ঢাকা ১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ : অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ পুলিশের ডিআইজি একেএম শহিদুর রহমান ও ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরনের কাছ থেকে ক্রেষ্ট গ্রহণ করছেন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ইবাইস ইউনিভার্সিটির বিতর্ক দল।
ঢাকা ১ সেপ্টেম্বর ২০১৬, দৈনিক রাঙামাটি: সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও নাগরিক সমাজের অব্যাহত প্রচেষ্টায় দেশে জঙ্গিবাদ বিরোধী জনমত গড়ে উঠেছে। দলমত নির্বিশেষে সকল শ্রেণী পেশার মানুষ জঙ্গীবাদকে প্রত্যাহার করে বিপদগামীদের সঠিক পথে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে আসছেন। বিশেষ করে তরুণদের জঙ্গীবাদ বিরোধী কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ জরুরী বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন। তাই তরুণ সমাজকে জঙ্গীবাদমুক্ত করার কৌশল হিসেবে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি উন্মুক্ত করার প্রস্তাব এসেছে, অনেকে আবার এ বিষয়ে দ্বিমতও পোষন করছেন। এই প্রেক্ষাপটে রাজধানীর তেজগাঁওস্থ বিএফডিসিতে ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্ট অনুষ্ঠানে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি জঙ্গিবাদকে সংকুচিত করবে শিরোনামে এক সংসদীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে এই ছায়া সংসদে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পুলিশের ডিআইজি (মিডিয়া এন্ড প্ল্যানিং) একেএম শহিদুর রহমান, পিপিএম । অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আয়োজন সংগঠক ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। শুক্রবার সকাল ১১টায় এটিএন বাংলায় অনুষ্ঠানটি প্রচার করা হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে একেএম শহিদুর রহমান, পিপিএম বলেন, এরকম বিতর্ক চর্চা আমাদেরকে যুক্তিবাদি হতে সহায়তা করে। বিতর্কের মাধ্যমে আমরা সঠিক পথ বেছে নিতে পারি। তিনি বলেন, সম্প্রতিককালে কয়েকটি ঘটনার কারণে জঙ্গীবাদ বিষয়ে আমাদেরকে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে প্রত্যককে নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রতিবাদ করতে হবে। তিনি আরো বলেন, গুলশান ও শোলাকিয়ায় কয়েকজন পুলিশ সদস্য জনগনের নিরাপত্তা রক্ষায় জীবন উৎসর্গ করেছেন। সেদিন আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী শোলাকিয়ায় সময়োপযোগী ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে ঈদের জামাতের পরিবর্তে অন্যকিছু হতে পারতো।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, আর যেন কোন বাবাকে সন্তানের বিপদগামিতার জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে না হয়। জঙ্গী তৎপরতার অভিযোগে কোনো শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে অভিযুক্ত না হতে হয়, এটা আমাদের প্রত্যাশা। ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে যাতে কেউ তরুণদের আত্মঘাতী পথে নিয়ে যেতে না পারে, সেজন্য তাদেরকে ধর্মের প্রকৃত শিক্ষা দিতে হবে। সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডসহ খেলাধুলা ও বিভিন্ন শিক্ষা মূলক প্রতিযোগিতায় তরুণদের সম্পৃক্ত করতে হবে। তিনি বলেন, শুধুু আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য যারা বেরসকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন, সেই সব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহীতার মধ্যে নিয়ে আসা উচিত। অন্যদিকে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার গুণগতমান বৃদ্ধি ও শিক্ষা সহায়ক কর্মকান্ডে সরকারি সহযোগিতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। তিনি আরো বলেন, জঙ্গীবাদ নিরসনে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করা নাগরিক দায়িত্ব, একই সাথে জঙ্গীবাদ নির্মুলের নামে কোন নিরাপরাধ ব্যক্তি বা তাদের পরিবার যেন হয়রানির শিকার না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখা জরুরী।
প্রতিযোগিতায় সরকারী দল বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব টেক্সটাইলসকে হারিয়ে বিরোধী দল ইবাইস ইউনিভার্সিটি জয়লাভ করে। প্রতিযোগিতা শেষে প্রধান অতিথি অংশগ্রহনকারী বিতার্কিকদের ক্রেষ্ট ও সনদ প্রদান করেন। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, সাংবাদিক দৌলত আক্তার মালা ও উন্নয়ন যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ড. এস এম মোর্শেদ।