বান্দরবান প্রতিনিধি, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৫, দৈনিক রাঙামাটি : আজ ১৪ ডিসেম্বর বান্দরবান হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে পাক হানাদার বাহিনী বান্দরবান ছেড়ে চট্টগ্রাম পালিয়ে যায়। পরে সেখানে আত্মসমর্পণ করে পাক বাহিনী। পাক হানাদার বাহিনী চলে যাওয়ার পর এই দিনে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা, আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী ও তৎকালিন মহকুমা প্রশাসক লাল সবুজের পতাকা উত্তোলন করে বিজয় উল্লাস করেন। দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে পার্বত্য বান্দরবানে ৪ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়েছেন। তার মধ্যে সানু অং মারমা ও উদয় সেন তংচংঙ্গ্যা নামের ২ জন পাহাড়ী মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
এছাড়াও জেলার রোয়াংছড়ি উপজেলার কেনাইজু পাড়া এলাকায় পাক বাহিনীর অতর্কিত হামলায় ৮ম ই বেঙ্গল রেজিমেন্ট এর সুবেদার টি এম আলী নামে এক বাঙ্গালী মুক্তিযোদ্ধা ও তার সহযোগী অংসাচিং মারমা নামে অপর এক উপজাতি মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়েছেন। সুবেদার মেজর টিএম আলী (ইপিআর)বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার দুর্গম কানাইজো পাড়া এলাকায় পাক হায়েনাদের সাথে সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হন। এ সময় এলাকার যুবক ও উপজাতীয় মুক্তিযোদ্ধা অংসাচিং মারমাও শহীদ হয়েছিলেন। পাক হায়েনাদের এ হামলার ঘটনাটি ঘটেছিল ৭১ সালের ১৬ নভেম্বর ভোরা ৪টায়। এ সময় পাক হানাদাররা মিজো বাহিনীর সহায়তায় কানাইজো পাড়ার ৪০টি উপজাতীয় বাড়ি পুড়িয়ে দেয়, চালায় ব্যাপক লুটপাটও। রোয়াংছড়ি উপজেলার কানাইজো পাড়া এলাকায় শহীন সুবেদার মেজর টিএম আলীর কবরটি দির্ঘদীন যাবৎ অরক্ষিত থাকার পর প্রশাসন এবং সেনাবাহিনীর উদ্যোগে রক্ষনাবেক্ষণ করা হয়েছে। তবে শহীদ অংসাচিং মারমার কবরের কোন অন্তিত্বও নেই।
অপরদিকে বান্দরবানের মুক্তিযোদ্ধাদের মতে.১৯৭১ সালের এই দিনে বান্দরবান পার্বত্য জেলা হানাদার মুক্ত হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধার প্রতিরোধের মুখে হানাদার বাহিনী বান্দরবান থেকে পালিয়ে যায়।তাদের মতে.সর্ব প্রথম বান্দরবানের মহকুমা অফিসে বাংলাদেশের পথকা উত্তোলন করে ছিলেন।পাক হানাদার বাহিনীরা মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমনে বান্দরবান থেকে পালিয়ে বাধ্য হয়। সেই হিসেবে বান্দরবানকে শত্রু মুক্ত হিসেবে এইদিনটি তালিকা ভুক্ত হয়েছে।
পোস্ট করেন- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরোপ্রধান