স্বামীর হয়রানী থেকে মুক্তি চেয়ে নারী নেত্রী মণিকার সংবাদ সম্মেলন

400

॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥

স্বামীর হয়রানী থেকে বাঁচতে মণিকা আক্তার নামের এক নারী প্রশাসনের প্রতি আকুতি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে। বৃহস্পতিবার (১১নভেম্বর) দুপুরে রাঙামাটি প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মণিকা বলেন, আপনারা জানেন গত ২২-০৯-২০২১ইং তারিখে রাঙামাটির থানায় আমার নামে করেন আমার স্বামী মুস্তাফিজুর রহমান, যা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য ও সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এটি যে একটি মিথ্যা মামলা তার প্রমাণ আমার হাতে রয়েছে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছে গত ২৯-০৭-২০২১ইং তারিখে রাত আনুমানিক ০৮:৩০ঘটিকার সময় আমার স্বামী মোস্তাফিজুর রহমান রাঙামাটির পৌরসভার গেট হইতে নিস মোটরসাইকেল দিয়ে বাসায় যাচ্ছি ছিলেন, রাণী দয়াময়ী স্কুলের সামনে যাওয়া মাত্র গতিরোধ করে হত্যার উদ্দেশ্যে অজ্ঞাত নামা ৬-৭ জন মুখোশধারীলোক বাদের পত্র রাস্তার পূর্ব পাশ হতে আমার স্ত্রী মনিকা আক্তার একটি ধারালো কিরিস হাতে নিয়ে এসে আমার মাথায় আঘাত করে। এতে আমার মাথায় সম্মুখভাগে ফিনকি দিয়ে রক্ত বের হতে শুরু করে। আমি মনিকা বলে চিৎকার দিলে, মনিকা তার উপস্থিত লোকদেরকে বলে একে টুকরো টুকরো করে হত্যা করিয়া লাশটি বস্তায় ভরে লেকে ফেলে দাও, আরো অভিযোগ করে আমি তাকে কোনো চিকিৎসা সেবা দেইনি এআরো বলে, তাকে যারা সহযোগিতা করেছে তাদেরকে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা, এজাহারের যেসময় উল্লেখ করেছে তার ১০-১৫মিনিট আগে আমি আমার স্বামী পৌরসভার সামনে থেকে একই সাথে মোটরসাইকেলে রওনা হই, আমি আমার স্কুটি করে আমার স্বামী তার মোটর সাইকেলে বনরূপায় পৌঁছালে, সদর উপজেলার চেয়ারম্যান মহোদয় মোঃ শহীদুজ্জামান মহাসিন রোমান ভাই ফোন করে আমাকে পনার অফিসে আসতে বলে, তখন আমার স্বামীকে রেখে আমি চেয়ারম্যান মহোদয়ের তেল পাম্ম অফিসে পৌছাই।

আমি উপজেলা চেয়ারম্যানের অফিসে বসার ৩/৪ মিনিটের মধ্যে আমাকে ফোন করে মোকারম ভাই জানায় (মামলার ১নং সাক্ষী মোকারম ভাই) মোস্তাফিজুর রহমান সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে। তখন আমি উপজেলা চেয়ারম্যানকে বলে হাসপাতালে উদ্দেশ্যে রওনা হই, রাঙামাটি সদর হাসপাতালে পৌছানোর পর কর্তব্যরত ডাক্তাররা আমার স্বামীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রামে প্রেরণ করেন। প্রথমে রাঙামাটি পৌরসভার মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী ভাইয়ের সহযোগিতায় ম্যাক্স হাসপাতালে নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় আমরা যে এম্বুলেন্সে যাই তার ড্রাইভার এর নাম সাগর তার ফোন নং ০১৮২০৩৪৭৫৯৬। অ্যাম্বুলেন্সে আমার সাথে সাংবাদিক ইলিয়াস ভাই ও আমার ভাড়াটিয়া শামীম, আজিজ ভাই ছিল। সেখানে সিটি স্ক্যান করে চট্টগ্রাম মেডিকেল সেন্টারে হাসপাতালে ভর্তি করায়। ৪দিন চিকিৎসা শেষে রোগী একটু সুস্থতা বোধ করলে চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে যাই তবুও শরীরের ভালো না দেখায় রাঙামাটি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান রোমান ভাইয়ের সহযোগিতায় রাঙামাটি সদর হাসপাতালে ৩০১নং কেবিনে তাঁকে ভর্তি করিয়ে আল্লাহর রহমতে পরিপূর্ণ সুস্থ করে বাসায় নিয়ে যাই। তার পরিবারের কোনো রকম সহযোগিতা ছাড়া সম্পূর্ণ আমার এবং দলীয় সিনিয়র নেতাদের সহযোগিতা তার চিকিৎসা সম্পূর্ণ করি। যারা আমাকে সহযোগিতা করেছেন-কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাফিয়া খাতুন ফোন করে হাসপাতালের বিল কমাতে সহযোগিতা করেন।

রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মুসা মাতব্বর, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনসুর ভাই, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাজান ভাই। আমার পাশে এবং আমার স্বামীর চিকিৎসাসেবায় সহযোগিতা করেন মো. নূর মোহাম্মদ। তিনি সবসময় আমার পাশে ছিলেন। আমি কিছু অনলাইন পত্রিকায় দেখেছি যে, আমার শামীম মোস্তাফিজুর রহমান অভিযোগ করেছে আমি নাকি হাটহাজারীতে ফারুক আহমেদ সাব্বির কে বিয়ে করেছি এবং সারা শহরে এই মিথ্যা সংবাদ রটিয়ে দিয়েছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট।

এর উপযুক্ত প্রমাণ দিতে না পারলে তার বিরুদ্ধে আমি আইনি ব্যবস্থা নিব। পুরো মামলায় অসত্য তথ্য দিয়ে জটিলতা সৃষ্টি করেছেন মামলার বাদী। আমার স্বামী মোস্তাফিজুর রহমান একটি অ্যাপস এর মাধ্যমে আমার মোবাইল ফোনটি কন্ট্রোল করতো। সে আমার আগে আরো দুইটি বিয়ে করেছিল। যা আমি আমার সাথে বিয়ের অনেক পরে জানতে পারি। আমার সাথে বিয়ের পরও আমার স্বামী মোস্তাফিজুর রহমান আরো একজনের সাথে নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ে। যার বিচার তৎকালীন ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নিয়াজ ভাই করেছেন এবং তার এমন কর্মকান্ডে আত্মহত্যা করার মতো সিদ্ধান্ত আমি নিয়েছিলাম। আল্লাহর রহমতে আমি বারবার বেঁচে গিয়েছি। আমার স্বামী মোস্তাফিজুর রহমান এ পর্যন্ত আমাকে বাড়িতে রেখে অনেকবার পালিয়ে গিয়েছিল। তার সাথে আমার মূলত জায়গা নিয়ে ঝামেলা, আমার কাছ থেকে ৪০লক্ষ টাকার বিনিময়ে আমার আমানতবাগ এলাকার জায়গাটি আমার নিকট বিক্রি করে।

আমি জানতে পারি যে, সে আমাকে না জানিয়ে জায়গাটি বিক্রি করতে চেয়েছিল। আমি এ বিষয়টি জানার পর প্রতিবাদ জানালে মোস্তাফিজুর রহমান নানান ঝামেলা সৃষ্টি করে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি ও সে আমার মোবাইলে জিমেইল এবং বিভিন্ন আ্যপস এর মাধ্যমে বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ তৈরি করে এবং সেগুলো দিয়েই আমাকে সবসময় ব্ল্যাকমেইল করে। আমি আপনাদের মাধ্যমে প্রশাসকের যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট আমার নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে আমাকে এবং আমার দুই সন্তানকে নির্যাতন ও হয়রানি বন্ধের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। এসময় মণিকার মামা মাজেদুল ইসলাম, তার স্বজন নূর মোহাম্মদ, মেয়ে মিথিলা রহমানসহ তার অন্যান্য স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।