অস্ত্রসহ লক্ষীছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান সুপার জ্যোতি চাকমাকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে মানববন্ধন এবং ঢাকায় সংবিধান বিরোধী শ্লোগান

716

স্টাফ রিপোর্ট- ২ জানুয়ারী ২০১৭, দৈনিক রাঙামাটি: গত রোববার গভীর রাতে অস্ত্রসহ লক্ষীছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান সুপার জ্যেতি চাকমাকে সেনাবাহিনী কর্তৃক আটক করায়, এটিকে নাটক ও সাজানো মিথ্যা মামলা প্রদানের প্রতিবাদ জানিয়ে আজ সোমবার ২ জানুয়ারি, ২০১৭ বিকালে খাগড়াছড়ি জেলাসদর প্রেসক্লাবের সামনে ও ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ইউপিডিএফ সমর্থিত সংগঠন ও জনপ্রতিনিধীরা।

ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আজ বিকেল ৪টায় ইউপিডিএফ সমর্থিত ‘গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম’ সুপার জ্যোতি চাকমার গ্রেফতারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। তারা কর্তব্যরত পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের সামনে ‘যে সংসদ বাঙালি বানায় সে সংসদ মানি না। যে সংবিধান বাঙালি বানায় সে সংবিধান মানি না’ এমন সরকার ও রাষ্ট্রো বিরোধী নানান শ্লোগানে প্রেসক্লাব অংগন মুখরিত করে।

এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জনা গেছে, খাহড়াছড়ির বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন পানছড়িসদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জুম্ম জনপ্রতিনিধি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যন সংসদের সভাপতি সর্বোত্তম চাকমা, খাগড়াছড়িসদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান চঞ্চুমনি চাকমা ও  খাগড়াছড়িসদর ৪নং পেরাছড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তপন বিকাশ ত্রিপুরা। সভাপরিচালনা করেন খাগড়াছড়ি ৪নং পেরাছড়া ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার সোনামুনি চাকমা।

সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন দীঘিনালাউপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নবকমল চাকমা, মহালছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান বিমলকান্তি চাকমা ও ভাইবোনছড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পরিমল বিকাশ ত্রিপুরা প্রমুখ।

বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন থেকে জনপ্রতিনিধিগণ সুুপার জ্যোতি চাকমাকে অন্যায় ভাবে আটকের সমালোচনা করে বলেন, ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স অনুযায়ী একজন সিনিয়র নাগরিক এবং উপজেলাবাসীর প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি লক্ষীছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান সুপার জ্যোতি চাকমাকে আটকের ঘটনায় সাধারণ পার্বত্যবাসী হতবাক হয়েছে। বক্তারা বলেন, পেশীশক্তি ব্যবহার করে সরকারী বাসভবন থেকে বিনা ওয়ারেন্টে গভীর রাতে অভিযান চালানো সম্পূর্ণ আইনবহির্ভুত এবং অন্যায় একটি কাজ।

বক্তারা আরো বলেন, সরকারী বাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে জনপ্রতিনিধিদের সম্মানের তোয়াক্কা করা হয় না। একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিকে যদি এভাবে হেয় করা হয়, প্রশাসন যদি এভাবে অন্যায় ভাবে খড়গহস্ত হয় তবে আমরা কিভাবে জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করব ?

তারা বলেন, আমরা চ্যালেঞ্জ করে এবং দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি সুপার জ্যোতি চাকমার বাসায় কোনো অস্ত্র ছিলনা, তার অবৈধ অস্ত্র রাখা বা বহন করার কোন প্রশ্নই আসেনা। তাকে অস্ত্র গছিয়ে দেয়া হয়েছে এবং নাটক মঞ্চস্থ করা হয়েছে।
জনপ্রতিনিধিগণ পার্বত্য চট্টগ্রামের অসহনীয় পরিস্থিতির ব্যাখা করে বলেন, প্রথমে সাধারণ জনগণকে আটক করে মিথ্যা অস্ত্র মামলা দেয়া হয়েছে, তার পরে বিভিন্ন সংগঠনের নেতা কর্মীকে অন্যায় ভাবে আটক করা হয়েছে, এখন জনপ্রতিনিধিদের পর্যন্ত রেহাই দেয়া হচ্ছেনা। এ ধরণের অন্যায় ধর পাকড় অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য জনপ্রতিনিধিগণ সরকারের প্রতি দাবি জানান।

বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন থেকে বক্তারা অবিলম্বে সুপার জ্যোতি চাকমার নিঃশর্ত মুক্তি এবং তার বিরুদ্ধে দায়ের কৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান। যদি মুক্তি দেয়া নাহয় এবং অন্যায় ধর পাকড় বন্ধ করা না হয় তাহলে জনগণকে ঐক্যব্ধ করে বৃহত্তর কর্মসূচির ঘোষনা দেয়া হবে বলে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন থেকে হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করা হয়।

পোস্ট করেন- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরো প্রধান।