\ মেহেদী ইমাম \
নারিয়ারচর উপজেলা সরকারি খাদ্য গুদাম কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ৪১লক্ষ টাকার চেক জালিয়াতি কান্ডে পাল্টাপাল্টা অভিযোগ করছেন অভিযোগকারী মো. একরাম সওদাগর এবং অভিযুক্ত ক্যাচাথুই মারমা নিজেই। সোমবার (১৪ জুলাই) দুপুরে নানিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জোন অধিনায়ক, নানিয়ারচর থানা, দূর্নীতি দমন কমিশন ও জেলার সংশ্লিষ্ট তদন্ত কমিটি সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানার ফুল বাগিচা এলাকার মো. একরাম সওদাগর। লিখিত অভিযোগে চাল আড়ৎ ব্যবসায়ী একরাম উল্লেখ করেন, অভিযুক্ত ক্যাচাথুই মারমার সাথে ৩বছর ব্যবসায়ীক লেনদেন করে আসছেন তিনি। ক্যাচাথুই মারমা তার নিকট চাল বিক্রি করেন। মাঝে মধ্যে টাকা বকেয়া রাখলেও পরে তা পরিশোধ করেন তিনি। কিন্তু গত ৫ই জুন ক্যাচাথুই মারমা একরাম সওদাগরের নিকট থেকে ২হাজার বস্তা আতপ চাল ক্রয় করে। তবে ক্যাশ টাকার পরিবর্তে ক্যাচাথুই মারমা তাকে ৪১লক্ষ টাকার চেক প্রদান করে। যা তার বড় মেয়ের নামে উত্তরা ব্যাংক রানীরহাট শাখার একটি চেক। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ৩০ জুন মো. একরাম সওদাগর ওই চেক দিয়ে টাকা উত্তোলন করতে ব্যাংকে গেলে বাধে বিপত্তি। একাউন্টে কোন টাকাই ছিলনা। পরে ৮জুলাই স্থানীয়দের নিয়ে মীমাংসায় বসলে ১১তারিখ টাকা থাকবে বলে তিনি সমঝোতা করলেও, সেদিনও ব্যাংকে কোন টাকা পাওয়া যায়নি। এক পর্যায়ে মো. একরাম সওদাগর নানিয়ারচর জোনে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ক্যাচাথুই মারমা দীর্ঘদিন যাবৎ নানিয়ারচরে নানা অনিয়ম করে যাচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, ভিজিএফ, ভিজিডি ও টিসিবির নিম্ন মানের চাল বিতরণ করেন তিনি। সরকারিভাবে উন্নত মানের চাল দেওয়া হলেও এসব চাল তিনি রানীরহাট এলাকার অতি মুনাফা লোভী কিছু ব্যবসায়ীর মাধ্যমে পরিবর্তন করে নি¤œ মানের চাল বিতরণ করে থাকেন। আর তার এই অন্যায় কাজে সহযোগিতা করেন কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। এদিকে নানিয়ারচর উপজেলার নানা শ্রেণি পেশার মানুষ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নানিয়ারচর উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা ক্যাচাথুই মারমা নানা অনিয়ম ও দূর্নীতি করে আসছেন। রাঙামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী তার বেয়াই পরিচয়ে তিনি প্রভাব বিস্তার করতেন। বিতরণকৃত চাল পরিমানে কম দেওয়ার পাশাপাশি খুবই নিম্ন মানের চাল বিতরণ করার কথাও উল্লেখ করেন অভিযোগকারীরা। এসব চালের ভাত খাবার অযোগ্য হয়ে বলেও অভিযোগ করেন তারা। এবিষয়ে নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাট ইউনিয়নের ইসলামপুর এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য মো. নুরুল ইসলাম বলেন, রাতের আধারে গোডাউন খোলা থাকে। দিনে দূপুরে ভালো চাল গুলো তারা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে। আর রাতে রানীরহাট থেকে পুরাতন, পচা নষ্ট চাল তারা গুদামজাত করেন। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে রাঙ্গুনিয়া এলাকার বাসিন্দা কাজি ইমাম হোসেন বলেন, ক্যাচাথুই মারমা চেক জালিয়াতির মাধ্যমে আমার ছোট ভাই একরাম সওদাগরের ৪১লক্ষ টাকার ক্ষতি করেছে। প্রশাসনের কাছে প্রতিকার চান, তার মতে একরাম ঋণ করে ব্যবসা পরিচালনা করছে, এই টাকা না পেলে পথে বসে যাবে সে। অপরদিকে সাংবাদিকদের কাছে ক্যাচাথুই মারমা বলেন, তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ অসত্য এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত। একটি কুচক্রী মহল তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বলেও দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, একরাম নামে যিনি অভিযোগ করেছেন তাকে তিনি ভালো করে চেনেনও না।