॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥
পর্যটন শহর রাঙামাটিতে নিয়ম কানুন না মেনে যত্রতত্র জ্বালানী তেল বিক্রির বিষয়ে অভিযোগ করেছে নাগরিক সমাজ। তাদের দাবি, যারা খোলা বাজারে জ্বালানী তেল বিক্রি করছে তাদের অনেকেরই প্রয়োজনীয় অনুমতি পত্র নেই। যাদের আছে তারা বিস্ফোরক দ্রব্য বাজারজাত করণ বিষয়ে বিদ্যামান আইন কানুনের তোয়াক্কা না করেই সাধারণ পণ্যের মতই জ্বালানী তেল বিক্রি করছে ।
শহরের কাঠালতলীর এলাকায় সাইমুন এন্টারপ্রাইজ নামে একটি দোকানের বিরুদ্ধে নিয়ম বহির্ভূতভাবে খোলা জ্বালানী তেল বিক্রির অভিযোগ এনে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদনও করেছেন স্থানীয় ৪জন নাগরিক।
মোঃ আবু ছৈয়দ, মোঃ মঞ্জুর আলম, মোঃ মুজিবুর রহমান ও মো. ইলিয়াস নামে ঐ এলাকার বাসিন্দার করা আবেদনের বিষয়টি স্বীকার করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমা বিনতে আমিন জানিয়েছেন, অভিযোগ পাওয়ার আমরা বিধি মোতাবেক দু-পক্ষকেই নোটিশ দিয়েছি শুনানীতে উপস্থিত হওয়ার জন্য। অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ওই দোকানদার কাঠালতলী মসজিদের পাশে আবাসিক এলাকায় ঝুকিপূর্ণভাবে খোলা জ্বালানী তেল বিক্রি করে। দোকানের পাশে আবাসিক ভবন, আইএফআইসি ব্যাংক ও মসজিদ রয়েছে। কিন্তু তারা গভির রাত পর্যন্ত আওয়াজ করে তেলের খালি ড্রাম ট্রাকে উঠা নামা করায় স্থানীয়দের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। তেলের দোকানটি কাচাঘরে বেশ ঝুকিপূর্ণ ভাবে জ্বালানী মওজুদ করা বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা। কিছুদিন আগেও ওই পাশে আগুন লেগে গেলো মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। সৌভাগ্যক্রমে পরে আগুন নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসে।
এ বিষয়ে সাইমুন এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী মনতাজ হোসেন বলেন, আমাকে হয়রানি করতে চাচ্ছে মূলত ভবন করতে চেয়েছিলেন ওনি ভবন করতে পারে নাই। সে উদ্দেশ্যে তিনি আমার পেছনে হয়তো হয়রানি মূলক বিভিন্ন ধরণে অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। দোকান করার ক্ষেত্রে আমি সকল কাগজপত্র এবং আইন-কানুন মেনে সরকারি ইনকাম টেক্স-ফায়ার সার্ভিস লাইসেন্স বিষ্ফোরক এভরিথিং যা কিছু আছে মেনটেইনেন্স করে ব্যবসা করি। রাঙামাটির সকলে জানবে দীর্ঘরাত পর্যন্ত দোকান খোলা রাখি। ইর্মাজেন্সি রোগী, ডেলিভারি রোগী এগুলোর গাড়িতে তেল থাকে না। তখন আমি ওদেরকে হেল্প করি। সবকিছু চিন্তা করে লম্বা সময় পর্যন্ত দোকান খোলা রাখি। উনারা যেটা বলছেন ড্রামের শব্দ; হওয়ার প্রশ্নই আসেনা। যান্ত্রিকত্রুটির কারণে হয়তো রাতে বারোটা-সাড়ে বারোটার পর আসে। ভরা ড্রাম টায়ারে করে যদি দোকানে ঢুকানো হয় সেটা কখনো আওয়াজ হওয়ার কথা না। দাহ্য পদার্থ’র ক্ষেত্রে কখনই উপর থেকে ফেলার প্রশ্নই আসেনা। কারণ এটা যদি লিকেজ হয় আমাদের জন্য এক্সিডেন্ট।
অভিযোগকারীরা জানান, আবাসিক এলাকায় খোলাভাবে জ্বালানী তেল বিক্রির ফলে যে কোনো সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।
অভিযোগকারী আবু ছৈয়দ জানান, আমাদের সামনে যে তেলের দোকানটা আছে ঝুঁকিপূর্ণভাবে আছে। কাচা দোকান এটা নিয়ে আমরা সব সময় চিন্তার মধ্যে থাকি। কোন সময় কোন দূর্ঘটনা হয় এটা নিয়ে চিন্তায় ঘুমাতে পারিনা। রাত্রে বেলা ঘুমাতে পারিনা। রাত দুইটা-তিনটার দিকে তেলে খালি ড্রাম উঠা-নামা করে এটার শব্দে আমাদের ঘুমের ব্যঘাত ঘটে। বাচ্চা ঘুম থেকে উঠে যায়। এটা নিয়ে আমরা খুব চিন্তায় থাকি। এ দোকানটা যদি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া ব্যবস্থা হয় তাহলে ভালো হয়। আমাদের পার্শ্ববর্তী মিলে আগুন লেগেছিল ঐ আগুনটা ফায়ার সার্ভিসের সহযোগীতায় নিয়ন্ত্রনে আসে। কখন কোন দূর্ঘটনা ঘটে বলা যায় না। এভাবে খোলা তেল-গ্যাস বিক্রি করা আমাদের চোখে ভয়ংকর লাগতেছে। ঢাকা চকবাজারে ঘটনা শুনে আরো ভয় লাগে। সেজন্য আমরা জেলা প্রশাসকে অনুরোধ জানাচ্ছি এ দোকানটা যেন অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়।
আরেক অভিযোগকারী মুজিবুর রহমান বলেন, কাঠালতলীর তেল বিক্রির যে কাচা ঘর নির্মাণ করা হয়েছে সেটার আশেপাশে আবাসিক এলাকা আছে, আইএফআইসি ব্যাংক আছে, মসজিদ আছে এগুলো খুব অসুবিধা হচ্ছে। এগুলো রিক্স, অনেক রিক্স। ঐ এলাকায় থাকাটা দ্বায় হয়ে গেছে। রাতে দুই-তিনটা বাজে তেল উঠা-নামা করে ওটার আওয়াজে অনেক সমস্যা হয়।