এসএ পরিবহন রাঙামাটি শাখা মাধ্যমে অবৈধ ভাবে মা’ মাছ পাচারের অভিযোগ

362


আলমগীর মানিক- ২৩ জুন ২০১৮, দৈনিক রাঙামাটি:  রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদ থেকে অবৈধ শিকারীদের মাধ্যমে আহরিত বড় বড় মাছ জেলা থেকে অন্যত্র পাচারের তালিকায় নতুনভাবে যোগ হয়েছে রাঙামাটির পার্সেল সার্ভিস এসএ পরিবহন কর্তৃপক্ষ। মাছ শিকার নিষিদ্ধ কালীন সময়েও প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে ডিমওয়ালা মা মাছ শিকার করছে এক শ্রেণির অতিলোভি জেলে। নানা উপায়ে তা পাচার হয়ে যাচ্ছে জেলার বাইরে। বিএফডিসির অভিযানে ডিমওয়ালা বড় সাইজের বেশ কিছু মাছ রাঙামাটির পার্সেল সার্ভিস এস এ পরিবহনে পাচারকালে হাতেনাতে ধরা পড়েছে ।

অবৈধ ব্যবসায়িদের বিরুদ্ধে মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন, রাঙামাটি জেলা প্রশাসন, পুলিশ-সেনাবাহিনী-বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ততপর রয়েছে। এ সময় অসাধু ব্যবসায়িদের সাথে এক হয়ে নিষিদ্ধকালীন সময়ে বড় বড় মা’ মাছ পাচারে সহযোগিতা করছে রাঙামাটি এসএ পরিবহণ কর্তৃপক্ষ। এমন অভিযোগ করেছে রাঙামাটি বিএফডিসি কর্তৃপক্ষ।

প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিতসহ লেকের ভারসাম্য রক্ষায় সরকারি নির্দেশনানুসারে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদ থেকে সকল প্রকার মৎস্য সম্পদ আহরণ ও বিপনন নিষিদ্ধকালীন সময় চলছে। কিন্তু থেমে নেই অবৈধ পাচারকারিদের অপতৎপরতা। রাঙামাটি বিএফডিসি’র ব্যবস্থাপক নৌ-বাহিনীর কমান্ডার মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, গত পহেলা মে থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা বন্ধকালীন সময় শুরু হওয়ার পর হতে আমরা বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সার্বিক সহযোগিতায় অবৈধ মাছ পাচারকারিদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে আসছি। মাছ পাচারের তথ্য পাওয়ার পর আমাদের নজরদারি বৃদ্ধি করে বিভিন্ন স্থানে অভিযান জোরদার করতে থাকি।

এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার রাতে বিএফডিসির একটি দল মানিকছড়ি চেক পোষ্টে স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সহযোগিতায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় রাঙামাটি থেকে পার্সেল সার্ভিস নিয়ে ছেড়ে যাওয়া এসএ পরিবহনের একটি গাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিশেষভাবে প্যাকেটজাত করা বড় বড় তিনটি কাতল মাছ ও একটি আইড় মাছ জব্দ করা হয়। বিএফডিসি কর্তৃপক্ষ জানায়, আটককৃত মোট চারটি মাছের ওজন ৬০ কেজি। যার মধ্যে ২৫ কেজি ওজনের একটি, ১৭ কেজি ওজনের একটি, ১৪ ওজনের একটি কাতল মাছ রয়েছে। পরে মাছগুলো বিএফডিসি ঘাটে নিলামের মাধ্যমে ২৪ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়।

কর্তৃপক্ষ জানায়, আটককৃত মাছগুলোর প্যাকেটের গাঁয়ে একটি টোকেন নাম্বার ছাড়া আর কোনো ঠিকানা ছিলোনা। এতে করে সন্দেহের সৃষ্টি হলে বিষয়টি কোতয়ালী থানাকে অবহিত করে থানার এসআই সৌরজিৎ বড়–য়ার সহযোগিতায় বিএফডিসি কর্তৃপক্ষ এসএ পরিবহনের রাঙামাটি শাখা অফিসে গিয়ে জানতে চাইলে তারা জানান, জনৈক লিটন নামে এক ব্যক্তি এগুলো বুকিং দিয়েছে ঢাকায় পাঠানোর জন্যে। তবে তারা এর কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। তবে এসএ পরিবহন রাঙামাটি শাখার বিরুদ্ধে আইনগত প্রকৃয়া চলছে বলে জানানো হয়।

স্থানীয়রা জানিয়েছে, রাঙামাটিতে মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন বিএফডিসি’র স্বল্প জনবলের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কাপ্তাই হ্রদের বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যে বড় বড় মা’ মাছ শিকার করছে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ি। যাত্রীবাহি যানবাহনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান পরিচালনা জোরদার হওয়ায় অবৈধ ব্যবসায়িরা মাছ বিশেষভাবে প্যাকেটজাত করে পার্সেল সার্ভিস সেবাদানকারি কুরিয়াস সার্ভিস সংস্থাগুলোকে ব্যবহার করছে। রাতের অন্ধকারে মালামাল ভর্তি করা কার্ভাড ভ্যানে করে মাছসহ নানা জিনিসপত্র অনুমতি ছাড়াই রাঙামাটি থেকে পাচার করা হচ্ছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, পার্সেল বুকিংয়ের অনুমতি নিয়ে রাঙামাটিতে ব্যবসা পরিচালনা করতে আসা কুরিয়ার সাভিস সংস্থাগুলোর মাধ্যমে একটি চক্র বৈধ-অবৈধ উপায়ে ফার্নিচার ব্যবসা ও কাঠ পাচারের কাজে সাথে লিপ্ত রয়েছে।

পোস্ট করেন- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরো প্রধান।