রাঙামাটি জেলা প্রশাসন চত্তরে সাতদিনের একুশে বইমেলা

255

p..2

স্টাফ রিপোর্টার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, দৈনিক রাঙামাটি : মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে রাঙামাটিতে শুরু হয়েছে সপ্তাহব্যাপী একুশে বইমেলা। জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এই বইমেলা রোববার সন্ধ্যায় উদ্বোধন করেন  জাতীয় সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু। এবারই প্রথম রাঙামাটি জেলা প্রশাসন চত্তরে একুশে বইমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মেলা আয়োজনকে স্বাগত জানিয়েছে নাগরিক সমাজ। কেউ কেউ মেলাটি শহীদ মিনার চত্ত্বরে আয়োজনের পক্ষে মত দিলেও শহরের কেন্দ্রবিন্দু হওয়ায় মেলার স্থল হিসেবে হিসেবে জেলা প্রশাসন চত্ত্বরের এই ভ্যানুর প্রশংসা করেছে বেশীর ভাগ মানুষ। মেলা উপলক্ষে বই মেলার প্রথম দুদিন সন্ধ্যার পর জেলাপ্রশাসন চত্তর লোকে লোকরণ্য ছিল।

সন্ধ্যার পর মেলা উদ্বোধন ও একুশ ঘিরে আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগীতার পুরস্কার বিতরণ উপলক্ষে এক অনাঢ়ম্বর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। একই মঞ্চে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আলোচনা সভা। রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোঃ সামসুল আরেফিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মোস্তফা জামান ও রাঙামাটি সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ মফিজুর রহমান।

আলোচনা সভাশেষে স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মেলা ও একুশের সন্ধ্যাকে ব্যঞ্জনাময় করে তোলে। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাভাষাকে আন্তর্জাতিক ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে নীরলসভাবে কাজ করেছেন বলেই আজ এই দিব আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবেসর মর্যাদা পেয়েছে। তিনি বলেন, বাংলা ভাষাকেও বিশ্বের দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে আমাদের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে এবং জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন ভাষাভাষির যেসব জনগোষ্ঠী রয়েছে বাংলা ভাষাকে প্রধান ভাষা করে তাদের নিজস্ব ভাষায় যেন শিশুরা শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে সেজন্য বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কাজ চালিয়ে যাছে। পার্বত্য অঞ্চলের সকল জাতিগোষ্ঠীর  ভাষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি, কালচার ও ঐতিহ্য বিকাশের প্রত্যাশা করেছেন তিনি। একুশের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ ও জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পাশাপাশি আগামী দিনের শিশুরা যেন বইয়ের মাধ্যমে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠে সেজন্য প্রতিটি অভিভাবকদের বই মেলায় তাদের সন্তানদের নিয়ে এসে বই উপহার দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, ভাষার জন্য প্রাণ দিয়ে বাঙালি জাতি বিশ্ব দরবারে যে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে, তার দৃষ্টান্ত বিরল। দেশ প্রেম নিজ ভূমির প্রতি টান আর সাহসী সন্তানদের এই নজির আমাদের দেশ প্রেম ও নৈতিকতা শেখায়। আসুন আমরা দেশের কল্যাণে সকলে আন্তরিকতা নিয়ে একসাতে কাজ করি। তিনি সাতদিনের বই মেলায় নাগরিক সমাজের স্বতস্ফূর্ত উপস্থিতি কামনা করে বলেন, বই কিনে কেউ দেওলিয়া হয় না। আপনারা নিজে বই কিনুন শিশুদের বই কিনে দিন এবং প্রিয়জনদের বই উপহার দিন। কারন বইয়ের আবেদন কখনও ফুরায় না।

পরে কবিতা পাঠ ও স্থানীয় সাংস্কৃতিক দলের নৃত্য ও সংগীত পরিবেশিত হয়। বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক বই নিয়ে মেলায় মোট ২০টি স্টল স্থান পেয়েছে।

পোস্ট করেনন- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরোপ্রধান