আ’লীগ নেতার বিরুদ্ধে মন্তব্য : রাঙামাটির আদালতে ৫০ কোটি টাকার মানহানির মামলা

391

॥ আলমগীর মানিক ॥

রাঙামাটির বাঘাইছড়ির আমতলী ইউনিয়ন পরিষদের কয়েকজন জনপ্রতিনিধি কর্তৃক জেলা আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে আপত্তিকর-কটুক্তি ও মানহানিকর মন্তব্য লিখিত আকারে বিভিন্ন স্থানে প্রচারের অভিযোগ এনে উক্ত ঘটনায় জড়িত জনপ্রতিনিধি ও তাদের সহযোগিদের বিরুদ্ধে আদালতে ৫০ কোটি টাকার মানহানির মামলা দায়ের করেছেন সরকারদলীয় এক নেতা।

আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্যে বাঘাইছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশনা প্রদান করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবি এ্যাডভোকেট মামুন ভূঁইয়া। বাংলাদেশ দন্ড বিধি ৫০০/৫০৫/৫০৬(২) ধারায় গত ১৭/০৭/২০১৭ ইং তারিখে রাঙামাটির আদালতে এই মামলাটি দায়ের করা হয়।

আমতলীর বাসিন্দা ও স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সক্রিয় কর্মী জনৈক ফিরোজ খান কর্তৃক দায়েরকৃত মামলার নথি থেকে জানা যায়, মোঃ সোবহান (৩৮), মোঃ নূরতহিদ (৩৫), মোঃ আব্দুল মালেক (৫০), মোঃ বাবর আলী(৪৮), মোঃ সহিদুল্লাহ(৪৫), মিসেস রাবেয়া বেগম(৪৫) ও মিসেস ছালেহা বেগম(৩২)। উপরোক্ত ব্যক্তিদ্বয় চলতি মাসের গত তিন তারিখ সকালে ইউপি কার্যালয় সম্মুখে অবস্থান করে স্থানীয় জনসাধারনের মাঝে রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার, রাঙামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমাসহ আমতলী ইউপি চেয়ারম্যান রাসেল চৌধুরীর বিরুদ্ধে জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দকে টাকা দিয়ে চেয়ারম্যান হয়েছে রাসেল চৌধুরী। এবং অদ্যবদি পর্যন্ত টাকা দেয় বলে নানা রকম বিভ্রান্তিমূলক ও মানহানিকর মন্তব্য এলাকাবাসীর নিকট প্রচার করেছে।

বিবাদীরা তাদের স্ব-স্ব স্বাক্ষর দিয়ে এই ধরনের মিথ্যা প্রচারনা চালিয়েছে বলেও মামলার আরজিতে উল্লেখ করেছেন বাদী ফিরোজ খান।

তিনি বলেন, সম্পূর্ন ইচ্ছাকৃতভাবে আসামীরা জনগনকে মিথ্যা গুজব দিয়ে উল্লেখিত নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে অত্র এলাকার জনসাধারনের শান্তি ও শৃঙ্খলার অনিষ্টসাধন ও মানহানিকর উদ্দেশ্যে প্রণয়নও প্রচার করেন যা একটি অপরাধ। এই ধরনের প্রচারে এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে এবং গণশান্তির বিরুদ্ধে স্থানীয় জনগণকে উসকে দেওয়া হয়েছে।

যার ফলে জনগণের ভেতরে আতঙ্কের পাশাপাশি ভয়ভীতির সৃষ্টি হয়েছে। তাই আমি উল্লেখিত নেতাদের মতাদর্শে বিশ্বাসী কর্মী হিসেবে উক্ত ঘটনায় অভিযুক্তরা ৫০ কোটি টাকার মানহানিসহ শান্তি বিনষ্টের অপরাধ করেছেন। বিষয়টি আসামীদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাইলে তারা বাদীকে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করেছেন বলেও মামলার আর্জিকে উল্লেখ করেছেন বাদী ফিরোজ খান।

মামলায় বাদী পক্ষের আইনজীবি এ্যাডভোকেট মামুন ভূঁইয়া মামলার বিষয়টি উল্লেখ করে জানান, আমার মক্কেলের বিষয়টি আমি মাননীয় আদালতের কাছে উপস্থাপন করলে কগনিজেন্স আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট কাজী মোঃ মহসেন এর আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে আগামী ২৮/০৭/২০১৭ ইং তারিখের মধ্যে উক্ত অভিযোগের বিষয়ে তদন্তপূর্বক রিপোর্ট আদালতে উপস্থাপন করতে বাঘাইছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জকে আদেশ দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, চলতি মাসের ৩ তারিখে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক বরাবরে প্রেরিত উপরোক্ত ব্যক্তিদের স্বাক্ষরিত এক অভিযোগ পত্রের নয়নং কলামে উল্লেখ করা হয়, চেয়ারম্যান রাসেল চৌধুরী আমতলী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ এর সভাপতি। থানা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ, রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার, রাঙামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমাসহ উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দকে ইউপি চেয়ারম্যান রাসেল চৌধূরী টাকা দেয় এবং এই টাকার জন্যেই রাসেলকে চেয়ারম্যান বানানো হয়েছে। এই ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে উপরোক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আদালতে মানহানির মামলাটি দায়েক করেন আওয়ামীলীগের কর্মী ফিরোজ খান।