রুমার কেএনএফ সদস্য নিহত ভয়ে বাড়ি ছাড়ছেন গ্রামবাসি

114

॥ বান্দরবান প্রতিনিধি ॥

বান্দরবানের রুমা উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি এলাকা থেকে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রবিবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় লাশটি উদ্ধার করে রুমা থানা পুলিশ।

ঘটনাটি নিশ্চিত করে রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন জানান, শনিবার রাতে গোলাগুলির শব্দ শুনতে পেয়ে পাইন্দু ইউনিয়নে মুয়ালপি পাড়া থেকে ৫১পরিবার ১৪৬বাসিন্দা পালিয়ে রুমা উপজেলা সদরে চলে আসেন। পরে রবিবার সকালে ঘটনাস্থলের আশপাশে অভিযান চালানো হয়।

পুলিশ জানায়, গত বছরের ১৭ অক্টোবর থেকে পাহাড়ে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলার কারণে কেএনএফের সদস্যরা ছত্রভঙ্গ হয়ে রুমা উপজেলার সীমান্তবর্তী দুর্গম বিভিন্ন পাড়ায় অবস্থান করছে। সেখানে সম্প্রতি গোলাগুলির ঘটনাও ঘটেছে। তাদের অবস্থানের কারণে আতঙ্কিত হয়ে বিভিন্ন পাড়ার বাসিন্দারা ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাচ্ছে।

জানা গেছে, রুমা উপজেলার মুননুয়াম পাড়া ক্যাম্পে যাওয়ার সময় কেএনএফ এর সন্ত্রাসীরা সেনাবাহিনীকে লক্ষ করে গুলি ছুড়ে এসময় সেনাবাহিনী পাল্টা গুলি ছুড়লে ঘটনাস্থলেই কেএনএফ এর এক সদস্য মারা যায়। পরে রোববার সকালে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে। এসময় একটি অস্ত্র ও ৩০ টি কার্তুজ উদ্ধার করে।

রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন সেনাবাহিনীর সাথে গোলাগুলিতে কেএনএফ এর এক সদস্য মারা গেছে। তার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।
আতংকিত লোকজন জানায়, কেএনএফ সন্ত্রাসীরা এলাকার লোকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে চালসহ টাকা আদায় করে। তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারে না। দুই পক্ষের গোলাগুলিতে মুলপি মারমা পাড়ার ১৪৬ জনকে রুমা বাজারে আশ্রয় নিয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত পালিয়ে আসা লোকজন ঘরে ফিরবে না বলে জানিয়েছেন।

এদিকে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) ভয়ে ৫১টি মারমা পরিবার পালিয়ে রুমা সদরের মারমা ওয়েল ফেয়ার ত্রসোসিয়েল ভবনে অবস্থান করছেন । রুমা উপজেলা সদরে এসে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামুন শিবলী ।

এদিকে কেএনএফের বেপরোয়া তৎপরতার আতঙ্কে আর্থাপাড়া, বাসতœাংপাড়ার, হ্যাপিহিলপাড়ার বমরাও বাড়ি ঘর ছেড়ে বনেজঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পাইন্দু ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান উহ্লা মং মারমা তিনি আরও জানান নিহত সন্ত্রাসীর নাম লাল থান জুয়াল বম । তার বাড়ি আর্তা পাড়ায় বলে। উহ্লা মং মারমা আরো জানান, গত শুক্রবার থেকে সেনাবাহিনীর – সন্ত্রাসী ব্যাপক গোলাগুলির আতংকে তার ইউনিয়নের আট নং ওয়াডের মুলপি পাড়ার ৫১ পরিবারের ১৪৬ জনকে নারী পুরুষ রুমা সদরের মারমা ওয়েলফেয়ার ভবনে আশ্রয় নিয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিরিা পালিয়ে আসা লোকজনকে খাবার ও শীত বস্ত্র ব্যবস্থা করে দিয়েছে।

২০২০ সাল থেকে পাহাড়ে বম সম্প্রদায়দায়ের কিছু বিপথগামী যুবক কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট নামে একটি সশস্ত্র সংগঠন গড়ে তুলেছেন। আর তাদের নিমূলে পাহাড়ে অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।