॥ বান্দরবান প্রতিনিধি ॥
বান্দরবানের লামা উপজেলায় হযরত আলী নামের এক প্রান্তিক কৃষকের এক একর পঁচিশ শতক জমির ওপর রোপন করা তামাক, বাদাম, আলু ও শীম গাছ উপড়ে ফেলেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে কৃষকের প্রায় ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে উপজেলার রুপসীপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব শীলেরতুয়া নয়া পাড়ায় শনিবার দিনগত রাতে মমতাজ হোসেনের নেতৃত্বে ১০-১২ জন এ ঘটনা ঘটায়।
রবিবার বিকালে ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক হযরত আলী। অভিযোগে জানা যায়, হাজ্বী নুরুল কবিরের কাছ থেকে ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারী ৪ লাখ টাকায় ২৯৪নং দরদরী মৌজার ৫২৪নং হোল্ডিং মূলে এক একর পঁচিশ শতক জমি স্থিতা বন্ধক নিয়ে চলতি মৌসুমে তামাক, আলু, বাদাম ও শীম চাষ করেন কৃষক হযরত আলী। জমি বন্ধক নিয়ে জমির মালিক হাজ্বী নুরুল কবির ও তার ছেলে মমতাজ হোসেনের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। জমি নিয়ে বিরোধের ঘটনা মিমাংশার জন্য রবিবার সামাজিকভাবে বৈঠক বসার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু অভিযুক্ত মমতাজ হোসেন বৈঠকের আগেই শনিবার দিনগত গভীর রাতে লোকজন নিয়ে কৃষক হযরত আলীর রোপিত তামাক, বাদাম, আলু ও শীম গাছ উপড়ে ফেলে।
রবিবার দুপুরে সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, পুরো জমিতে রোপন করা বাদাম, তামাক, আলু ও শীম গাছের মধ্যে বেশির ভাগই উপড়ে ফেলে রেখেছে প্রতিপক্ষ। এ সময় জমি বন্ধকী দাতা হাজ্বী নুরুল কবিরের ছেলে নুরুন্নবী, স্থানীয় জমির হোসেন ও আলমগীর জানান, জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে শনিবার দিনগত রাত ৮টার দিকে বৌদ্ধ ভিটা থেকে ১০-১২ জন নিয়ে হযরত আলীর গাছগুলো উপড়ে ফেলে মমতাজ হোসেন। রাতের বেলা হওয়ায় কেউ ঘটনাস্থলে যেতে সাহস পায়নি। কৃষক হযরত আলী ও তার স্ত্রী কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, মমতাজ হোসেন ও তার লোকজন গত কয়েকদিন ধরে আমাদেরকে বন্ধকীয় জমিতে চাষ না করার জন্য নিষেধ করেন।
এমনকি নিষেধ অমান্য করে জমিতে চাষ করলে মারধর সহ অপূরণীয় ক্ষতি সাধণ করবে বলেও হুমকি প্রদান করেন। এরই ধারাবাহিকতায় লোকজন নিয়ে আমার রোপিত গাছগুলো উপড়ে ফেলে ৫ লাখ টাকার ক্ষতিসাধন করেন মমতাজ হোসেন। অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত মমতাজ হোসেন বলেন, হযরত আলীর রোপিত তামাক, বাদাম, আলু ও শীম গাছ উপড়ে ফেলার ঘটনায় কোন ভাবেই জড়িত নই। আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পুর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রুপসীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আবু তাহের বলেন, অভিযুক্তরা পরস্পর আতœীয়। তাই বিষয়টি বৈঠকের মাধ্যমে সমাধানের জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। কিন্তু বৈঠকের আগেই এমন ন্যাক্কার জনক ঘটনা কোনভাবেই কাম্য নয়।
এ বিষয়ে লামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানায়, তামাক বাদাম আলু ও শীম গাছ উপড়ে ফেলার বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।