রাঙামাটি সদরে একজন নারী পাড়া কারবারির পরিবার ষড়যন্ত্রের শিকার

466

॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥
বহিরাগতদের দ্বারা ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী নেতৃত্বের অংশ একজন নারী পাড়া কারবারি নিজ ভিটেমাটি ছাড়া হতে বসেছে। অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে বসবস করে আসা তাদের জায়গাজমি ও মাছের ঘের হাতিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে একটি মহল প্রতিনিয়ত এই নারী পাড়া কারবারি ও তার পরিবারকে নানাভাবে হেনস্থা ও ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছে। এমনকি তাদের নামে একটি সাজানো মামলা করে পুরো পরিবারকে পুলিশি হয়রানীর মুখে ফেলেছে বলেও ওই নারী পাড়া কারবারী অভিযোগ করেন।

রোববান রাঙামাটি প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ওই পাড়া কারবারি জানান, মিথ্যা মামলার স্বীকার হয়ে তার স্বামী সন্তান বর্তমানে জেল হাজতে। তিনি নিজেও মামলার আসামী তবে জামিনে থাকায় সাংবাদিকদের সামনে আসতে পেরেছেন। সংবাদ সম্মেনে তিনি এই দুধর্ষ প্রকৃতির য়ড়যন্ত্রকারীদের হাত থেকে বাঁচতে প্রশাসনের সুদৃষ্টি ও ন্যায় বিচার কামনা করেন। একই সাথে তারা যাতে নিজেদের আবাদ করা দখলীয় ভূমি থেকে উচ্ছেদ হয়ে ভিটেমাটিহীন হয়ে না পড়েন সে বিষয়ে সকলে সহযোগীতা কামনা করেন।

রাঙামাটি সদর উপজেলাধীন ৬নং বালুখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা পাড়া কারবারী আছিয়া বেগম ১১৪ বালুখালি মৌজার ৫নং ওয়ার্ডের নিয়োগপ্রাপ্ত পাড়া কারবারি। সংবাদ সম্মেলনে তিনি নিজেই লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। এসময় তার কন্যা নিশাত নেওয়াজ ছাড়াও মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন এলাকার প্রবীণ ব্যক্তিত্ব ও রাজনিতিক মোঃ আব্দুল করিম,  মোঃ নুরুন নবী ও মোঃ আবুল হাকিম। এ সময় এলাকার বিপুল সংখ্যক নারী পুরুষ সাংবাদিক সম্মেলন ও মানব বন্ধনে উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, কেপকো আজিজ লিমিটেড, আগ্রাবাদ চট্টগ্রাম এর মালিক কর্তৃক বেআইনী, অন্যায়মূলক নির্দেশে ঢাকার নেজাম উদ্দিন ফকির ও তার বাহিনী সহযোগিদের অত্যাচার, নির্যাতন, হামলা-মিথ্যা মামলা, প্রাণনাশের হুমকি, পাহাড় দখল, চাঁদাবাজি, কাপ্তাই হ্রদ দখল এবং ওই পরিবারের উপর করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে এলাকাবাসী মানববন্ধন করেছে। মানববন্ধনে এলাকার বিপুল সংখ্যক লোক স্বতস্ফূর্তভাবে অংশ গ্রহণ করে। মানববন্ধন শেষে তারা এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে।

আছিয়া বেগম বলেন, কেপকো আজিজ লিমিটেড এর নামীয় মূলত লিজকৃত কোন জায়গা ১১৪নং বালুখালী মৌজার সাপমারা পাহাড়ে কোন জায়গা নেই। কিন্তু জি.আর মামলা নং-২২২/২০২০ইং তারা যে জায়গা দাবি করেছেন, তা মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যে প্রণোদিত। মামলা আছিয়া বেগমেও স্বামীকে কেপকো আজিজ লিমিটেড এর অধীনস্থ কেয়ার টেকার ছিলেন বলে উল্লেখ করা হলেও তিনি জানান, ‘আমার স্বামী কখনোই কেপকো আজিজ লিমিটেডের কর্মচারী ছিলেন না বরং তিনি জুরাছড়ি উপজেলা নিবার্হী অফিসারের কার্যালয়ে অফিস সহায়ক ছিলেন বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত।  মামলায় ২০০৯ সালের জুলাইয়ে তাদের একটি নোটিশ দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করা হলেও এ ধরণের কোনো নোটিশের বিষয় তাদের জানা নেই।

তিনি বলেন, মূলতঃ কেপকো আজি লিমিটেড এর মালিকের ষড়যন্ত্র যোগসাজসে পরস্পর কু-প্ররোচনায়, বেআইনী ও অন্যায়ভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রশাসনের সহায়তায় তার লালিত ঢাকাইয়া নেজাম উদ্দিন ফকির ও তার সহযোগী লাল মিয়া তাদের পালিত মাস্তান বাহিনীর মাধ্যমে প্রতিনিয়ত আমাকেসহ আমার পরিবারের সদস্যদের অত্যাচার, নির্যাতন, দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা, প্রাণনাশের হুমকী, বসতঘরে আগুন দিয়ে জান-মালের অনিষ্ট সাধন, জায়গা জমি অবৈধ জবর-দখল, চাঁদাবাজি, জায়গা হতে উচ্ছেদ, মিথ্যা মামলা দিয়ে পরিবারিক ও সামাজিক দেয় প্রতিপন্নসহ অযথা হয়রানী করে আসতেছে। যাহা জি.আর মামলা নং-২২২/২০২০ইং, জি.আর মামলা নং-৬৯/২০২০ইং, ২৭/২০২০ইং সহ মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। যা আমি বিজ্ঞ আদালত হতে জামিনে মুক্তি লাভ করি এবং উপরোক্ত বিষয়ে এলাকাবাসী অবগত আছেন।

তাই উপরোক্ত বিষয়ে কেপকো আজিজ লিমিটেড, আগ্রাবাদ চট্টগ্রাম এর মালিক কর্তৃক বেআইনী, অন্যায়মূলক নির্দেশে ঢাকার নেজাম উদ্দিন ফকির ও তার বাহিনী সহযোগিদের অত্যাচার, নির্যাতন, হামলা-মিথ্যা মামলা, হুমকি, পাহাড় দখল, চাঁদাবাজি, কাপ্তাই হ্রদ দখল এবং স্বপরিবারের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনে প্রশাসনের প্রতি সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।