॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরীর বড় ভাই ঊষা প্রু চৌধুুরী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। রোববার (৩০ মে) সকালে চট্টগ্রামের ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। অন্যদিকে, করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সদস্য হাজী মুছা মাতব্বর এবং তার মেয়ে।
এদিকে করোনায় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের ভাইয়ের মৃত্যুতে গভির শোক প্রকাশ করেছে রাঙামাটি প্রেসক্লাব। এক শোবার্তায় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার আল হক এবং সহ সভাপতি অলি আহমেদসহ দৈনিক গিরিদর্পণ সম্পাদক প্রবীণ সাংবাদিক একেএম মকছুদ আহমেদ চেয়ারম্যানের ভাই উষা প্রু চৌধুরীর বিদেহি আত্মার শান্তি ও সদগতি কামনা করেন। পাশাপাশি তারা আওয়ামী লীগ সেক্রেটারী হাজি মুছা মাতব্বর সহ রাঙামাটিতে করোনায় আক্রান্ত প্রত্যেকের সুস্থতা কামনা করেন।
শনিবার (২৯ মে) রাঙামাটি পিসিআর ল্যাবে তিনি ও তার কন্যা করোনা পরীক্ষা করলে বিকালে ফলাফলে পজেটিভ আসে। গত ২ দিন জ¦র থাকলেও বর্তমানে তিনি সুস্থ রয়েছেন তার কোন উপসর্গ নেই বলে জানান তিনি। তার পরও তিনি ডাক্তারের পরামর্শে চলছেন এবং তার মেয়েকেও চিকিৎসা সেবা প্রদান করছেন।
২০২০ সালে মার্চে করানো শুরু হওয়ার পর থেকে তিনি ও তার পরিবার অসহায় ও দু:স্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে তাদের পাশে ছিলেন। এই বছরও করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার সাথে সাথে সাধারণ জনগনের পাশে রয়েছেন হাজী মোঃ মুছা মাতব্বর ও তার পরিবার। তার পিতার নামে মাতব্বর ফাউন্ডেশনের মাধ্যমেও তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। ধারণা করা হচ্ছে সাধারণ মানুষের পাশে থেকে কাজ করার কারণে তিনি করোনা আক্রান্ত।
রাঙামাটি সিভিল সার্জন অফিসের করোনা বিষয়ক ফোকাল পার্সন ডা: মোস্তফা কামাল জানিয়েছেন, হাজী মুছা মাতব্বর আপাতত বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি বর্তমানে সুস্থ রয়েছেন। তাকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে।
এদিকে শনিবার (২৯ মে) রাঙ্গামাটিতে নমুনা পরীক্ষা করেছেন ৭০জন, এর মধ্যে ৪জনের পজেটিভ আসে, ৪জনই সদরের বাসিন্দা। রাঙ্গামাটিতে এই পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১,৫২৯জন, সুস্থ্য হয়েছেন ১,৪৫৯ জন। রাঙ্গামাটিতে এপর্যন্ত মোট মারা গেছেন ১৭জন। রাঙ্গামাটিতে এপর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করেছেন ১০, ৬৬২জন এরমধ্যে নেগেটিভ এসেছে ৯,১৩৩ জনের।
রাঙামাটিতে করোনা টিকার জন্য মোট রেজিষ্ট্রেশন করেছেন ৪০,৩৫৫জন, এরমধ্যে প্রথম ডোজের টিকা পেয়েছেন ৩২,৬০২জন এবং দ্বিতীয় ডোজ টিকা পেয়েছেন ১৮,৮৭১জন। শেষ হয়ে যাওয়ায় টিকা প্রদান কার্যক্রম গত ১৩ মে থেকে বন্ধ রয়েছে।
সিভিল সার্জন ডা. বিপাশ খীসা বলেন, করোনা থেকে বাঁচতে হলে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। ঘরের বাইরে গেলে মাস্ক পরিধান করতে হবে অবশ্যই। বজায় রাখতে হবে সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব। প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে যাওয়া যাবে না।
তিনি আরো জানান, এইবারের ঈদে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় চাকরি করা বা বসবাসকারীরা ঈদ করতে নিজ জেলা রাঙামাটি আসে। যে কারণে তাদের মধ্যে কেউ কেউ করোনায় আক্রান্ত ছিলো। তাদের থেকে এ রোগ চারদিক ছড়িয়ে পড়েছে। এইজন্য সাবধান থাকার পাশাপাশি সচেতন থাকার আহ্বান জানান সিভিল সার্জন।
সিভিল সার্জন জানান, আমরা করোনার সংক্রমণ রোধ করতে যেখানে করোনার রোগীর সংখ্যা পাওয়া যাচ্ছে সেখানে তথা সেই বাড়িকে লকডাউন করে দেওয়া হচ্ছে। যাতে আক্রান্ত ব্যক্তির মাধ্যমে আর নতুন কেউ আক্রান্ত না হন।