॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥
প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও শুক্র ও শনিবার সরকারি ছুটির সুবিধা নিয়ে আবারও হ্রদ দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করছে চিহ্নিত একটি চক্র। রাঙামাটি শহরের আসামবস্তি এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই হৃদ দখলের অভিযানে মেতে থাকা এই চক্রটি শুধু হ্রদ দখল করেই বিরত থাকেনি। তারা দখল করা এসব জমি ভূমিহীন সহজ সরল মানুষদের কাছে বিক্রিও করে আসছে।
এলাকবাসীর দাবি দুধষ্র্ টাইপের হওয়ায় এলাকার মানুষ প্রকাশ্যে তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে না পারায় তারা র্দীর্ঘ দিন ধরেই এই প্রক্রিয়া চালিয়ে আসছে। এলাকাবাসীর দাবি ভূমিখেকো এই চক্রটি তাদের অবৈধ জমি বিক্রির টাকায় এলাকায় মাদক ব্যবসাসহ নানা অপকর্ম করে এলাকার পরিবেশ নষ্ট করছে। এক পর্যায়ে আসামবস্তি এলাকার মানুষ অতীষ্ট হয়ে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে জেলাপ্রশাসক বরাবরে আবেদন জানায়।
কিছুদিন আগে রাঙামাটি সদরের সহাকরি কমিশনার ভূমি তাদের নির্মানাধীন স্থাপনা ভেঙ্গে দেন। এরপর কিছুদিন তারা চুপ থাকলেও আবারো প্রকাশ্যে হ্রদ দখল করে বাড়ি নির্মাণ শুরু করেছে।
বৃহস্পতিবার তাদের নির্মাণ সামগ্রীর আয়োজন দেখে এলাকাবাসী মতলব বুঝতে পেরে প্রশাসন ও গণমাধ্যমে খবর দেয়। বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় তারা স্থাপনা তৈরির আয়োজন সম্পন্ন করেছে। এই চক্রটি এমনকি রাঙামাটি পাবলিক কলেজের জায়গায়ও এক সময় অবৈধভাবে কুক্ষিগত করার চেষ্টা করেছিল বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী জানায়, চক্রটির প্রধান আসামবস্তি শান্তিনগর এলাকার শহিদুল ইসলাম ধোনি, তার সাথে রয়েছে আসামবস্তি এলাকার অংচাইচিং চৌধুরী, জাবেদুল ইসলাম, উৎপল দাশ, সজিব দাশ ও সাদ্দাম হোসেন।
তারা ফুসলিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে দখল করা এসব ভূমি বিক্রির কথা বলে ইতোমধ্যে অনেক টাকা হাতিয়েছে। অনেককে ভূমি বুঝিয়ে দিলেও টাকা নেওয়ার পর কোর্ট এফিড-এপিডের করে ক্রেতাকে কাগজ ধরিয়ে দিলেও অনেককেই এখনও জায়গা বুঝিয়ে দিতে পারেনি, এভাবে খেটে খাওয়া দরিদ্র মানুষ তাদের পিছনে ঘুরে ঘুরে বেশ কয়েকজন ক্রেতা কোতয়ালি থানায় তাদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি প্রতারণার অভিযোগও দায়ের করেছে।
বৃহস্পতিবার তাদের ভূমি দখলের আয়োজন দেখে ভূমি কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবহিত করা হয়। এ সময় এসি ল্যান্ড মাসুমা বেগম জানান, আমরা কিছুদিন পূর্বে তাদের হ্রদ দখলের অভিযোগ পেয়ে নির্মানাধীন স্থাপনা ভেঙ্গে দিয়ে এসেছিলাম। চক্রটি যদি আবারও অপকর্মে লিপ্ত হয় তবে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সরেজমিনে গিয়ে দখলবাজ চক্রের নেতা শহিদুল ইসলাম ধোনির সাথে কথা বললে এই জমিগুলো তারা ২০১৪ সালে জেলা প্রশাসন থেকে চাষাবাদের জন্য একসনা বন্দবস্তি পেয়েছেন। কিন্তু একসনা বন্দবস্তির জায়গা বিক্রয় করা বা ঘর-বাড়ি নির্মাণ করা যায় কিনা, এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
তিনি শুক্র ও শনিবার সরকারি ছুটির সুযোগ গ্রহণ করে ঘর নির্মাণের বিষয়টি অকপটে স্বীকার করে করলেও একসনা বন্দোবস্তিরও কোনো কাগজ দেখাতে পারেননি। শুক্রবার সকাল ১০টার মধ্যে প্রতিবেদকের কাছে কাগজ পৌঁছে দিবেন বলে কথা দিলেও এরপর থেকে আর ফোন রিসিভ করছেন না।
এলাকাবাসীর দাবি চক্রটিকে থামানো না গেলে অন্যরাও এমন দখলে উৎসাহ পাবে এবং হৃদের সৌন্দর্য নষ্ট হবে।