॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥
তবলছড়ি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাচন ঘিরে অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা প্রদানের পরও সমবায় কর্মকর্তার মতামত তোয়াক্কা না করে তবলছড়ি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাচনি কার্যক্রম অনিয়মতান্ত্রিক এবং গঠনতন্ত্র বহির্ভূত নিয়মে পরিচালনা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে ওই সমিতির কিছু সদস্য।
অভিযোগে বলা হয়, কমিটির মন গড়া সিদ্ধান্ত, অব্যবস্থাপনার মাঝে তবলছড়ি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাচনে নেই সন্তোষজনক অংশগ্রহণ। এতে ব্যবসায়ীদের মাঝে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা লক্ষ করা যাচ্ছে। নিয়মবহিঃর্ভূত নির্বাচন ও সমবায় বিধিমালা লংঘন করে ঘোষণা করা হয়েছে বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাচন।
বৃহস্পতিবার (২২শে সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য, সাবেক প্রচার ও সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ খাইরুল বাশার তবলছড়ি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাচনী মনোনয়ন পত্র ক্রয় করতে গেলে তার কাছে মনোনয়ন পত্র বিক্রি করেনি অন্তবর্তীকালীন নির্বাচন কমিশন। এতে তার অনুসারীদের মাঝে দেখা যায় চরম উদ্বেগ। ক্ষুব্দ হয়ে ওঠেন তারা।
ভূক্তভোগী খাইরুল বাশার জানায়, বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাচনে তাকে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়নি বর্তমান অন্তবর্তীকালীন কমিটি। মনগড়া সিদ্ধান্ত নিয়ে তাকে বাদ দিয়েই নির্বাচন দিতে চায় তারা। তিনি বলেন, ২৩/০৬/২০২২ ইং তারিখে সমিতির নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহণে অন্তবর্তীকালীন একটি কমিটির নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু নিয়মবহিঃর্ভূত ভাবে ১৯/০৭/২০২২ ইং তারিখে পূর্বের অবৈধ কমিটি একটি সাধারণ সভা ডেকে তার সদস্যপদ বাতিল করেন এবং ৩৮জন সদস্যের নাম নির্বাচনী তালিকা হতে বাদ দেন। অসাংগঠনিক এই কমিটি বাতিল ও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী একটি নিরপেক্ষ অন্তবর্তীকালীন কমিটির মাধ্যমে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চান তিনি।
এবিষয়ে তিনি উপজেলা সমবায় অফিসার আশীষ কুমার চৌধুরী স্বাক্ষরিত তবলছড়ি বাজার ব্যবসায়ী সমবায় সমিত লিঃ এর বিগত ১৯/০৭/২০২২ খ্রিঃ তারিখের সাধারণ সভা ও এর সিদ্ধান্তের উপর পর্যালোচনা মন্তব্য পত্র সাংবাদিকদের হাতে তুলে দেন। তাদে দেখা যায় ২০/০৩/২০২২ তারিখে অত্র কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়। পরবর্তীতে ২৩/০৬/২০২২ তারিখের ১৮৬নম্বর স্বারকে সমিতিতে সমবায় সমিতি আইন/২০০১ (সংশোধনী ২০০২ ও ২০১৩) এর ১৮/৫ ধারায় একটি অন্তবর্তী ব্যবস্থাপনা কমিটি নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু ১৯/০৭/২০২২ তারিখে মেয়াদ উত্তীর্ণ অবৈধ কমিটি কর্তৃক সাধারণ সভা আহ্বান করেছে। যা সমবায় আইন ও বিধির সরাসরি লংঘন। একই সভায় খাইরুল বাশার এর সদস্যপদ বাতিল করেন এবং ভোটার তালিকা হালনাগাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। অবৈধ ব্যবস্থা কমিটি কোন সভা আহ্বান কিংবা কোন সদস্যের সদস্যপদ বাতিল করার অধিকার রাখেনা। পর্যালোচনা মন্তব্য পত্রে সাধারণ সভায় ৩৯১ জন সদস্য হতে ৩৮ জন সদস্যের নাম নির্বাচন সংশ্লিষ্ট ভোটার তালিকা হতে বাদ দেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ অসাংগঠনিক এবং সমবায় আইন ও বিধিমালার পরিপন্থী বলে উল্লেখ করা হয়। এর পাশাপাশি অন্তবর্তীকালীন কমিটিকে সমিতিতে সদস্যদের শেয়ার, সঞ্চয় বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও সাবেক কমিটি স্বাক্ষরিত মনগড়া খসড়া ভোটার তালিকা পরিহার পূর্বক দলমত নির্বিশেষে সমিতির সকল সদস্যের অংশগ্রহণ নিশ্চিত পূর্বক সমবায় আইন ও সমিতির গঠনতন্ত্র মোতাবেক নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করারও অনুরোধ জানানো হয়।
এবিষয়ে জানতে চাইলে অন্তবর্তীকালীন কমিটির সভাপতি মো: জসিম উদ্দিন তালুকদার জানান, অন্তবর্তীকালীন কমিটি নিয়োগের প্রায় ২মাস পরে আমাদেরকে সাবেক কমিটি দায়িত্ব হস্তান্তর করে। আমরা সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী গত ৫ সেপ্টেম্বর চুড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করি। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ভোটার তালিকা প্রকাশের ১৫দিনের মধ্যে সদস্যদের নাম সংশোধন বা বকেয়া চাঁদা পরিশোধের সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু খাইরুল বাশার উল্লেখিত তারিখের মধ্যে তার বকেয়া পরিশোধ করেনি। অপরদিকে খাইরুল বাশারের অভিযোগ তিনি বার বার বকেয়া পরিশোধের সংশ্লিষ্ট কমিটির সাথে যোগাযোগের পরও তার বকেয়া গ্রহণ করেনি। জানতে চাইলে জসিম উদ্দিন তালুকদার বলেন- খাইরুল বাশার বকেয়া পরিশোধে আমাদের সাথে কোন যোগাযোগ করেনি। এদিকে অন্তবর্তী কমিটির নির্বাচন কমিশনার জাহাঙ্গীর আলম আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন- খাইরুল বেশ কয়েকবার তার বকেয়া পরিশোধের চেষ্টা করেছে কিন্তু কেন তা জমা হয়নি তা আমি জানিনা।
বিষয়টি নিয়ে বর্তমানে ব্যবসায়ীদের মাঝে ব্যপক উৎকন্ঠা বিরাজ করছে। এবঅবস্থায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে বলে আশংকা করছেন স্থানীয়রা।