয়তো নিতে পারছে না। তিনি জানান বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে, এর বেশী আমাদের কিছু করার নেই।

বিটিসিএলের এই উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ কবে নাগাদ রাঙামাটির গ্রাহকদের দুর্ভোগ লাঘবে এগিয়ে আসেন, এখন সেই সুদিনের অপেক্ষা।

পোস্ট করেনন- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরোপ্রধান