রাঙামাটি জেলায় শিক্ষার মানোন্নয়নে পদক্ষেপ নিচ্ছে জেলা পরিষদ

500


॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥

শিক্ষার মানউন্নয়নে স্কুল পরিচালনা কমিটি, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তাদের নিয়ে জেলা ও প্রতিটি উপজেলায় শিক্ষা উন্নয়ন বিষয়ক সভা করা হবে বলে জানিয়েছেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা। তিনি বলেন, উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে এবারের এইচএসসি পরিক্ষার ফলাফল আশাব্যঞ্জক নয়। তাই এ বিষয়ে আমাদের আরো বেশী করে গুরুত্ব দিতে হবে। শিক্ষিত জাতি দেশের সম্পদ। তিনি এ জেলায় শিক্ষিত জাতি গঠনে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

মঙ্গলবার সকালে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সমন্বয় সভায় সভাপতির বক্ত্যবে চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।

জেলা পরিষদ মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ছাদেক আহমদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় রাঙামাটি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আবু শাহেদ চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ শহিদ উল্লাহ, পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী আব্দুস সামাদ, রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অরুন কান্তি চাকমা, কাউখালী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এসএম চৌধুরী, কাপ্তাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দিলদার হোসেন, বিলাইছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শুভ মঙ্গঁল চাকমা, রাঙ্গামাটি প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল’সহ জেলার গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিভাগীয় প্রধান, কমিটির সুশীল সমাজের প্রতিনিধিগন উপস্থিত ছিলেন।

সভায় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা বলেন, গত ১৩জুন এ জেলায় প্রাকৃতিক দূর্যোগে পর দূর্যোগ মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ প্রশাসন, বিদ্যূৎ বিভাগ, স্বাস্থ্য বিভাগ পৌরসভা’সহ যে সকল প্রতিষ্ঠান সংগঠন ও ব্যাক্তি এগিয়ে এসেছেন সকলকে আগামীতেও এগিয়ে আসায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, প্রতি মাসে সমন্বয় সভাটি করা হয় জেলার উন্নয়ন ও জনগনের কল্যাণে। তাই প্রতি সভায় জনপ্রতিনিধি ও বিভাগীয় প্রধানদের উপস্থিত থেকে পরামর্শ ও মতামত প্রদানের আহ্বান জানান তিনি।

সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিদ্যুৎ বিতরন উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকৌশলী জানান, রাঙ্গামাটি শুকুরছড়ি ও খাগড়াছড়ির ঠাকুরছড়ার বিদ্যুৎ গ্রীড উপকেন্দ্র প্রকল্প কাজের দরপত্র আহ্বান করা হবে। এছাড়া অন্যান্য কাজ অব্যাহৃত রয়েছে। মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের কর্মকর্তা জানান, কাপ্তাই হ্রদে মাছের প্রজনন মৌসুম তাই মাছ আহরন ও পরিবহন নিষিদ্ধ রয়েছে। এছাড়া মেবাইল কোর্টের মাধ্যমে অবৈধভাবে মৎস্য শিকারীদের জরিমানা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, কাপ্তাই হ্রদের বিভিন্ন স্থান থেকে জাঁক অপসারন ও জাঁকের কাজে নিয়োজিত নৌকাবোট জব্দ করা হচ্ছে। এ অপসারন অব্যাহৃত থাকবে।  নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে আগামী ১আগষ্ট থেকে মাছ আহরন ও পরিবহন শুরু হবে।

বাংলাদেশ বেতার রাঙ্গামাটির আঞ্চলিক পরিচালক জানান, গত ১৩জুন রাঙ্গামাটিতে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্থদের থাকার জন্য বেতারে অস্থায়ীভাবে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছিল। বর্তমানে আশ্রিতদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া বেতারের অনুষ্ঠান প্রচার কার্যক্রম নিয়মিতভাবে চলছে।

জেলা রোভার স্কাউটস এর সম্পাদক জানান, গত ১৩জুন রাঙ্গামাটিতে প্রাকৃতিক দূর্যোগে পাহাড় ধ্বসে মৃতদেহ উদ্ধারকাজে ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী’সহ অন্যান্য সংস্থার সাথে রোভার স্কাউটস এর দল নিয়োজিত ছিল। এছাড়া হাসপাতাল ও আশ্রয়কেন্দ্রে পানি সরবরাহ ও ল্যাট্্িরন নির্মান কাজে রোভার স্কাউটস দল সহযোগিতায় ছিল।

রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির কর্মকর্তা জানান, রাঙ্গামাটিতে সাম্প্রতিক প্রাকৃতিক দূর্যোগে পাহাড় ধ্বসে ক্ষতিগ্রস্থদের ত্রান সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া লংগদুতে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য ত্রান সহায়তা প্রদান করা হবে।

খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে খাদ্য ভান্ডারে পর্যাপ্ত পরিমান খাদ্য শষ্য মজুদ রয়েছে। দক্ষিন বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জানান, আগামী ৩আগস্ট থেকে সপ্তাহব্যাপী বৃক্ষমেলা শুরু হবে। বৃক্ষ রোপনে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করার তিনি অনুরোধ জানান। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক বলেন, সরকার প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মডেল মসজিদ নির্মান প্রকল্প হাতে নিয়েছে। সে লক্ষ্যে এ জেলার প্রতিটি উপজেলায়ও মডেল মসজিদ নির্মার্ণের প্রস্তুতি চলছে।

সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বলেন, গত ১৩জুন রাঙ্গামাটিতে প্রাকৃতিক দূর্যোগের পর সকল প্রতিষ্ঠানকে সাথে নিয়ে জেলা প্রশাসন দূর্যোগ মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছে। বর্তমানে ৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১হাজার ৪শত দূর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষ রয়েছে। তাদের নিয়মিত খাবার-পানি-চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হচ্ছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, রাঙামাটিতে প্রাকৃতিক দূর্যোগে শালবন এলাকায় দূর্যোগে রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রামের মূল রাস্তাটি ভাঙ্গন ও রাস্তা নির্মানের পর হতে কোন ভারী যানবাহন যাতে চলাচল করতে না পারে অদ্যাবধি পুলিশ প্রশাসন ডিউটিরত রয়েছে। এছাড়া জেলার আইন শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে তিনি জানান।

এছাড়া সভায় উপস্থিত অন্যান্য বিভাগীয় কর্মকর্তাগণ স্ব স্ব বিভাগ ও জেলার সমস্যা মতামত ও অন্যান্য কার্যক্রম উপস্থাপন করেন চেয়ারম্যান উপস্থাপিত সমস্যা ও মতামত গুলো গুরুত্বের সাথে আলোচনা করে সমাধানের পরামর্শ এবং পরিষদ হতে সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।