এক সময়ের ব্যস্ততম নানিয়ারচর ডাক বিভাগ এখন বিরানভূমি

359

॥ মাহাদী বিন সুলতান ॥

শহরে অধ্যায়নরত ছেলেটা আর পিয়ন আসার পথে চাতক পাখির মত চেয়ে রয়না চিঠি কিংবা মানি অর্ডারের আশায়। বাজারের নামকরা সওদাগরও এখন আর পোস্ট অফিসে আসেন না মোকামে টাকা পাঠাতে, কিংবা পার্সেলে আসা পণ্য বুঝে নিতে। এক সময়ের ব্যস্ততম সেই পোস্ট অফিস এখন যেন জনশূণ্য। যুগের পরিবর্তনে ও উন্নত প্রযুক্তির প্রভাবে জরাজীর্ণ হয়ে অপ্রয়োজনে পড়ে আছে হাজারো প্রয়োজনের জায়গা সেই পোস্ট অফিস।

সম্প্রতি রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলা পোস্ট অফিসটি সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, পোস্ট অফিসে ৪জন জনবল দিয়ে সেবা প্রদানের কথা থাকলেও জরাজীর্ণ অবস্থায় ২জন দিয়েই চলছে সেবা কার্যক্রম।

এবিষয়ে রাঙামাটি জেলা ডেপুটি পোষ্ট মাষ্টার জেনারেল মোহাম্মাদ মোস্তফা কামাল বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় জেলা রাঙামাটির উপজেলা গুলো দুর্গম হওয়ার ফলে প্রতিটি উপজেলায় একটি করে পোস্ট অফিস দেওয়া হয়েছে। প্রযুক্তিগত উন্নতির ফলে আজ দেশের ডাক বিভাগের এই পরিস্থিতি। তবে বাংলাদেশ সরকার ডাক বিভাগ কে ডিজিটাল করতে নানা প্রকল্প হাতে নিয়েছে। সরকার মূলত প্রত্যন্ত অঞ্চলে ডাক সেবা পৌঁছে দিতে পোস্ট সেবা কার্যক্রম চালু রেখেছে।

উপজেলার সচেতন মহল মনে করেন, ডাক বিভাগ রাষ্ট্রের সম্পদ। তাই সরকারের উচিৎ ডাক বিভাগকে যুগোপযোগী ও সময়ুপোযোগী ব্যবস্থার মাধ্যমে পূর্বের লাভজনক অবস্থানে নিয়ে আসা। এক্ষেত্রে ডাক বিভাগকে মোবাইল ব্যকিং ও উন্নত ক্যুরিয়ার সার্ভিস সেবার আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নেয়া যেতে পারে বলেও মনে করছেন স্থানীয়রা।

নানিয়ারচর উপজেলা পোস্ট মাষ্টার লুৎফুন নাহার বলেন, সাধারণ (এফডিআর) বীমার মাসিক সঞ্চয়ী, ষ্ট্যাম্প বিক্রয়, রেজিষ্ট্রি ডাক, ভিপি ও পার্সেল বিলিসহ বিভিন্ন সেবা দিয়ে যাচ্ছে নানিয়ারচর ডাক বিভাগ। গ্রাহক বাড়লে ডাক সেবা পূর্বের অবস্থানে ফিরবে বলে আশা করছেন তিনি।

এবিষয়ে তিনি আরো জানান, দিন দিন ডাক বিভাগ যেন হারাচ্ছে তার পুরানো জৌলুস। পূর্বের ন্যায় ডাক বিভাগ ফিরে পাবে তার হারানো স্মৃতি এমনটাই আশা লুৎফুন নাহারের। মেনক্যারিয়ার প্রদীপ দাশ জানায়, মাঝে মাঝে দিনে ২/৪জন সেবা গ্রহীতাকেও পাওয়া যায়না নানিয়ারচর পোষ্ট অফিসে।

স্থানীয় নাছির নামের এক ব্যবসায়ী জানান, আত্মীয় স্বজন, বন্ধু বান্ধবের সাথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিল পোষ্ট অফিস। অথচ বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই জানেনা মানি অর্ডার কি? বর্তমানে পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে চিঠি বা যে কোন ডকুমেন্ট পৌঁছে যাচ্ছে কয়েক সেকেন্ডে। তাই ডাক বিভাগকে ডিজিটাল পদ্ধতির আওতায় এনে সরকারী সেবার মান বাড়ানো সম্ভব।