ইয়াবাবা আসছে জলপথে

558

ইয়াবাবা1

 

মোঃ আমান উল্লাহ- ২ মার্চ ২০১৬, দৈনিক রাঙামাটি : সর্বগ্রাসী মরন নেশা ইয়াবা যার স্থানীয় নাম বাবা। সেই বাবা এখন চিহ্নিত কিছু মাদক ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে জলপথ দিয়ে নিরাপদে দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে। স্থলপথে আইনশৃংখলা বাহিনীর কঠোর তৎপরতার কারণে এখন জলপথকেই নিরাপদ হিসেবে বেছে নিয়েছে তারা। ফলে মাছ ধরার অভিনব কায়দায় গভীর সমুদ্রে গিয়ে মিয়ানমারের ট্রলার থেকে খালাস করে নিয়ে আসছে কোটি কোটি পিচ জীবনঘাতি ইয়াবা। স¤প্রতি কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর কৌশলী তৎপরতার কারণে সামান্য কিছু ধরা পড়লেও নিরাপদে গন্তব্যে পৌছে যাচ্ছে অসংখ্য চালান। স¤প্রতি সেন্টমার্টিনের গভীর বঙ্গোপসাগর থেকে ১২ কোটি টাকা মূল্যের ৪ লাখ পিচ ইয়াবা ও দুটি ট্রলারসহ ১৯ জনকে আটকের পর এসব তথ্য বেরিয়ে আসছে। মিয়ানমারের শক্তিশালী ৫টি সিন্ডিকেট মাছ ধরার ট্রলারযোগে প্রতি সপ্তাহে টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনের সমুদ্রপথে ইয়াবার চালান পাঠাচ্ছে। এসব চালান খালাস হয়ে পৌঁছে যাচ্ছে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও ঢাকাসহ সারা দেশে। আটককৃত ১৯জনের মধ্যে কালা বাম্বু নামের একজন ইয়াবা সম্রাটও রয়েছেন। আটক বাকিদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা কিভাবে এবং কাদের নেতৃত্বে সমুদ্রপথে মিয়ানমার থেকে ইয়াবার চালান নিয়ে আসেন সেসব বিষয়ে নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন।

জানা যায়, মিয়ানমার হতে ইয়াবার বড় চালান আসার সংবাদ পেয়ে ওইদিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত সেন্টমার্টিন কোস্টগার্ড ষ্টেশন কমান্ডার লে. ডিকসন চৌধুরীর নেতৃত্বে সেন্টমার্টিনের অদূরে দক্ষিণ-পূর্ব পাশে অভিযান চালায় কোস্টগার্ড। তারা বিপূল পরিমাণ ইয়াবা বড়ি, ২টি ফিশিং ট্রলারসহ টেকনাফ লেঙ্গুরবিলের  ২৪ দুস্কৃতিকে আটক করে। তাদের কাছে ১২ কোটি টাকা মূল্যের ৪ লাখ পিস ইয়াবা বড়ি পাওয়া যায়। আটককৃতদের সংশ্লিষ্ট মামলায় টেকনাফ মডেল থানায় সোর্পদ করে পরে কক্সবাজার আদালতে পাঠানো হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা প্রথম জিজ্ঞাসাবাদেই ফিশিং ট্রলারটির কোল্ড স্টোরের ভেতর বিপুল ইয়াবা ট্যাবলেট থাকার বিষয়টি অকপটে স্বীকার করে এবং বড় বড় রাঘব বোয়ালদের নামও আইনশৃংখলা বাহিনীর কাছে বলে দেয়।

কোস্টগার্ড টেকনাফ ষ্টেশন কমান্ডার লে: কর্নেল ডিকসন চৌধুরী বলেন, আটককৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা কিভাবে সমুদ্রপথে মিয়ানমার থেকে ইয়াবার চালান নিয়ে আসে সে বিষয়ে পুলিশকে নানা তথ্য দিয়েছে। তাদের তথ্যের ভিক্তিতে রাঘব বোয়ালদের ধরতে গোয়েন্দা ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা বিভিন্ন বিভাগ মাঠে কাজ চালাচ্ছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি সূত্র জানায়, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডের সাগর সীমান্তে ইয়াবা তৈরির জন্য গড়ে উঠেছে ৪০টি কারখানা। এখানে উৎপাদিত ইয়াবা স্থল ও নৌপথে ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে দেশে। তবে বর্তমানে পাচারকারীরা নৌপথ কে নিরাপদ হিসেবে বেছে নিয়ে সুকৌশলে রাতের আঁধারে দেশে ঢুকাচ্ছে। এসব চালানের কিছু ধরা পড়লেও বেশির ভাগই চলে যাচ্ছে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ঢাকার অভিজাত এলাকায়ও। ইয়াবা পাচারের ক্ষেত্রে সিন্ডিকেটের মূল হোতারা ব্যবহার করছে সাগরে যাওয়া গরু, গাছ ও মাছ ধরার ট্রলার এবং মাঝিমাল্লাদের। তারই বাস্তবতা আলম মেম্বার গং এর ফিশিং বোর্টসহ ৪ লক্ষ ইয়াবা ও ১৯ মাঝিমাল্লাকে আটক।

পোস্ট করেনন- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরোপ্রধান