স্টাফ রিপোর্টার
বৈশ্বিক করোনা মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ সামলাতে দেশব্যাপী কঠোর লকডাউনের মেয়াদ বর্ধিত করা হয়েছে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত। ২২ এপ্রিলের লকডাউন পরিস্থিতি বিবেচনায় আরো ১ সপ্তাহ বাড়ানোর পিছে লাগামহীন করোনায় আক্রান্ত রোগীর মারা যাওয়ার সংখ্যা এবং নতুনভাবে সংক্রমিত হওয়ার মাত্রা কমিয়ে আনাই ছিলো সরকারের লক্ষ্য। পরপর শতাধিক মৃত্যু সত্যিই জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে।
রাঙামাটির কাউখালী উপজেলায় বেড়েই চলেছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। বিগত সপ্তাহে নতুন করে ১০ জন আক্রান্ত হয়েছেন এই উপজেলার। যা গত তিন মাসের আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বিবেচনায় প্রায় তিনগুণ। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ। শুধুমাত্র এ মাসেই ২৭টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা পজেটিভ সনাক্ত হয়েছেন ১০ জন। পরীক্ষা বিবেচনায় সনাক্তের হার ৩৭% যা গত তিনমাসের আক্রান্তের বিবেচনায় প্রায় তিন গুণ।
কাউখালী উপজেলায় সাম্প্রতিক সময়ে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে মাঠ পর্যায়ে নিয়মিত সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান ও ভিন্নধর্মী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন ‘জীবন’।
কাউখালী উপজেলা সদরের পাশাপাশি হাসপাতাল রোড, রাংগীপাড়া, আমতলা, কাশখালী ও মসজিদ মার্কেটে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানোর পাশাপাশি মাস্ক বিতরণ করেছে জীবন কাউখালী চ্যাপটারের সদস্যরা।
কাউখালী চ্যাপটারের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মাহাফুজুর রহমান জানান, “আমরা কাউখালী উপজেলায় সাম্প্রতিক সময়ে করোনা ভাইরাসের দ্বারা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দেখে শংকিত। আমরা মানুষকে নানাভাবে সতর্ক করার উদ্যোগ হাতে নিয়ে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছি। আমরা আশাবাদী মানুষ সচেতন হবে।”
ইতোপূর্বে কাউখালী উপজেলায় সাদা প্রলেপ অঙ্কন করেছে জীবনের স্বেচ্ছাসেবীরা। চালিয়েছে একাধিক সচেতনতামূলক প্রচারণা।
সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবী মাউচিং মারমা জানান, “করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কমিয়ে আনতে কাউখালীতে নিয়মিত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। লকডাউনের মধ্যেও মানুষদের সচেতন করতে মাঠে অবস্থান করছে সংগঠনের সদস্যরা।”
কাউখালী চ্যাপটারের উপদেষ্টা মোঃ জয়নাল আবেদীনের সার্বিক তত্বাবধানে এই কর্মসূচিতে মোঃসজিব মিয়া ও মাহামুদুর রহমান সাকিবের নেতৃত্বে কাশখালী রশিদিয়া তা’লীমুল কুরআন একাডেমী ও মহিউস সুন্নাহ্ মাদ্রাসা দু’টিতে এতিম শিশুদের সঠিক নিয়মে হাত ধৌত করার প্রশিক্ষণ দেয় স্বেচ্ছাসেবীরা। মাদ্রাসা দু’টিতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও সাবান উপহার দেয়া হয় সংগঠনের পক্ষ থেকে।
সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও সচেতন অংশগ্রহণের মাধ্যমেই সম্ভব করোনা মহামারীর এই ঢেউ মোকাবেলা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় সচেতনতা ও সচেতন করার প্রচেষ্টার কোন বিকল্প নেই। যদিও কাউখালীতে ইতিমধ্যে ৪৮ জন সুস্থ হয়েছেন এখনো আক্রান্ত ১২ জন। কাউখালী উপজেলায় গ্রীণ আর্মির প্রচেষ্টা তখনই সার্থক হবে যখন মানুষ পুরোদমে সচেতন হবে।