রাঙামাটি জেলায় বদ্ধ জলাশয়ে মাছ চাষ বাড়াতে আরো গবেষণা প্রয়োজন

348

p.1

॥ নূর হোসেন মামুন ॥  পার্বত্য রাঙামাটিতে কাপ্তাই হ্রদের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ মাছ উৎপাদন হলেও হ্রদের বাইরে বদ্ধ জলাশয়ে মাছের চাষে এই জেলা বেশ পিছিয়ে রয়েছে। অথচ বর্তমান সময়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ মাছ চাষের মাধ্যমে বিপুলভাবে সাবলম্বী হচ্ছে বলে মত প্রকাশ করেছে মৎস্য বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে সম্ভানা থাকা সত্ত্বের নানা কারণে পাহাড়ে বদ্ধ জলাশয়ে মাছ চাষের প্রবণতা নেহায়েত কম। ‘তাই পার্বত্য অঞ্চলে মাছ চাষ উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে এ এলাকায় ব্যপকভাবে জরিপ চালানো প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেন তারা। বিশেষজ্ঞদের মতে জরিপের মাধ্যমে রাঙামাটি জেলায় পাহাড়ের ক্রীক ও সমতল এলাকাগুলো আরও জলশায় তৈরী করা জরুরী। এতে পাহাড়ি অঞ্চলের মাছের উৎপাদন বাড়ার মাধ্যমে যেমন এ অঞ্চলের মানুষের প্রটিনের চাহিদা পূরণ হবে তেমনি পানির অভাবও অনেকাংশে দূর হবে। আর এই মাছ বাজারজাত করে হৃদে মাছ ধরা বন্ধকালীন সময়ে কৃষকরা দারণভাবে মুনাফা অর্জন করতে পারবে।

কাপ্তাই উপজেলার ওয়াগ্গা ইউনিয়নের কাঠালতলী এলাকার একটি ব্যক্তি মালিকানাধীন ক্রিক পরিদর্শনের সময় বিশেষজ্ঞরা এই মত ব্যক্ত করেন। মঙ্গলবার তারা এই ক্রীক পরিদর্শন করেন।

এসময় কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ তারিকুল আলম বলেন, আমাদের দেশে বেশিরভাগ মোট প্রাণীজ আমিষের যোগান দেয় মাছ। কিন্তু রাঙামাটি জেলায় কাপ্তাই লেক ছাড়া তেমন কোন জলাশয় না থাকা, পুকুরের স্বল্পতা, বিল, হাওর, বাওর বা অন্য কোনো জলাশয় না থাকায় এ এলাকার মানুষ মাছ চাষের ক্ষেত্রে বেশ পিছিয়ে রয়েছে এটা আধুনিক অর্থনীতির জন্য কোনোভাবেই সুখকর নয়। তিনি আরো বলেন পাহাড়ি এলাকার মাটির পানি ধারন ক্ষমতা কম হওয়ায় দু’একজন চাষির পুকুর থাকলেও শুকনা মৌসুমে পানি না থাকায় মাছ চাষ ব্যাহত হয়। তাই এ বিষয়গুলো নিয়ে গভির গবেষণা প্রয়োজন। কারণ বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে মৎস্য খাতের অবস্থান অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ; তার প্রমাণ অভ্যান্তরীন মুক্ত জলাশয়ে মৎস্য আহরণ ও বদ্ধ জলাশয়ে মৎস উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বে ৪র্থ ও ৫ম স্থান অর্জন করেছে।

ক্রীক পরিদর্শকালে কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ তারিকুল আলম ছাড়াও কাপ্তাই উপজেলা মৎস কর্মকর্তা সৌয়দ আবু বকর সিদ্দিক, সহকারী উপজেলা মৎস কর্মকতা ও উপজেলা বাজার কর্মকর্তা মোস্তাক আহম্মেদ উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় কাপ্তাই উপজেলা মৎস কর্মকর্তা সৈয়দ আবু বকর সিদ্দিক জানান, পার্বত্য অঞ্চলে মৎস চাষ উন্নয়ন ও সম্প্রসারন প্রকল্প (৩য় পর্যায়ে) এর আওয়াতায় কাপ্তাই উপজেলার ২৮ টি ক্রীক উন্নয়ন করা হয়। যার আয়তন ২৪.৪৬১ হেঃ। এবং উৎপাদন ২৮.৪৩ মেট্রিক টন। অন্যদিকে অত্র উপজেলার ২৬৬ পুকুর হতে ৩১.৮০ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন করা হয়। যা কাপ্তাই উপজেলার মাছের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও অর্থ সামাজিক উন্নয়নের গুরত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছে। এসব ক্রিকের পানিতে মাছ চাষ ছাড়াও এই পানি সেচ, গৃহস্থলী কাজে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে পানির উৎস হিসেবে ব্যাবহার করা হচ্ছে।