রাঙামাটি পার্বত্য জেলায় এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৪শ’ ৩০ পরিবারের মাঝে ১০ টাকা কেজির চাল বিতরণ করা হয়েছে।
এই প্রকল্পের আওতায় প্রতি পরিবারকে মাসিক ৩০ কেজি হারে চাল বিতরণ করা হচ্ছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে জেলা খাদ্য বিভাগের অধীন ৫২ জন ডিলার করা হয়েছে এবং প্রকল্প শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ডিলারদের নামে ১হাজার ৪শত ১৪মেট্রিক টন খাদ্য বান্ধব চাল সরবরাহ করা হয়েছে। রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় সভায় এ তথ্য জানায় জেলা খাদ্য বিভাগ।
রোববার জেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এই সমন্বয় সভায় সভাপতিত্ব করেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, জেলা-উপজেলা-ইউনিয়ন ও তৃণমূল পর্যায়ের সকলকে নিয়ে সমন্বয়ের মাধ্যমে এ জেলার উন্নয়নে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল এ দেশকে একটি সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে গড়ার। তার সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে তার সুযোগ্য কন্যা বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, কাপ্তাই লেকটি আমাদের জন্য একটি বড় সম্পদ। পার্বত্য চট্টগ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা এবং বহু মানুষের সীমাহীন ক্ষতির মাধ্যমে এ লেকের সৃষ্টি হয়েছে। এই লেকের অন্যতম সম্পদ হচ্ছে মৎস্য সম্পদ। কিন্তু এক শ্রেণীর জেলে লেকে জাক দিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা ধ্বংস করছে।
এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি সভায় মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন ও নৌ পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। তিনি জেলার সামগ্রীক উন্নয়নের স্বার্থে পরিষদের প্রতিটি মাসিক ও সমন্বয় সভায় উপস্থিত থেকে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সুপরামর্শ ও মতামত প্রদানের আহ্বান জানান।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা ছাদেক আহমদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য ডাঃ নিলু কুমার তঞ্চঙ্গ্যা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহিদ উল্লাহ, বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বড়ঋষি চাকমা, কাপ্তাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দিলদার হোসেন, নানিয়ারচর উপজেলা পরিষদ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কোয়ালিটি চাকমা’সহ জেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিভাগীয় প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় ডাঃ নিলু কুমার তঞ্চঙ্গা বলেন, ১৯৯৭সালের চুক্তির পর পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ এবং পার্বত্য জেলা পরিষদসমূহ গঠিত হয়েছে। এ দুই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রামের তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিত্বশীল প্রতিষ্ঠানগুলো সমন্বয় রেখে কাজ করলে এ জেলার উন্নয়ন আরও ত্বরান্বিত হবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহিদ উল্লাহ বলেন, জেলার আইন শৃংখলা পরিস্থিতি অন্যান্য জেলার তুলনায় স্বাভাবিক এবং সন্তোষজনক। পুলিশ বিভাগ সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, পুলিশ প্রশাসন বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অপরাধমূলক তথ্য সংগ্রহ করে সাধারণ জনগণ থেকে। তাই ভবিষ্যতেও যে কোন ধরনের অনৈতিক, অসামাজিক, সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও অপরাধমূলক তথ্য প্রদান করে পুলিশ প্রশাসনকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান তিনি। বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বড় ঋষি চাকমা জানান, নদী ভাঙ্গনের ফলে বাঘাইছড়ি উপজেলার তুলাবান এলাকাটি দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সভায় অবগত করেন। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর কর্মকর্তা বলেন, নদী ফায়ার স্টেশনের অংশ হিসেবে আগামী মাসে ১টি ইঞ্জিনচালিত বোট পাওয়া যাবে। যার ফলে হ্রদবেষ্টিত এলাকায় অগ্নিকান্ড নিয়ন্ত্রণ অনেকটা সহজ হবে ।
এছাড়া সভায় উপস্থিত অন্যান্য বিভাগীয় কর্মকর্তাগণ স্ব স্ব বিভাগের সমস্যা ও অন্যান্য কার্যক্রম উপস্থাপন করেন।