একটি মহল ভুল দর্শন থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে উন্নয়নের বিরোধিতা করছে: এমপি দীপংকর

98

॥ মনু মারমা ॥

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সর্ম্পকিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার এমপি বলেছেন, একটি মহল ভুল দর্শন থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে উন্নয়নের বিরোধিতা করছে। তারা এমনও বলে যে, উন্নয়নের নামে সরকার পার্বত্যাঞ্চল নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। অথচ উন্নয়নের বিরোধিতা মানে যে, দেশ ও জাতির বিরোধিতা এবং প্রকারান্তরে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এটা তারা বুঝতেই চাননা। এমপি বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশ উন্নত হলে পার্বত্য চট্টগ্রামও সেই উন্নয়নের ছোঁয়ায় উন্নত হবে। আর দেশ পিছিয়ে গেলে পাহাড়ের মানুষও পিছিয়ে যাবে, কারণ দেশের ছাতার নীচেই পার্বত্য চট্টগ্রাম।

পার্বত্য অঞ্চলে মৎস্য সম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে রাঙামাটির জেলা পর্যায়ের সকল স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে অনুষ্ঠিত ক্যাম্পেইন বিষয়ক কর্মশালায় তিনি এ কথা বলেন। বৃহস্পতিবার (২৩মে) বিকেলে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ এনেক্স ভবনে জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের আয়োজনে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে মৎস্য সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে দীপংকর তালুকদার এমপি প্রধান অতিথি ছিলেন। । প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে উন্নয়নের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা অনেক আন্তরিক। এ এলাকার উন্নয়নের জন্য রাস্তাঘাট, অবকাঠামো উন্নয়ন, স্কুল, কলেজ, প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজসহ আরো অনেক কিছুই দিয়েছেন। এর পাশাপাশি এখানকার মৎস্যজীবিরা যাতে তাদের জীবনমান উন্নতি করতে সে লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে মৎস্য সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দিয়ে যাচ্ছেন।

এমপি বলেন, প্রান্তিক অঞ্চলে মানুষদের স্বাবলম্বী করতে মৎস্য চাষ প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে পার্বত্য অঞ্চলের বেকারত্ত্বের হার হ্রাস পাচ্ছে এবং তারা উদ্যোক্তা হয়ে আত্মনির্ভরশীল হচ্ছে।

এ সময় প্রকল্প পরিচালক মো: আবদুল্লা আল হাসান জানান, পার্বত্য অঞ্চলের মৎস্য সম্পদ এবং পার্বত্য জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রকল্পটি কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে, প্রকল্পটি সফলভাবে বাস্তবায়ন হলে পার্বত্য অঞ্চলে মাছের উৎপাদনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটবে।

তিনি জানান, এ প্রকল্পের আওতায় তিন পার্বত্য জেলায় ক্রিক উন্নয়নের জন্য ১৪৪টি বাঁধ ও ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছে যার মধ্যে রাঙামাটি জেলায় ৫৮টি। এছাড়া সুফলভোগীদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য তিন জেলায় মোট ৩৯৮০ জনকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। তার মধ্যে রাঙামাটি জেলায় ১৪৮০জন।

মৎস্য অধিদপ্তর জানায়, তিন পার্বত্য জেলায় নিবন্ধিত ৭৭৫জন জেলেকে বিকল্প কর্মসংস্থানে সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। রাঙামাটির বাঘাইছড়ি ও সদর উপজেলায় কাপ্তাই লেকে ২টি মাছের অভয়াশ্রম স্থাপন করা হয়েছে।

রাঙামাটি সদর উপজেলার সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অফিসার শেখ মো: এরশাদ বিন শাহীদ’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, রাঙামাটি জেলা পরিষদ সদস্য ও জেলা মৎস্য সম্পদ আহ্বায়ক অংসুইছাইন চৌধুরী, প্রকল্প পরিচালক মো: আবদুল্লা আল হাসান, জেলা মৎস্য অফিসার অধীর চন্দ্র দাস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: জাহেদুল ইসলাম, রাঙামাটি জেলা পরিষদ সদস্য রেমলিয়ানা পাংখুয়া, সুবির কুমার চাকমাসহ জেলা পরিষদ সদস্য ও স্টেক হোল্ডার প্রতিনিধিগণ।

অনুষ্ঠানে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে মৎস্য অধিদপ্তরের এ প্রকল্পের সমস্ত কার্যক্রম তুলে ধরেন পরীবিক্ষণ ও মূল্যায়ন কর্মকর্তা হিফজুল বাহার ভূঁইয়া।