।।সাইয়্যেদ মোঃ সাখাওয়াত।।
রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার সুগারমিল আদর্শগ্রাম থেকে অপহরণের আটদিন পর মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সকালে পোলট্রি ব্যবসায়ী মো. মামুনের (২৫) দ্বিখণ্ডিত বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। লাশটি উপজেলার মাঝের পাড়া এলাকা থেকে মাটিচাপা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
নিহত মামুন সুগারমিল আদর্শগ্রামের বাসিন্দা আলী আহম্মেদের একমাত্র সন্তান। তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মামুন গত ৭ জুলাই বিকেল থেকে নিখোঁজ ছিলেন। ওই রাতেই স্ত্রীকে ফোন করে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার এক ব্যক্তির কাছে ব্যাংকের দুটি চেক পৌঁছে দিতে বলেন মামুন। পরে ৮ জুলাই মামুনের নম্বর থেকে ফোন করে জানানো হয় যে, তাকে অপহরণ করা হয়েছে এবং মুক্তিপণ হিসেবে ১০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। ওইদিনই মামুনের স্ত্রী কাউখালী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
তদন্তে নেমে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় মামুনের সাবেক কর্মচারী মো. কামরুল ইসলামকে (৩০) লক্ষীপুর জেলার ভবানীগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করে। কামরুলের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মঙ্গলবার সকালে মামুনের লাশ উদ্ধার করা হয়। তদন্তে আরও উঠে আসে, মামুনের স্ত্রীও এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। তাকেও পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তারকৃত কামরুল স্বীকার করে, সে তার স্ত্রীসহ মামুনকে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার ভাড়া বাসায় ডেকে নিয়ে চায়ের সঙ্গে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে অজ্ঞান করা হয়। পরে তাকে হত্যা করে দ্বিখণ্ডিত লাশ বস্তায় ভরে কাউখালীর মাঝের পাড়ায় এনে মাটিচাপা দিয়ে পালিয়ে যায়।
কাপ্তাই সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহেদুল ইসলাম জানান, মামুন ও কামরুল একসময় মালিক-কর্মচারী হলেও সম্প্রতি তারা যৌথভাবে ব্যবসা করতেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব থেকেই এ নৃশংস হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।
এ ঘটনায় কাউখালী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামুনের সাবেক কর্মচারী কামরুলের বিরুদ্ধে রিমান্ড আবেদন করা হবে বলে জানান থানার ওসি সাইফুল ইসলাম সোহাগ।
এদিকে মামলার আরেক আসামি আনোয়ার (২০), যিনি মামুনের দেওয়া চেক গ্রহণ করেছিলেন, তাকেও গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনার পর রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) নাদিরা নূর, কাপ্তাই সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহেদুল ইসলাম এবং কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী আতিকুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।